ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি: কুবিতে ফাঁকা গুলি-ককটেল বিস্ফোরণ

কুবি সংবাদদাতা 

প্রকাশিত : ২০:৩২, ১ অক্টোবর ২০২২

Ekushey Television Ltd.

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তি নিয়ে ধোঁয়াশা না কাটলেও এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শনিবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে ছাত্রলীগের একটি দল ৪০ থেকে ৫০টি মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে এবং বঙ্গবন্ধু হলে প্রবেশ করে। 

এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর প্রধান ফটক থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার পর্যন্ত মোটরসাইকেল শো-ডাউন করে ছাত্রলীগের একটি দল। শহিদ মিনার থেকে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এসে ককটেল ও ফাঁকা গুলির ছুঁড়ে হল থেকে নেতাকর্মীদের বের হতে বলেন তাঁরা।

এসময় ‘সদ্য সাবেক’ সভাপতি (২০১৭ সালে গঠিত কমিটির) ইলিয়াস হোসেন সবুজ বিরোধী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক (২০১৫ সালে গঠিত কমিটির) রেজা-ই-এলাহীর পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। প্রায় ২০ মিনিট ক্যাম্পাসে অবস্থান করার পর প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দীকী ও অন্যান্য শিক্ষক এসে তাঁদেরকে অনুরোধ করলে বেরিয়ে যান তাঁরা।

এরপর ইলিয়াসের অনুসারীরা তাদেরকে প্রতিহত করতে হল থেকে নামতে শুরু করেন। এসময় তাদের হাতে রামদা, হকি স্টিক ও লাঠিসহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র দেখা যায়। ‘ক্যাম্পাস ও প্রধান ফটক বন্ধ থাকার পরও কিভাবে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে শোডাউন করে’- এমন বিষয় জিজ্ঞেস করে প্রক্টরের সাথে বাগবিণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা।

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী বলেন, কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও লোটাস কামালকে (অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামাল) ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল দিয়েছি। কিন্তু ওরা (ইলিয়াসের অনুসারীরা) ঝামেলা করেছে।

তিনি আরও বলেন, কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার বিষয়টিকে ঘোলাটে করার জন্য তারা (ইলিয়াসের অনুসারীরা) বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত করার পরও তারা বিষয়টিকে অস্বীকার করে যাচ্ছে। আর ক্যাম্পাসের যে কেউই আমার নামে স্লোগান দিতে পারে। সব জায়গায় আমার অনুসারী আছে।

শাখা ছাত্রলীগের ‘সদ্য সাবেক’ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালের কালোরাত্রি ছাড়া হলের ভিতরে ঢুকে গুলি করা, ককটেল মারা, পুলিশ এবং প্রক্টরের সামনে দিয়ে ক্যাম্পাস গেইট অতিক্রম করে হলের (বঙ্গবন্ধু) দু’তলায় উঠে যাওয়া, প্রক্টরের পাশেই ককটেল ফোটানো- এটি বিরল ঘটনা হয়ে থাকবে। এখানে তিন-চারজন সাবেক ছাত্র এবং একজন রানিং ছাত্র, অটোচালক, সিএনজি চালক, বহিরাগত, বিভিন্নমামলার আসামী ছিল।’

ইলিয়াস আরও বলেন, আমরা কুবি প্রশাসনকে বলব ছেলেদের দুপুরে ঘুমানোর যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া উচিত। প্রশাসনের নিরব ভূমিকার কারণে তাদের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রসহ প্রশাসনের লোকের সামনে কিভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে। যারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে এজাহারভুক্ত মামলা করতে হবে। তা না হলে সব শিক্ষার্থী সাথে নিয়ে আমরা কঠিন আন্দোলনে যাবো, দরকার হলে আমরণ অনশন করবো।

ফাঁকা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ সম্পর্কে জানতে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীকে কয়েকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেনি।

এর আগে শুক্রবার রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ‍বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ। তবে কিছুক্ষণ পরই আবার সেটি মুছে ফেলায় দু’ভাগ হয়ে পড়ে শাখা ছাত্রলীগ। ইলিয়াসের অনুসারীরা প্রেস বিজ্ঞপ্তিটিকে ‘ভূয়া বললেও রেজার অনুসারীরা একে সত্য বলে দাবি করছেন।
কেআই//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি