ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

‘শিগগিরই কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করা হোক’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:১২, ৯ মে ২০১৮ | আপডেট: ১০:৩০, ১৩ মে ২০১৮

ড. সফিউদ্দিন আহমেদ। সিলেটের শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলা একাডেমি থেকে ১২ টি গ্রন্থ সহ ৭৫ টি গ্রন্থের লেখক তিনি। আজীবন শিক্ষা ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে আসা এই মানুষটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রনয়ণ কমিটির অন্যতম সদস্য।

সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ফের আন্দোলনে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে ড. সফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী শীঘ্রই কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করা দরকার। পাশাপাশি যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নতুন সমাজ ব্যবস্থায় কোনো কোটা রাখা উচিত নয় বলেই আমি মনে করি।"

এসময় তিনি আরও বলেন, "মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা বংশ পরম্পরায় সুবিধা ভোগ করবে সেই আশায় মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেননি।" দেশের তরুণরা যথেষ্ট মেধাবী। কিন্তু সুযোগের অভাবে প্রতিভা বিকাশে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও মনে করেন এই শিক্ষাবিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইনের প্রতিবেদক আলী আদনান।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনার দৃষ্টিতে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার গলদ কোথায়?

 

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: বর্তমান শিক্ষটাকে আমি বলি বাণিজ্যিক শিক্ষা। এশিক্ষা কখনো মানুষের মনুষ্যত্ব অর্জন, জ্ঞান জিজ্ঞাশা, আত্ম জিজ্ঞাশা ও অনুসন্ধিৎসার জন্য নয়। আমরা এখন যে শিক্ষা দেখছি তাতে পরীক্ষায় পাস করাটাই বড় কথা। এই বাণিজ্যিক শিক্ষায় দরাদরিটা বড় বেশি। কোনো রকমে পাস করতে পারলেই উপরে কেউ থাকলে তাকে ধরাধরি করে চাকরি নিচ্ছে। আরেকটা বিষয় হলো বিষয় ভিত্তিক শিক্ষার কোনো কার্যকারীতা নাই। আমার এক ভাইপো প্রকৌল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যবিদ্যায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছে। কিন্তু এখন সে একটা ব্যাংকের কেরানি। আমাদের শিক্ষার্থীরা পাশ করে বের হয় ঠিক। কিন্তু তারা সাবলম্বী হয়না। হয় পরগাছা। দেশের মাটির সাথে এই শিক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই। এসএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছে এমন একজন একজন আমার বাসায় এসেছিল। তাকে জিজ্ঞেশ করলাম, মুক্তিযুদ্ধ কার বিরুদ্ধে হয়েছিল? সে আমাকে উত্তর দিলো মুক্তিযুদ্ধ ইংরেজের বিরুদ্ধে হয়েছিল। এর থেকে বুঝা যায় আমাদের শিক্ষার মান কেমন? এই শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি পাল্টাতে হবে।

দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, এই টাকাটা কার? শিক্ষার কথা হওয়ার কথা ছিল সর্বজনীন। যারা গরীব মানুষ তাদের খাজনার টাকায় শিক্ষার খরচ চালানো হচ্ছে। সেই শ্রমজীবী মানুষের কাছে আমরা শিক্ষাকে নিতে পারিনি। শিক্ষাকে সবার কাছে নিতে না পারাটা বা শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ করাটাই শিক্ষা ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। বাণিজ্যিক শিক্ষায় মানুষের মন, মানসিকতা বা আত্মীক বিকাশ ঘটতে পারেনা।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনি কেমন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশ করবেন?

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: আমাদের এতো অনার্সের, এতো এমএ-এর দরকার নেই। পৃথিবীর অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছি, যারা চাকরী করবে তাদের অনার্স/ মাষ্টার্স পড়ানো হয়না। অনার্স পড়ানো হয় শুধু তাদেরকে যারা শিক্ষকতা করবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সার্টিফিকেট কিনতে পাওয়া যায়। আমাদের কোনো প্রকল্প নেই। একটা প্রকল্প থাকতে পারে, যা নির্ধারণ করবে আমাদের কতোগুলো অনার্স লাগবে, কতোগুলো এমএ লাগবে। পৃথিবীর প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করা হয় রাশিয়ায়। তারা জানতো তাদের কতোজন ডাক্তার দরকার, কতোজন ইঞ্জিনিয়ার দরকার।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: শিক্ষা বাণিজ্যিকীকরণের জন্য কাকে দায়ী করবেন?

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: শিক্ষকরা এই দায় এড়াতে পারেন না। কোচিং সেন্টারগুলো বিজ্ঞাপন দেয় এতো পার্সেন্ট মার্কস পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাস বাদ দিয়ে বাইরের অন্যান্য কাজের সাথে বেশি জড়িত। আমরা যারা শিক্ষক তারা একটা শিক্ষার্থীর পেছনে কতোটুকু সময় দিই তা কিন্তু কোথাও জবাব দিহিতির ব্যবস্থা নেই। পত্রিকায় পড়লাম ১০ জন উপাচার্য বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত। তাদের বিভিন্ন জনের নামে বিভিন্ন রকম মামলা। শিক্ষক হয়ে যদি তাদের এতো অপকর্ম থাকে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কী অবস্থা হবে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনি সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য। সে বিবচনায় এপদ্ধতিকে কীভাকে মূল্যোয়ন করবেন?

 

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: যে উদ্দেশ্য নিয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন চালু হয়েছিল সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। সেখানেও যান্ত্রিকতা প্রবেশ করেছে। এখন সৃজনশীল গাইড বই বের হয়। সৃজনশীল প্রশ্ন মুখস্ত করায় শিক্ষকরা। এমন তো কথা ছিলো না। আসলে আমাদের শিক্ষরা নিজেরাই `সৃজনশীল` বুঝেনা। না বুঝা অবস্থায় বিনা প্রস্তুতিতে তাদের কাছে সৃজনশীল পদ্ধতি দেওয়া হয়েছে। আরেকটা বিষয় না বললেই নয়, আমাদের কোনো কিছুই আমাদের দেশ থেকে হয়না। সাম্রাজ্যবাদের কালো ছায়া আমাদের ঘিরে রাখে। বাহির থেকে টাকাটা আসে। তারা প্রকল্প দেয়। তাদের হুকুমে আমরা কাজ করি। আমাদের প্রত্যেকটা কাজে তাদের একটা নীরব তদারকি থাকে। যতোগুলো মিটিং আমরা করেছি, সব মিটিং-এ তাদের একজন প্রতিনিধি ভেজা বেড়ালের মতো বসে থাকতো। `সৃজনশীল` পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীরা নিজেরা পড়বে। সৃষ্টি করবে। কিন্তু কৌশলে তা হতে দেওয়া হয়নি। পৃথিবীতে কয়েকটি রাষ্ট্র আছে তারা চায়না যে আমাদের দেশে সৃজনশীল কিছু হোক। তারা চায়, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা পঙ্গু হয়ে যাক। অথর্ব, ধ্বংস শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আমরা মুখ থুবড়ে পড়ি।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনাদের সময়ের শিক্ষার্থী ও এখনকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়?

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তখন শিক্ষকদের প্রতি আমাদের ছিলো বিনম্র শ্রদ্ধা। কিন্তু এখন শিক্ষকের প্রতি ছাত্র ছাত্রীদের কোনো শ্রদ্ধা বা ভক্তি নেই। এখনকার শিক্ষার্থীরা সাধারণ শিক্ষকের চেয়ে দলবাজ শিক্ষকদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়। কারণ, সেখানে তারা কাজ পাচ্ছে, টাকা পাচ্ছে। শিক্ষক এবং গুরু কিন্তু এক কথা নয়। আগে আমাদের দেশে
আশ্রম ছিলো। সবটাই যেখানে শ্রম। আশ্রমে গুরু থাকতেন। তিনি শুধু লেখাপড়া শেখাতেন না। একই সাথে তিনি আদর্শ, নীতিবোধ, সততা তার শিষ্যদের (শিক্ষার্থী) মাঝে ছড়িয়ে দিতেন। কিন্তু এখন আমাদের কোনো গুরু নেই। গুরু পাচ্ছিনা।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনি একজন গবেষক। সেই জায়গা থেকে আমাদের দেশে গবেষণার মান কতোটুকু উন্নত মনে করছেন?

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: একটা থিসিস একটা জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারে। কিন্তু আমাদের এখানে যেসব গবেষণা হচ্ছে তার কোনো বড় কার্যকারীতা নেই। কিছু মনে করবেন না। একটা উদাহরণ দিই। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কিন্তু সোজা কথা নয়। একটা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু এখান থেকে যারা বের হচ্ছে তাদের কোনো উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার নেই। কোনো উদ্ভাবন নেই। ভারতের অনেকগুলো রাজ্যে পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল নেই। আমাদের পাশে ত্রিপুরা রাজ্যেও নেই। আমাদের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ডাক্তার এখনো পর্যন্ত ওষুধের উপর কোনো ভালো বই লিখেছে বা কোনো কিছু উদ্ভাবন করেছে এমন নজিরও নেই। তাহলে তারা কী করছে? লাইন বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা রোগীদের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে টাকা নিচ্ছে। সেখানেও বাণিজ্য।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনি এক জীবনে অনেকগুলো প্রজন্ম দেখেছেন। সেসব বিবেচনায় আমাদের প্রজন্মকে কতোটুকু সম্ভাবনাময়ী মনে করছেন?

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রের ছেলে মেয়েদের তুলনায় আমাদের ছেলে-মেয়েরা যথেষ্ট মেধাবী। খেয়াল করলে দেখবেন, তারা যখন বাইরে যায় তখন সেখানে পড়াশুনায়, উদ্ভাবনে, উদ্যোক্তা হিসেবে ভালো কৃতিত্বের সাক্ষর রাখে। কিন্তু এখানে তারা তা পারছে না। কেনো পারেনা? কারণ, আমি নিজে তাকে সেই শিক্ষা দিতে পারছি না। একটা জাতির শিক্ষক, শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি, বুদ্ধিজীবী যখন আঁতেল, দলকানা, পরগাছা হয়ে যায়, তখন সেই জাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আমরা এখন সেই সময়টা পার করছি। ফলে আমাদের প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

২০১৩ সালে আমি যুক্তরাজ্যের প্রায় ২০টি বিশ্বিবিদ্যালয় উপর একটি গবেষণা চালাই। সেখানে দেখলাম, ভারত-বাংলাদেশ থেকে যারা ওখানে পিএইচডি করে তাদের থিসিসের নিচে লিখে দেয় `নট টু বি পাবলিশড`। অর্থাৎ এরা গরীব দেশ থেকে এসে পড়ছে। পড়ে চলে যাক। আমাদের এসব ব্যাপারেও সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।

আমি ছেচল্লিশ বছর শিক্ষকতা করতে গিয়ে দেখেছি, আমাদের ছেলে মেয়েরা খুবই মেধাবী। কিন্তু তাদেরকে বিকশিত হতে দেওয়া হচ্ছেনা।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আমাদের শিক্ষকদের সাথে পৃথিবীর ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের পার্থক্যটা কোথায়?

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: আমি অক্সফোর্ডে দেখেছি, হার্ভার্ডে দেখেছি, কেমব্রিজে দেখেছি- তাদের শিক্ষকরা সব সময় পড়াশুনার মধ্যে থাকে। নিজেকে সব সময়
আপডেট রাখে। আর আমাদের শিক্ষকরা এমএ পাশ করে বের হওয়ার পর আর পড়াশুনার ধার ধারে না। সর্বজান্তা ভাব ধরে। একটা ছাত্রকে সে প্রতিদিন মৌলিক কথা, নতুন কথা শোনাবে। ফলে, আমাদের ছাত্রদের দোষ দেওয়ার সুযোগ নেই। আমার শিল্প যদি খারাপ হয়, তাহলে সেই ব্যর্থতা অন্য কারো নয়, আমার।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: শিক্ষকদের কোন দিকটাকে দুর্বলতা হিসেবে দেখছেন?

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: শুধু শিক্ষক নয়, সুশীল সমাজ নামধারী শ্রেণিটার মধ্যে ব্যক্তিত্বের ঘাটতি আছে। একটা ঘটনা বলি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন মোহাম্মদ হোসেন। গভর্নর মোনায়েম খান তাঁকে (ভিসি মোহাম্মদ হোসেন) গভর্নর হাউসে ডাকলেন। মোহাম্মদ হোসেন উত্তরে বললেন, আপনার গভর্নর হাউসে আমি কী আলাপ করবো? যদি রাজনীতির কথা বলেন, তাহলে আমার উত্তর হচ্ছে, আমি রাজনীতির লোক নই। আমি রাজনীতি বুঝিনা। আর যদি শিক্ষার কথা বলেন, তাহলে আপনাকে আমার অফিসে আসতে হবে। আমি ওখানে যাবোনা।

কী অসাধারণ সৎ সাহস। এখন কারো কী এমন মেরুদণ্ড আছে? পত্রিকায় দেখলাম, এমপিকে দেখে না দাঁড়ানোয় এমপি`র হাতে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত। এমপিকে এই প্রশ্রয় কে দিয়েছে? অন্য শিক্ষকরা দিয়েছে। অনৈতিক সুবিধা নিবেন, নিজে অন্যায় করবেন- এমপি তো সুযোগ নিবেই। শিক্ষকরা কেন ফুলের তোড়া নিয়ে এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করবে? তারা কেনো রাজনৈতিক নেতাদের সংবর্ধনা দিবে? এতো নীচু হওয়ার দরকার কী?

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: স্যার, শিক্ষার্থীরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করলো। আপনি এ আন্দোলনকে কীভাবে নিয়েছেন?

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: আমি এ আন্দোলন সমর্থন করি। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এ আন্দোলন যথার্থ। একটা ঘটনা বলি। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর জওহরলাল নেহেরুর কাছে ভারতের কয়েকজন শ্রেষ্ঠ সামরিক অফিসার গেলেন। গিয়ে বললেন, মহোদয়, আমরা ভারতের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছি। লড়াই করেছি। কিন্তু তার বিনিময়ে আমরা তো কিছু পেলাম না। জওহরলাল নেহেরু তার কথা শুনে উত্তর দিলেন, তোমরা দেশ স্বাধীন করতে চেয়েছিলে কিসের জন্য? অফিসাররা উত্তর দিলো, ভারতের স্বাধীনতার জন্য। নেহেরু পাল্টা প্রশ্ন করলেন, তোমরা কী স্বাধীনতা পেয়েছো? অফিসাররা উত্তর দিলো, হ্যাঁ। নেহেরু তখন বললেন, তাহলে আর কী? স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছো। স্বাধীনতা পেয়েছো। আর কিছু তো পাওয়ার কথা ছিলোনা। অফিসাররা লজ্জা পেয়ে উঠে গেলো। আর আমাদের এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও সুবিধা দাবি করে। তারা কী এটার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিল।

আমি আশা করছি, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী শীঘ্রই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে ও সকল কোটা বাতিল করা হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নতুন সমাজ ব্যবস্থায় কোনো কোটা থাকবে না বলেই আমার বিশ্বাস।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাদের সময় দেওয়ার জন্য।

ড. শফিউদ্দিন আহমেদ: আপনার জন্য ও একুশে টেলিভিশনের জন্য শুভকামনা।

টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি