ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

পরিবর্তনের লক্ষ্যেই গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম: ডা. জাফরুল্লাহ

গবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ১৬:১৫, ১৪ জুলাই ২০২২

Ekushey Television Ltd.

পৃথিবীর ইতিহাসে ১৪ জুলাই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিন ফরাসি বিপ্লব হয়েছিল। যে বিপ্লবের মাধ্যমে পৃথিবীতে একটি পরিবর্তন এসেছিল। সেই পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখেই ১৪ জুলাই আমরা গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা এমন একটি শিক্ষাঙ্গণ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম, যেটি সমাজের জন্য পরিবর্তন বয়ে আনবে, কল্যাণ বয়ে আনবে।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এসব কথা বলেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, আজকের এই দিনে দাঁড়িয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের কিছু পরিবর্তনের অংশীদার হতে পেরেছে। মধ্যবিত্তের বিশ্ববিদ্যালয় হতে পেরেছে। যা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সমাজে ভিন্ন একটি জায়গাও করে দিয়েছে। রজতজয়ন্তীতে এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি। 

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রোকনুজ্জামান মনি বলেন, যদি প্রশ্ন করেন গণ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের কি দিয়েছে? উত্তরে আমি বলব- এ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের একটি পরিচয় দিয়েছে। যে পরিচয় আমরা আমৃত্যু বহন করে চলব। বিশ্ববিদ্যালয় থাকাকালীন সময়ে এই প্রাঙ্গণ আমাদের এমন  কিছু মানুষের সঙ্গে মেশার, জানার, কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। যার ফলে আমরা এই সমাজটাকে একটু ভিন্নভাবে দেখতে পারি, মানবিক হতে পারি, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা অনুভব করতে পারি। এখানে পড়াশোনা এবং বিভিন্ন সহশিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে দায়বোধ তৈরি করে দেয়া হয়, তা আমাদের প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। রজতজয়ন্তীতে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটাই চাওয়া, এ বিশ্ববিদ্যালয় যেন  শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রিয় প্রাঙ্গণ হয়ে থাকে সবসময়।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তীতে নবীনদের উচ্ছ্বাস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভাষা-যোগাযোগ ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মিতু আহমেদ বলেন, প্রাণের ক্যাম্পাস সম্পর্কে অনুভূতি এত কম কথায় প্রকাশ করা যায় না। তবে আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তী যেন সুন্দর হয়। স্মৃতিময় হয়। রজতজয়ন্তীর মতো এমন বিশেষ দিবস তো সব সময় আসে না। তাই এই দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পূনর্মিলনীর আয়োজন করা উচিৎ। যেখানে সাবেক- বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলেই আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে। তাদের ফেলে আসা দিনের স্মৃতি চারণ করতে করতে নতুন স্মৃতির জন্ম দিতে পারবে। 

অতীত সব সময়ই সুন্দর, আর সেই অতীত যদি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী সময়ের তাহলে তো কথায় নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের রজতজয়ন্তীতে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (গাকসু) ভিপি মোহাম্মদ জুয়েল রানা বলেন, আমি সবসময়ই বলি গণ বিশ্ববিদ্যালয় আমার পরিবার, আমার বাড়ি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর ১-২ মাস খুবই খারাপ এবং একাকী লাগত। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে কখন, কিভাবে যে মনের অজান্তেই ক্যাম্পাসের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম, সেটা বলতে পারি না। যে প্রেম এখন ভালবাসায় পরিণত হয়েছে।  ক্যাম্পাস ছেড়ে আসার পরও সেই ভালবাসা আছে, থাকবে ইনশাআল্লাহ। গ্রামের ভেতর এত বড় আর সুন্দর ক্যাম্পাস ভালো না লাগার কোনো কারণও অবশ্য নাই! যাইহোক, বিশ্ববিদ্যায়ের জন্মদিনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অনেক সফলতা কামনা করছি। সেই সাথে সারাজীবন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিজেকে যেন সম্পৃক্ত রাখতে পারি সেটাই এখন বড় চাওয়া।

রজতজয়ন্তীতে এসে বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণার প্রকৃত কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন বলেন,  বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে গ্রামীণ সমাজের চাহিদা, সামাজিক বিকাশ ও মানব কল্যাণের লক্ষ্যে উচ্চমানের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনগোষ্ঠী, দূরদর্শী নেতা, আলোকিত নাগরিক তৈরি উদ্দেশ্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শুভানুধ্যায়ীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এর ট্রাস্টি বোর্ড, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিলসহ বিভিন্ন পর্যায়ে যে সমস্ত গুণীব্যক্তিবর্গ অবৈতনিকভাবে তাদের শ্রম ও মেধা দিয়েছেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আশা করি গণ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উচ্চশিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি শিক্ষা ও গবেষণার প্রকৃত কেন্দ্র হিসেবে অচিরেই প্রতিষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১৪ জুলাই "একটি ব্যতিক্রমধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়" স্লোগান নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এর ৪ বছর পর অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি