ঢাকা, সোমবার   ১৪ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

গবি উপাচার্যের চলতি ও ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ইউজিসির অস্বীকৃতি  

গবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ১৮:১৩, ১৬ মার্চ ২০২১

Ekushey Television Ltd.

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য দরকার রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত উপাচার্য। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) কোনো বৈধ উপাচার্য নেই। তার পরিবর্তে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নিয়োগকৃত উপাচার্য দিয়েই পরিচালিত হচ্ছে সার্বিক কার্যক্রম। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা: লায়লা পারভীন বানু বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে আছেন বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তিনি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত না হওয়ায় উপাচার্য হিসেবে তাকে মানতে নারাজ ইউজিসি। তাদের ভাষ্যমতে, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কোনো উপাচার্য নাই। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি ও ইউজিসি স্বীকৃত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক ডা: মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ। 

দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই উপাচার্য নিয়োগের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর একই বছরের ৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নতুন উপাচার্য নিয়োগে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়। পরে ট্রাস্টি বোর্ড ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ ডা. লায়লাকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিয়োগ করে। কিন্তু ইউজিসি এক চিঠিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে জানায়, উপাচার্য হিসেবে ডা. লায়লার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নেই। এদিকে হাইকোর্ট ডাঃ লায়লাকে উপাচার্য নিয়োগের রায় দিলেও ইউজিসির আপিলে পুনরায় তা বিচারাধীন হয়ে আছে।   

এদিকে নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই পুরো চার বছর দায়িত্ব পালন সম্পন্ন করেন ডা: লায়লা। এসময় তিনি কখনো 'ভারপ্রাপ্ত', কখনো 'চলতি দায়িত্ব' হিসেবেই কাজ করেন। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত না হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। বিভিন্ন সময়ে বাইরে উচ্চশিক্ষা, কর্মক্ষেত্রে বাধা, দীর্ঘদিন সমাবর্তন না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের। 

আইন অনুযায়ী, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত উপাচার্য না থাকলে ঐ স্বীকৃত উপ-উপাচার্য কিংবা ট্রেজারার দায়িত্ব পালন করতে পারেন। কিন্তু গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই তিনটি পদের কোনোটিই রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদনকৃত নয়। ফলে কেউই এখানে ভারপ্রাপ্ত বা চলতি দায়িত্ব পালন করতে পারেন না বলে জানান ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক মো. ওমর ফারুখ। 

কিন্তু দীর্ঘদিন এই নিয়মকে উপেক্ষা করে সার্বিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এসব সমস্যার কারণে ২০১৯ সালের মার্চে ইউজিসির ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল চিহ্ন দেখতে পান শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে বৈধ উপাচার্যের দাবিতে তারা দীর্ঘ ৬৮ দিন আন্দোলন করেন। 'তিন মাসের মাঝে সমস্যা সমাধান করা হবে' বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ট্রাস্টি বোর্ডের এমন আশ্বাসে তখন আন্দোলন বন্ধ করেন তারা।

কিন্তু এরপর ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও কার্যত কোনো সমাধান হয়নি। আশ্বাসের তিন মাস পর উপাচার্য নিয়োগে অগ্রগতির বিষয়ে ট্রাস্টি বোর্ডে যোগাযোগ করলে তারা কথা বলতে রাজি হননি বলে জানান আন্দোলনকারী ছাত্রনেতা মো. রনি আহম্মেদ। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন জেগেছে, কর্তৃপক্ষ আদৌ বৈধ উপাচার্য চায় কি না! জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী করোনার কারণে মামলার কার্যক্রম পিছিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অবগত করে দ্রুত সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এদিকে নিয়মানুযায়ী চলতি দায়িত্ব কিংবা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে ডা: লায়লা পারভীন বানু যেভাবে দায়িত্ব পালন করছেন, সেটা আইনসিদ্ধ নয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগের চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়েরও চিন্তা আছে। উপাচার্য ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারেনা।'  

যেহেতু উপাচার্য নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলমান রয়েছে, সেহেতু ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালনের জন্য উপ-উপাচার্য কিংবা ট্রেজারার কেন নিয়োগ দিচ্ছেন না? এমন প্রশ্নের তিনি বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যে নাম দিয়েছি। কিন্তু নানান সময় এটার নিয়মকানুন বদল হয়। এজন্য দেখা গেছে, নাম দিয়েছি কিন্তু ফেরত চলে আসছে। আশা করছি, এবার অল্প সময়ের মাঝেই সমাধান আসবে।' 
কেআই// 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি