ভিসি অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনে কুয়েট শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত : ২২:৩২, ২১ এপ্রিল ২০২৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩২ জন শিক্ষার্থী। সোমবার বিকাল ৪টা থেকে কুয়েটের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। শিক্ষকরা ২ বার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেও তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করাতে পারেননি।
সোমবার বেলা সাড়ে ৩টায় কুয়েটের ড. এম এ রশিদ হলের সামনে জড়ো হন প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী। কিছু সময় পর তারা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় যান। বিকাল ৪টা থেকে সেখানে আমরণ অনশন শুরু করেন ৩২জন শিক্ষার্থী। অন্য শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে পরে তারা চলে যান।
ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। আলোচনার মাধ্যমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জটিলতা কমবে বলে আশা করছেন শিক্ষকরা।
আলোচনা চলাকালে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদেরও অনশনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। একপর্যায়ে শিক্ষকরা জুস ও পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তাতে রাজি হননি শিক্ষার্থীরা। অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী তৌফিক, উপল, ওবায়দুল্লাহ, গালিব, তৌফিক ও রাহাত বলেন, আমরা গত ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। ২ রাত আমরা খোলা আকাশের নিচে ছিলাম। ১৫ এপ্রিল আমরা তালা ভেঙ্গে হলে ঢুকতে বাধ্য হই। কিন্তু হলে খাবার, পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি।
তারা বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হলেও কুয়েট প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। হামলাকারীদের নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত পরিচয় লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এছাড়া বহিরাগত একজন বাদি হয়ে ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কুয়েট কর্তৃপক্ষ ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীও রয়েছে। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানালেও তিনি তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেননি। তাই তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছি।
পরে কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে। আপাতত আমরা চলে যাচ্ছি, তবে আবারও এসে শিক্ষার্থীদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করবো।
এদিকে এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আমরা সকালে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। ৩৭ জন শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত স্থগিত করার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। ছাত্রদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নির্দোষ কেউ শাস্তি পাবে না। হলে খাবারের সমস্যা আছে। খাবারের ব্যবস্থা করার কথা বলেছি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সহকারী ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ও সহকারী অধ্যাপক রাজু আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আদালতে যে মামলা হয়েছে সে ব্যাপারে শিক্ষার্থীদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হবে। মামলার বাদীর সঙ্গে আলোচনা করে মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। মামলার বিষয়ে কুয়েট প্রশাসনের কোনো ইন্ধন নেই।
আরও পড়ুন