জামিন পেয়েছেন রাবির সেই অধ্যাপক
প্রকাশিত : ১১:২৬, ২৮ আগস্ট ২০২০
প্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে নিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাসের জের ধরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমান জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান বলে নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার নুরুল আমিন।
তিনি জানান, ‘গত ২৩ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের যৌথ বেঞ্চ এই জামিন আদেশ দেন। পরে তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি পান।’
জামিনের পর অধ্যাপক জাহিদুর রহমান রাতে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি রূপক অর্থে যে কথাগুলো বলেছিলাম, কারাগারে গিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি স্বাস্থ্যখাত নিয়ে আসলে মিথ্যা কিছু বলিনি। এর মধ্যে কারাগারে থেকে আমি জেনেছি, রিজেন্ট, জেকেজিসহ অনেকের অপকর্মগুলো বের হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমরা কথা না বললে কথাটা আসলে বলবে কে? আমার কথায় অনেকে কষ্ট পেয়েছেন হয়তো কিন্তু কথা তো বলতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা না বললে তো এগুলো বেরিয়ে আসবে না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে যেগুলো ঘটছে, সেগুলো নিয়ে আমি কথা বলার কারণে কারাগারেও অনেক মানুষ আমাকে সম্মান করেছেন। সবচেয়ে চিন্তিত ছিলাম আমার পরিবার নিয়ে। আমার জন্য অনেকেই কথা বলেছেন, দেখা করেছেন। তাদেরকে ধন্যবাদ।’
এর আগে গত ১৭ জুন রাজশাহী শহরের এক আইনজীবী মতিহার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন শিক্ষক জাহিদের বিরুদ্ধে। মামলায় মোহাম্মদ নাসিমকে নিয়ে মানহানিকর তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়। সেই মামলায় ওই দিন রাত ২টায় জাহিদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবাসিক কোয়ার্টার থেকে গ্রেফতার করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জাহিদুর রহমান নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকের পদে ছিলেন। নাসিমকে ইঙ্গিত করে ফেইসবুকে লেখার পর গত ১৬ জুন তাকে নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়।
নাসিমের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’ করে সেদিনই গ্রেফতার হন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক সিরাজুম মুনিরা। এরপর ১৫ জুন কাজী জাহিদুর রহমানের লেখা সামনে এনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। তার একদিন পরেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয় ও তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে গত ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯৯ তম সিন্ডিকেট সভায় কাজী জাহিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এই আইনে গ্রেফতারের পর থেকে তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করে মানবাধিকার কর্মীরা।
এআই/এমবি
আরও পড়ুন