ফিলিপ সি. জেসাপ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ঢাবি’র জয়লাভ
প্রকাশিত : ২১:৫৭, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১
গত সপ্তাহান্তে ফিলিপ সি. জেসাপ ইন্টারন্যাশনাল ল মুট কোর্ট কম্পিটিশন, ২০২১ (জেসাপ প্রতিযোগিতা)-এর ৫ম বাংলাদেশ জাতীয় পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল জয়লাভ করেছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিযোগিতাটির উদ্বোধন ঘোষিত হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত পর্ব শেষে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়কে রানার-আপ ঘোষণা করা হয়।
জেসাপ বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিচারিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা যেখানে ১০০টিরও বেশি দেশ ও ভূখণ্ডের ৭০০ আইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়। এতে প্রতিযোগীরা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের সম্মুখে বিভিন্ন দেশের মধ্যে কল্পিত বিরোধ নিষ্পত্তি করে থাকে।
প্রতিযোগিতাটি সম্ভাবনাময় আইন শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৌখিক ও লিখিত উপস্থাপনার কার্যকর দক্ষতা তথা স্বপক্ষ সমর্থনের সার্বিক দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক মাধ্যম হিসাবে কাজ করে এবং আইন শিক্ষার্থীদেরকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে নিয়ে আসে। বাংলাদেশে জেসাপ’র প্রতিষ্ঠাতা প্রশাসক এবং ইলসা চ্যাপ্টার্স (ILSA Chapters)-এর বর্তমান জাতীয় সমন্বয়ক নুরান চৌধুরীর আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালে এই প্রতিযোগিতার যাত্রা শুরু হয়। তিনি তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তহবিল সংস্থান ও দল তৈরিতে সফল হন। বাংলাদেশে জেসাপ জাতীয় পর্বের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস’র অফিস অফ প্রসেকিউটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট, অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড ট্রেইনিং (USDOJ/OPDAT) বাংলাদেশের ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে এবং কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বের বিচারক হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস’র একজন আপিল আইনজীবী দিয়েছে।
প্রতিযোগিতার সূচনা পর্বে সম্মানিত বক্তা ও বিশিষ্ট অতিথিদেরকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের মহামান্য রাষ্ট্রদূত আর্ল আর. মিলার ২০১৯ সালের অংশগ্রহণকারীদের সাথে সাক্ষাৎ করে কতটা মুগ্ধ হয়েছিলেন সে প্রসঙ্গ বর্ণনাপূর্বক এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। বাংলা ভাষা আন্দোলনে যারা অবিচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন তাঁদেরকেও স্মরণ করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত মিলার এ বছরের অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কাছেও সেই একই প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সবাইকে ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে যেকোন অবিচারের বিরুদ্ধে নির্ভীকভাবে দাঁড়ানোর জন্য অনুপ্রাণিত করেন।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন জেসাপ’র ন্যায় আইন বিতর্ক প্রতিযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে মেধাবী আইন শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বপক্ষ সমর্থনের দক্ষতা জোরদার হবে যা শুধু বই-পুস্তক ও আইন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্যোপকরণ থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। সকল আইন শিক্ষার্থীর জন্য এ ধরনের সুযোগ নিশ্চিত করতে অ্যাটর্নি জেনারেল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জেলা পর্যায়ে আইন বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনে উৎসাহিত করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের অবদান উল্লেখপূর্বক নতুন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের পর্যবেক্ষণের সমর্থনে তিনি পুনরুক্তি করেন যে, এর ফলে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কার্যকরভাবে তাদের যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি উপস্থাপনের অনুশীলন সম্ভব হবে।
আন্তর্জাতিক আইন শিক্ষার্থী সমিতি (ILSA)-এর নির্বাহী পরিচালক লেসলি এ বেন আইন শিক্ষার্থীদের জন্য এই অভিজ্ঞতা কতটা অমূল্য সেটা তুলে ধরেন এবং উত্তেজনাকর বৈশ্বিক পর্বে যোগদানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
২০১৯ সাল থেকে কর্মরত জেসাপ’র জাতীয় প্রশাসক জনাব সায়েম আলী পাঠান এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান সমন্বয়ের জন্য আয়োজক দলকে ধন্যবাদ জানান।
ফিলিপ সি. জেসাপ আন্তর্জাতিক আইন বিতর্ক প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক পর্বগুলো অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৩ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত।
আরকে//
আরও পড়ুন