থ্রাস্ট রোবোটিক্স স্কুল রোবট বানায়, রোবট শেখায়
প্রকাশিত : ২০:৪১, ৩১ অক্টোবর ২০২০
একটা রোবোটিক্স স্কুল গড়ে তুলেছে রাজধানীস্থ আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির কিছু রোবটিক্স প্রেমী ছাত্র-ছাত্রীরা। যার নাম দিয়েছে- ‘থ্রাস্ট রোবোটিক্স স্কুল’। দেশে প্রযুক্তিগত জ্ঞানসমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী পাইপলাইন গড়ে তুলতেই তাদের এ উদ্যোগ।
বিজ্ঞানমনা এ ছাত্র-ছাত্রীরা বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ রাতারাতি এই সেক্টরে শক্তিশালী বা উন্নত হতে পারবে না। তাই তারা চাচ্ছে প্রযুক্তিগত জ্ঞানসমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী পাইপলাইন গড়ে তুলতে। যার মূল চালিকাশক্তি হবে আমাদের দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে দেশের সব প্রান্তে প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ মানুষ গড়ে তুলতে হবে। তাই তারা মূলত কাজ করছে ঢাকার বাইরে সকল জেলার স্কুল/কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে।
ইতোমধ্যে নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, চাঁদপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জসহ ঢাকার বেশ কয়েকটি স্কুল/কলেজে তারা রোবোটিক্স’র বিষয়ে বাচ্চাদের শেখাচ্ছে। এ কার্যক্রমের অপর একটি মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- তারা রোবোটিক্স’র একটা আরএন্ডডি (রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট) দল তৈরি করছে। যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ধরনের আইওটি এবং রোবোটিক্স প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করবে। আর এই অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে দেশের বাইরেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজে অংশগ্রহণের সাহস জোগাবে।
বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে রোবোটিক্স কি এবং কিভাবে শুরু করতে হয়- সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানায় তারা। জেলায় জেলায় গিয়ে বিভিন্ন স্কুল/কলেজে কর্মশালার আয়োজন করে যেখানে তারা ছাত্রছাত্রীদের দিক নির্দেশনা দেয় এবং বিভিন্ন ধরণের রোবোটিক্স প্রজেক্ট দেখায়। যাতে শিক্ষার্থীদের মাঝে রোবোটিক্স’র প্রতি আগ্রহ জন্মায়।
উন্নত দেশগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে- তারা তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল পর্যায় থেকেই বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উপকরণ তৈরি এবং ব্যবহারের প্রতি উৎসাহিত করছে। এতে সেই দেশগুলোতে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন হচ্ছে। যার ফলে সেই দেশগুলোতে বিভিন্ন টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
থ্রাস্ট রোবোটিক্স স্কুলের উদ্যোক্তারা মনে করেন, যদি দেশে বোস্টন ডাইনামিক্স বা ইয়াস্কাওয়া’র মত প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাই, সেটা এই মুহূর্তে সম্ভব না। কারণ, এ কাজটি করতে গেলে বেশিরভাগ শ্রমিক বাইরে থেকে আনতে হবে। এর মূল কারণ, দেশে প্রযুক্তি বিষয়ক সঠিক জ্ঞানের অভাব। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে পুরো একটি প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আর মূলত সেই কাজটি করছে তাদের থ্রাস্ট রোবোটিক্স স্কুল।
তারা জানায়, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও রোবোটিক্স নিয়ে কাজ শুরু করতে পারে। এটা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গিয়েই যে শুরু করতে হয়- এমন না। এ জন্যই থ্রাস্ট রোবোটিক্স স্কুল একটা সঠিক গাইডলাইন তৈরি করছে এবং কিভাবে এগুলো রোবোটিক্স জগতে কাজ শুরু করতে পারবে, কিভাবে এটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারবে- এসব সম্পর্কে তারা সঠিক ধারণা দেয়।
তারা রোবোটিক্স’র মূল বিষয়গুলো, যেমন- আর্ডুইনো, সেন্সর, রোবোটিক্স মোটর, রোবোটিক্স আর্ম ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস নিয়ে বিস্তারিত জ্ঞান দেওয়ার মাধ্যমে রোবটিক্স জগতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এছাড়া এই ধরণের জিনিসপত্র ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা যেন বিভিন্ন বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিতে পারে, সেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে রোবোটিক্স স্কুল।
তারা প্রতিটি জেলা থেকে কিছু ভালো সংখ্যক ছেলে-মেয়েকে বের করে আনছে, যারা এই রোবোটিক্স বিষয়ে আগ্রহী এবং ভাল কাজ করার সক্ষমতা আছে। পাশাপাশি তারা একটা যথোপযুক্ত ট্রেনিং দেওয়ার চেষ্টা করছে, যেন তারা পরবর্তীতে নিজ নিজ জেলায় গিয়ে ট্রেইনার হয়ে উঠতে পারে।
এনএস/
আরও পড়ুন