হল বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত : ১৫:১০, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলাকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হল খুলতে গত ৯ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা অনুসরণপূর্বক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশ দেন মাউশি মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মোঃ গোলাম ফারুক৷ সেই নির্দেশনার পরও আবাসিক হল খোলেনি ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ৷ এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা৷
‘ঢাকা কলেজে ভর্তির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল স্বল্প খরচে হলে থেকে পড়ালেখা করা৷ আবার শিক্ষার মানও অনেক ভাল৷ এখন হল না খুলে সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে৷ কি করবো, আমার তো ঢাকাতে থাকার কোন জায়গা নেই’- এমনটাই বলেন ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী তামিম হাসান।
নেত্রকোনা থেকে ফোনে কথাগুলো বলেন ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থী৷ তামিম হাসান ঢাকা কলেজের আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী৷
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আজ ঢাকা কলেজে সশরীরে ক্লাস হলো অথচ আমি আসতে পারলাম না৷ ঢাকায় মেসে থেকে পড়ালেখা করার সামর্থ্য আমার নেই৷ তাই কলেজ খুললেও আমি ক্লাসে আসতে পারিনি৷
শুধু তামিম হাসান নয়, হল না খুলে সশরীরে ক্লাস শুরু হওয়ায় এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আরও অনেক শিক্ষার্থী৷ দীর্ঘ দেড় বছর পর রোববার খুলেছে দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷
শেখ কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইয়াসিন আলম বলেন, আমাদের বই, খাতা, বেড, জিনিসপত্র সব হলে৷ হল না খুললে আমরা কোথায় যাব৷ আমাদেরকে বলা হয়েছে আত্মীয়ের বাসায় থাকতে৷ কিন্তু ঢাকায় যাদের আত্মীয় নেই তারাই তো হলে থাকে৷ ঢাকায় আমার কোন আত্মীয় নেই, মেসে থাকার সামর্থ্যও নেই৷ হল খুলে দিলে আমাদের অনেক উপকার হবে৷
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার খবরে মিরপুরে মামার বাসায় উঠেছেন দক্ষিণ হলের আবাসিক ছাত্র আবদুর রহমান৷ তিনি বলেন, আমরা এক বছরের বেশি সময় ধরে হলে থেকেছি এখন হঠাৎ করে মেসে ওঠা সম্ভব নয়৷ মামার বাসায় কতদিনইবা থাকতে পারবো৷ আর এখান থেকে ক্লাস করতেও অনেক সমস্যা৷ আমরা চাই, দ্রুত হল খুলে দেয়া হোক৷
কলেজ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য আসন রয়েছে চারশ’ এর কিছু বেশি৷ তবে সব মিলিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রায় আট শতাধিক শিক্ষার্থী হলে থাকে৷ কিছুদিন আগে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পাস করায় এখন শুধু প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবাসিক ছাত্রের তালিকায় রয়েছেন৷ আর সদ্য ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের এখনও হলে আসন বরাদ্দ দেয়া হয়নি৷
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ কামাল ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর যেহেতু হল বন্ধ ছিল৷ হলের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে৷ হল খোলার ব্যাপারে হলের তত্ত্বাবধায়কদের সাথে কলেজ প্রশাসনের আলাপ-আলোচনা চলছে৷
স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খোলার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা থাকলেও হল না খোলার কারণ জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর) থেকে হল খোলার জন্য যে শর্তগুলো দেয়া হয়েছে আমাদের জন্য সেগুলো কঠিন হয়ে যাচ্ছে৷ আমরা হল খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছি৷ হল সুপারদের নির্দেশ দিয়েছি, তারা কাজ করছে৷ শীঘ্রই খুলে দেয়া হবে৷
তবে ঠিক কবে হল খোলা হবে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোন তারিখ বলেননি তিনি৷
এএইচ/
আরও পড়ুন