ববি উপাচার্য হিসেবে ১ বছর পূর্ণ করলেন ড. ছাদেকুল আরেফিন
প্রকাশিত : ২২:৫১, ৬ নভেম্বর ২০২০
অধ্যাপক ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের ০৬ তারিখ থেকে দায়িত্ব পালন করছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে। একজন দক্ষ প্রশাসক ও স্বনামধন্য শিক্ষক পরিচিতির বাইরেও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ত্ব হিসেবে খ্যাতি আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সাবেক এ অধ্যাপকের।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের এক (১) বছর পূর্ণ হয়েছে তার। দায়িত্ব গ্রহণের সময় তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার মহাপরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে শিক্ষা, গবেষণা এবং সহশিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০২০-২০২১ সালের বাজেটে গবেষণা খাতকে প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। শিক্ষকদের প্রমোশনের ব্যবস্থা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সামাজিক বনায়নসহ বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজন করেছেন। দায়িত্ব গ্রহনের পর চলতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-এ-বাংলা হলে বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধন করেছেন।
করোনা মহামারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্টাফদের উদ্বেগ উৎকন্ঠা থেকে রেহাই দিতে জরুরি টেলি স্বাস্থ্য সেবা চালুর উদ্যোগ নেন উপাচার্য।
করোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হতদরিদ্র, অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য নিয়েছেন বিভিন্ন পদক্ষেপ। গত মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে কাজ নাই মজুরি নাই শর্তে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত দৈনিক বেতন ভিত্তিক ৭১ কর্মচারীকে ১ মাসের বেতন সমপরিমাণ ৭ লক্ষ ২ হাজার ৯ শত টাকার আর্থিক অনুদান প্রদান করেন তিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪টি বিভাগে দেড় শতাধিক অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের ৩ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন।
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম আহসান বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর উপাচার্য স্যার নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে খুব বেশি সময় না পেলেও কিছু ইতিবাচক কাজ দৃশ্যমান হয়েছে, তারমধ্যে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রবর্তন, করোনাকালীন মানবিক সহায়তা, শেরে বাংলা হলে বঙ্গবন্ধু কর্ণার উদ্বোধনসহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বেশ কিছু প্রচেষ্টা। এছাড়াও শিক্ষার্থী বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা, অপ্রাসঙ্গিক জরিমানা ও ব্যয় কমিয়ে আনা, শিক্ষার মানোন্নয়নে গবেষণা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা, চলমান সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করাসহ নানা আকাঙ্খা রয়েছে আমাদের। এ বিষয়ে উপাচার্য স্যার কতটা প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. খোরশেদ আলম বলেন, গত বছর নভেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই উপাচার্য স্যার দ্রুত সময়ের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করেছিলেন। শিক্ষার্থীদের কিছু দাবিও পূরণ করেছেন এবং করোনা পরবর্তী বাকি দাবিগুলো ও পূরণ করবেন। শিক্ষকদের পদোন্নতির উদ্যোগ নিয়েছেন। করোনা কালীন সময়ে অসচ্ছল শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের আর্থিক সহযোগিতা করে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সর্বোপরি উপাচার্য স্যার সফলভাবে একটি বছর পূর্ণ করেছেন।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আন্তর্জাতিক ও আধুনিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছি। করোনার কারণে সব কাজ সীমাবদ্ধ হয়ে আছে, দৃশ্যমান হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আধুনিক মানের লাইব্রেরী, একাডেমিক ভবন, অডিটোরিয়াম, আবাসিক হল বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত আছে। এছাড়াও সেশন জট কমানো, ক্লাসরুম সংকট, শিক্ষার্থীদের বাস সংকট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি শিক্ষার্থী বান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পর থেকে অন্যান্য উপাচার্যের তুলনায় অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের কার্যক্রম এবং বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে পরিকল্পনা প্রশংসনীয় বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এসি
আরও পড়ুন