‘কুয়েট শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার দায় রাষ্ট্রের’
প্রকাশিত : ১৬:০২, ৮ এপ্রিল ২০২২
ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের চিত্র
অন্যায্য ফি’র চাপে কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তুর মৃত্যুর প্রেক্ষিতে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে নামে-বেনামে আরোপিত অন্যায্য সকল ফি বাতিল করা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করে ধনী-গরীব সকলের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্ত্বর থেকে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর একটি মিছিল “শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করে, প্রশাসন কি করে!”, “টাকা যার শিক্ষা তার, এই নীতি মানি না”, “অন্তু ভাই মরলো কেন শেখ হাসিনা জবাব চাই”, “পড়তে এসে লাশ কেন, শেখ হাসিনা জবাব চাই” ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে ডেইরি গেট সংলগ্ন ফুট ওভারব্রিজের নিচে অবস্থান নেয়।
এসময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, ‘কুয়েট শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, শরীয়তপুরের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর আত্মহত্যা- এই যে প্রতিনিয়ত আত্মহত্যার মিছিল, এটা রাষ্ট্রের ভঙ্গুরতার বহির্প্রকাশ। শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রকে মৌলিক অধিকার শিক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সামি আল জাহিদ প্রীতম বলেন, ‘অন্তু রায়ের আত্মহত্যা প্রমাণ করে শিক্ষা ব্যবস্থা শুধু ধনীদের জন্যে। আমরা চাই, এই ব্যবস্থার পরিবর্তনে রাষ্ট্র আশু ব্যবস্থা নিবে।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সভাপতি রাকিবুল রনি বলেন, ‘যারা এখানে আমাদের শুনছেন, অনেকে এখানে দোকান কর্মচারী, গার্মেন্টস শ্রমিক আছেন আপনাদের সন্তানরা কেনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারে না! এর কারণ হচ্ছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি এমন করে বাড়ানো হচ্ছে, যাতে আপনার সন্তান চাইলেও পড়তে পারবে না।’
এই ছাত্র নেতা বলেন, ‘সাভারের অটো রিকশা চালক পুলিশকে বিশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে পারে নাই বলে আত্মহত্যা করেছেন, শরীয়তপুরের ছাত্রী দুইশ টাকা দিতে পারেনি বলে আত্মহত্যা করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি দিতে পারেনি বলে কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তু আত্মহত্যা করেছেন- এসবের দায় রাষ্ট্রের।’
রাকিবুল রনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্বাধীন হলেও সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মদদে ক্রমাগত আমাদের ফি বাড়ায়। এতে করে আপনাদের সন্তানরা সুযোগ পেয়েও ক্রমবর্ধমান ফী এর চাপে পড়তে পারে না। যদি কুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী অন্তু রায়ের মত আর একটি শিক্ষার্থীরও আত্মহত্যার দিকে যেতে হয় তবে আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়াবেন, আমরা দুষ্ট শক্তির বিরুদ্ধে লড়ে যাব। আমরা বলতে চাই, শিক্ষা ক্ষেত্রে ফি বৃদ্ধির এইসব পাঁয়তারা বন্ধ না করলে এই পঞ্চাশ জন নিঃসন্দেহে চল্লিশ হাজার জন হবে, এক লক্ষ জন হবে, দশ লক্ষ জন হবে তখন আইয়ুব খানের মত এরশাদের মত দেশ ছেড়ে পালানোর জায়গা খুঁজে পাবেন না।’
এনএস//
আরও পড়ুন