গবিতে প্রথমবারের মতো বাস সুবিধা, উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত : ২১:২৫, ৩ নভেম্বর ২০২২
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ভোগান্তি দূর করতে বাস সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি)। প্রথম ধাপে মানিকগঞ্জ ও চন্দ্রা রুটে দুটি বাস সংযুক্তের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার আবু মুহাম্মদ মুকাম্মেল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যাতায়াত সুবিধার কথা চিন্তা করে, বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ক্যাম্পাস থেকে মানিকগঞ্জ ও চন্দ্রা রুটে দুটি যাত্রীবাহী বাস চালু করতে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ কার্যক্রম চালু করার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে উল্লিখিত দুটি রুটে বাস ব্যবহারে আগ্রহীদের কাছ থেকে সংযুক্ত ছক অনুযায়ী তথ্য আহ্বান করা যাচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘আগ্রহীদের আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে স্ব-স্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের নিকট তথ্য প্রদান করার জন্য নির্দেশক্রমে বলা হলো।’
এদিকে বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় উল্লসিত গবি শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এই সংযোজন শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আরও সহায়তা করবে বলে আশা করছেন তারা।
রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলো থেকে যাতায়াত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস না থাকায় কমবেশি সবারই ভোগান্তি হতো। বাস সুবিধা চালু হওয়াতে আমরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবো। যাতায়াত সহজ হওয়াতে পড়াশোনাতেও এর একটি ভালো প্রভাব পড়বে।’
এদিকে ঢাকা রুটে বাস না দেয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ওই রুটে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা। আইন বিভাগের আরেফিন ফরহাদ নামে ১ম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রতিদিন ঢাকা, হেমায়েতপুর, সাভার থেকে প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। এই রুটেও একটা বাস দেয়া অতীব জরুরী। প্রশাসন বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখবে বলে আশা প্রকাশ করছি।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ এস. তাসাদ্দেক আহমেদ জানান, ‘প্রশাসন বাস দিতে আগ্রহী, তবে এখনও বাস দেয়ার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি হয়নি। শিক্ষার্থীদের তথ্য জানার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। যদি ৪০ জন হয় তাহলে ১টি বাস, আর যদি তার অধিক শিক্ষার্থী একসাথে বাসে যাতায়াতের আগ্রহ প্রকাশ করে, তাহলে প্রয়োজনে আরো বাস দেয়া হবে। বাসের ভাড়া কিংবা এমন অনেক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে শিক্ষার্থীদের তথ্য হাতে পাওয়ার পর।’
বাস ও ভাড়ার বিষয়টি উল্লখে করে সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার আবু মুহাম্মদ মোকাম্মেল জানান, ‘বিআরটিসি বাসসহ কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানির বাস মালিকদের সাথে প্রশাসনের কথা হয়েছে। প্রথম দিকে পরীক্ষামূলকভাবে শিক্ষার্থীরা ভাড়া আদায় করে বাসে আসা-যাওয়া করতে পারবে। পরবর্তীতে নিজস্ব বাস কেনা হতে পারে। ভাড়া শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বহন করবে। তবে ভাড়া কত টাকা হবে- সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। কিন্তু বিষয়টি শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে সর্বনিম্ন কম টাকা ভাড়া নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিবে প্রশাসন।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীরা একাধিকবার বাস সার্ভিস চালুর দাবি করলেও মেনে নেয়নি প্রশাসন। তবে দেরিতে হলেও শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেয়া সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা।
২০১৭-১৮ সেশনের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের শিক্ষার্থী রাব্বি ইবনে কাদের বলেন, ‘এটা অনেক ভালো সিদ্ধান্ত। আমরা অনেক কষ্ট করেছি। এবার, সেটা লাঘব হবে। যাতায়াত ব্যবস্থা পড়াশোনায় অনেক প্রভাব ফেলে। এবার সেটা দূর হবে।’
এদিকে বাস সার্ভিস চালুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লাস প্রকাশ করে শিক্ষার্থী। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চললেও ক্যাম্পাস জুড়ে আনন্দের বাতাই বইছে।
এনএস//
আরও পড়ুন