ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্যসহ গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ পদই শূণ্য

বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ১৭:২০, ৪ জুলাই ২০২০

Ekushey Television Ltd.

চ্যান্সেলর নিয়োগ দেন এমন ৩টি পদ (উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার) শূণ্য রয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি)। এর মধ্যে উপাচার্য পদ থেকে বিগত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের পর প্রায় ৯ মাস যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন। আর বাকি দুটি পদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত নিয়োগ প্রদান করা হয়নি।

শুধুমাত্র এই তিন পদই নয়, শূণ্য রয়েছে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক, প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা, একুশে ফেব্রুয়ারি লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিনের পদও। এছাড়া রেজিস্ট্রার সহ চারটি অনুষদের ডিনপদে নিয়োগকৃতদের সকলেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত। আর বশেমুরবিপ্রবি অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত।

তবে এখানেই শেষ নয় বশেমুরবিপ্রবির শূন্যতার তালিকা। তিনটি ইনস্টিটিউটের মধ্যে দুটি ইনস্টিটিউটেরই গভর্নিং বডি নেই এবং একটি বিভাগের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক অনুমোদন ই নেই। ২৯টি বিভাগে নেই অধ্যাপক। আর তিনটি বিভাগ এবং একটি ইনস্টিটিউটের নেই নিজস্ব কোনো শিক্ষক। গেস্ট টিচারের মাধ্যমেই চলছে এ সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষা কার্যক্রম।

এসবের বাইরে ঘাটতি রয়েছে ক্লাসরুম, ল্যাবরুম এবং আবাসনের ক্ষেত্রেও৷ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৩৪টি বিভাগের মধ্যে অন্তত ২০টি বিভাগের ক্লাসরুম সংকট রয়েছে এবং ১০টি বিভাগের ল্যাব সংকট রয়েছে। 

এছাড়া শিক্ষার্থীরা জানান,বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২,০০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচটি হলে আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র ২,০০০ শিক্ষার্থী, যা শতকরা হিসেবে মাত্র ১৬ শতাংশ। তবে এসকল হলেও রিডিং রুম না থাকা, হল লাইব্রেরি না থাকাসহ  বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নিয়েও রয়েছে শিক্ষার্থীদের অসন্তুষ্টি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হোসাইন খান বলেন "এটি আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক বিষয় যে, প্রায় ১০ বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মেইন গেট, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল এবং স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি, এমনকি নেই কোনো ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র বা ক্যান্টিনও।"

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এই অবস্থার জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা দায়ী করছেন সাবেক উপাচার্য খন্দকার নাসিরউদ্দিনের অপরিকল্পিত এবং স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তকেই। সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত না করেই একের পর এক নতুন বিভাগ খোলা এবং আসন সংখ্যা বৃদ্ধির ফলেই এসব সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

লোকপ্রশাসন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী মো. নজরুল ইসলাম জানান, "একটি বিশ্ববিদ্যালয় এমন ভঙ্গুর অবস্থায় চলতে পারেনা। আশা করছি খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপাচার্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শূণ্য পদগুলোতে নিয়োগ প্রদান করে বশেমুরবিপ্রবির সমস্যা সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা রাখবেন।"

বিষয়গুলো সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ পদেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। উপাচার্য নিয়োগ দেয়ার পর হয়তো এসকল বিষয়ের সমাধান হবে।"

এসময় তিনি উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজার নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে উপ-উপাচার্যের প্রয়োজন হয় এবং বর্তমানে আমাদের যে পরিমাণ শিক্ষার্থী রয়েছে তাতে এই পদে নিয়োগ দেয়া হলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো হবে। আর ট্রেজারার থাকলে উপাচার্য এক কেন্দ্রীক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না এবং সমন্বিত সিদ্ধান্তের ফলে সিদ্ধান্তগুলোও সুদূরপ্রসারী হয়।"

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ৫ টি বিভাগ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বশেমুরবিপ্রবি। বর্তমানে ৭টি অনুষদ এবং ৩টি ইনস্টিটিউটে অধীনে প্রায় ১২,০০০ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত রয়েছে।
কেআই/ 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি