হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভাবনায় নতুন বছর
প্রকাশিত : ০৮:৪৭, ৪ জানুয়ারি ২০২১
করোনা আতঙ্ক আর গৃহবন্দী জীবনের নতুন কিছু অভিজ্ঞতা নিয়েই শেষ হলো ২০২০। আর এই ২০ কথাটির সাথে বিষাক্তময় হয়ে উঠেছিল সারাবিশ্ব। কোভিড-১৯ নামক করোনা ভাইরাস এর বিষাক্ত ছোবলে হারাতে হয়েছে আত্মীয় স্বজনসহ অসংখ্য জ্ঞানী-গুনী এবং বিখ্যাত মানুষদের। পুরোনো বছরের দুঃখ আর জরাজীর্ণতা ভুলে নতুন বছরে নব উদ্যমে পথ চলতে চায় সবাই। নতুন বছরে সবারই থাকে আলাদা আলাদা কল্পনা-পরিকল্পনা। দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা কি ভাবছেন নতুন বছরে, কি প্রত্যাশা তাদের? শিক্ষার্থীদের সেই কল্পনা-জল্পনার কথা তুলে ধরেছেন মোঃ আব্দুল মান্নান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ রিয়াদ খান নতুন বছরের ভাবনা নিয়ে বলেছেন- সূর্যোদয়ে বর্ষপরিক্রমায় শুরু হবে নতুন বছর। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির দোলাচলে কালের আবর্তে মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাবে আরো একটি বছর। স্বপ্ন আর সম্ভাবনা নিয়ে যাত্রা শুরু হচ্ছে নতুন বছরের। না পাওয়ার সব গ্লানি মুছে নতুন বছর অর্জন আর প্রাচুর্য্যে, সৃষ্টি আর কল্যাণে হেসে উঠবে-এই প্রত্যাশা। সকলের সফলতা,সুস্বাস্ব্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। সকলের সঠিক বাস্তব সম্মত কাজে এই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
কৃষি অনুষদের লেভেল-৩ সেমিস্টার-২ এর শিক্ষার্থী অনুপমা আনজুম নতুন বছরের প্রত্যাশা আর ভাবনার কথা জানিয়ে বলেছেন- প্রথমত চাই খুব দ্রুত যেন পৃথিবী সুস্থ হয়ে উঠে, সব কিছু যেন স্বাভাবিক হয়ে যায় আমাদের জীবনে। আমরা খুব একটা হয়তো বুঝতে পারছি না, কতটা ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে নিউ নরমাল এর, কিন্তু যাদের চাকরী চলে যাচ্ছে, পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য এটা খুব কষ্টের। আর আমার প্রত্যাশা হলো লাইভে কিছু পরিবর্তন আনবো, বিগত বছর জীবনে যা শিক্ষা দিয়ে গেছে তার প্রতিফলন করার ইচ্ছা আছে এই বছর। পরিকল্পনা ত অনেক আছে, ছোট বেলা থেকেই নতুন বছরের উইশ লিস্ট বানানোর অভ্যাস আমার, এই বছরের উইশ লিস্টে ইতোমধ্যে ১৭ টা উইশ এড হয়ে গেছে। তার মধ্যে দুই একটা বলি, আমি এই নয় মাস বাসায় থেকে একটা জিনিস উপলব্ধি করেছি আমার ভার্সিটির প্রতি আমার টান কতোটা। তাই ইচ্ছা আছে এইবার ভার্সিটি গিয়ে আমার ক্ষুদ্র সামর্থে যা কুলায় ভার্সিটির জন্য কিছু করা, আসলে এটা আমার একার পক্ষে ত সম্ভব নয়,আমাদের ইকো নেটওয়ার্ক হাবিপ্রবি টিম আছে,বিভিন্ন স্যারেরা আছেন আমাদের সাথে সকলের সহযোগিতায় আশা করি কিছু করতে পারবো। আর একটা ইচ্ছা হলো নিজের জন্য কিছু করা। জীবনের ব্যস্ততায় ছুটতে ছুটতে মানুষ নিজেকে সময় দিতেই ভুলে যায়, তাই দেখা যায় আত্নহত্যার প্রবণতাটাও অনেক বেড়ে যায়। তাই নিজের জন্য কিছু করতে চাই, যেন কখনো এমন খেয়াল আসলেও মনে হয় আমার নিজের জন্যই আমাকে বাঁচতে হবে।
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে কৃষি বনায়ন ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ নাজমুল হুদা জানিয়েছেন- আমরা গত বছরটা মহামারীর বছর পার করলাম। এই মহামারী আমাদেরকে অনেক কিছু শিক্ষা দিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো বিপদে মানুষের পাশে দাড়ানো।সামর্থ্য অনুযায়ী অনেকে অনেকের পাশে দাড়িয়েছে। মানুষ যে মানুষের জন্য তা এই মহামারীতে প্রমানিত হয়েছে। যদিও অনেক বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটেছে। যেমন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে কেউ যাইতে পারে না,বাবার কাছে ছেলে যেতে পারে না ছেলের বাবার কাছে যাইতে পারে না;যা খুবই ছিল বেদনাদায়ক। আমরা আর পিছনে তাকাতে চাই না তবে পিছনের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে নতুন বছরে এগিয়ে যেতে হবে। দেশপ্রেম অন্তরে ধারন করে নতুন বছরে একটি হলেও ভাল কাজ শুরু করবো এবং ভাল কাজের মধ্য দিয়ে বছরটা শেষ করবো। সর্বোপরি আমরা দেশকে দুর্নীতি মুক্ত ও দূষণ মুক্ত পরিবেশ যেন পরবর্তী প্রজন্মকে উপহার দিতে পারি এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের লেভেল-২ সেমিস্টার-১ এর শিক্ষার্থী মারযুকা মেহযাবিন জানিয়েছেন- নতুন বছর নিয়ে এবার প্রত্যাশা একটু বেশি-ই বইকি। ২০২০ সাল টা কারো জন্যই সম্পূর্ণ ভাবে ভালো যায়নি। ২০২০ সালকে জীবনের জটিল ও কঠিন মুহূর্ত গুলোর সাক্ষী বললে ভুল হবেনা। নতুন বছরটা নতুন উদ্যম আর প্রেরণা নিয়ে শুরু করতে চাই পরিবারের সবার সাথে। পুরনো স্মৃতি গুলোকে ভুলে সুন্দর সময় গুলো মনে রাখতে চাই। প্রত্যাশা হল নির্ঝঞ্ঝাট একটি বছর পার করার আপনজনদের সাথে এবং পরিকল্পনা তো আমরা অনেক কিছুর ই করি কিন্তু জীবন এক সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে। তাই কোনো পূর্ব পরিকল্পনা নেই। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
বিএস অনুষদের ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম রুবেল বলেছেন- নতুন বছর,প্রত্যাশা অনেক। ২০২০সালের করোনা মহামারীকে আল্লাহর রহমতে জয় করে নতুন বছরের শুভ সূচনা করতে চাই।ব্যর্থতাগুলো ভুলে নতুন স্বপ্নবুনে স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।সবুজের বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে একটি সুন্দর স্বাস্থ্যকর বাংলাদেশ গড়তে চাই।
আরকে//
আরও পড়ুন