চবিতে অবরোধের পর এবার ঝাড়ু মিছিল
প্রকাশিত : ১৫:৩৪, ২৩ জানুয়ারি ২০২০
![](https://www.ekushey-tv.com/media/imgAll/2019December/picture-2001230934.jpg)
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের বহিষ্কার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের পর এবার ঝাড়ু মিছিল করেছে শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের সামনে থেকে ঝাড়ু মিছিল শুরু হয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের কাছে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়ালবডি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বললে প্রায় এক ঘণ্টা পর মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা পুনরায় এ এফ রহমান হলের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
আন্দোলনকারীরা ‘এক দফা এক দাবি, রুবেল তুই কবে যাবি’, ‘অছাত্র সভাপতি, মানি না মানবো না’, অবৈধ প্রেসিডেন্ট, মানি না মানবো না’ স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় রুবেলের বিরুদ্ধে নিজের কর্মীদের ওপর হামলায় মদদ, ছাত্রত্ববিহীনভাবে সভাপতি হওয়ার অভিযোগ করা হয়।
আন্দোলনকারী বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা বলেন, আমরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নয়, ব্যক্তি রুবেলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। সে একজন অছাত্র, তার ছাত্রত্ব অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এই অছাত্র সভাপতি রুবেলের নির্দেশে গতকাল আমাদের তিন কর্মীকে শিবির স্টাইলে হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে তার পেটুয়া বাহিনী। আমরা তার পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধ চলবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, আমরা ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। আর বড় ধরনের কোনো আপত্তিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য সবার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, ছাত্র সংগঠনগুলো নিজেদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থে এ ধরনের কাজগুলো করছে। যাদেরকে আটক করা হয়েছে, তাদের যাচাই-বাছাই চলছে। যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। আমরা আবাসিক হলগুলোতে একটাও অছাত্র রাখবো না। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিশৃঙ্খল পরিবেশ চাই না। ছাত্রদের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা অচিরেই হার্ড লাইনে যাব। কোনো অছাত্র, বহিরাগতকে আবাসিক হলে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না।
এদিকে, গতকাল বুধবার বিকেলে বিজয় গ্রুপের তিন কর্মীকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ চলছে। সারাদিন ক্যাম্পাসজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। সকাল থেকে শহর হতে বিশ্ববিদ্যালয়গামী কোন ট্রেন ছেড়ে যায়নি।
এ বিষয়ে ষোলশহর স্টেশন মাস্টার তন্ময় চেীধুরী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন আন্দোলন হলেই লোকো মাস্টারকে অপহরণ করা হয়। তাই নিরাপত্তাজনিত কারণে শহর থেকে কোন ট্রেন ছেড়ে যায়নি।
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেলে কথাকাটাকাটির জের ধরে সংঘর্ষে জড়ায় বিজয় ও সিএফসি গ্রুপ। এ সময় সিএফসি গ্রুপের এক কর্মীকে মারধর করে বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। পরে সিএফসি গ্রুপের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে গিয়ে বিজয় গ্রুপের তিন কর্মীকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় রাত নয়টার দিকে মারধরকারীদের শাস্তির দাবি ও সভাপতিকে বহিষ্কার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ঘোষণা দেয় বিজয় গ্রুপ। এর প্রেক্ষিতে রাত ১১টার দিকে দুটি হলে তল্লাশি চালিয়ে উভয় গ্রুপের ২০ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বিবাদমান সিএফসি গ্রুপ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও বিজয় গ্রুপ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন মোল্লার অনুসারী এবং দুটি পক্ষই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
আরও পড়ুন