ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

শান্ত ক্যাম্পাসে স্থগিত পরীক্ষা, ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:১৫, ১৬ অক্টোবর ২০২২

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তিকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বিবাদমান দুই গ্রুপের অস্ত্রের মহড়ায় ২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জরুরি সভায় ১০ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ৮ দিন সকল পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তবে এসকল ঘটনার কোন সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি প্রশাসনকে। দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত রাখায় শিক্ষাজীবন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ৮ দিনে বিভিন্ন বিভাগের ২৭টি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত হয়ে আছে। যার মধ্যে স্নাতকের ২৪টি ও স্নাতকোত্তরের ৩টি ফাইনাল পরীক্ষা আটকে আছে। গত মাসেও ২ দিনে ৯টি সেমিস্টার পরীক্ষা স্থগিত ছিল। এছাড়াও এসময়ে ইনকোর্স পরীক্ষাগুলো বন্ধ রয়েছে বলে জানা যায়।

ফলে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে, ২ হলের মারামারিতে ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। এতে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ও প্রক্টরিয়াল টিমের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে, প্রক্টর সেখানে উপস্থিত থেকেও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো তিনি এই সংঘর্ষকে বিভিন্নভাবে উস্কে দিয়েছেন।

প্রশাসন চলমান পরীক্ষাগুলো স্থগিত করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনার্সের ৪ বছর পার হয়ে গেছে। ৭ম সেমিস্টারের পরীক্ষার ডেট হলেও এখন পরীক্ষা আর হচ্ছে না। এমতাবস্থায় পড়াশুনা শেষ করতে পারবো কিনা এটা নিয়ে শঙ্কায় আছি।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ক্যাম্পাসে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে সেটার দায় তো সাধারণ শিক্ষার্থীদের না। প্রশাসন নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ, তাই এমন ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যদি বিচার করতো তাহলে এই রকম ঘটনা হত না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তানভীরুল ইসলাম বলনে, “আমাদের আর ১টা মাত্র পরীক্ষা বাকি কিন্তু পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় সেটি এখনও আটকে আছি। এটা খুবই হতাশাজনক একটা ব্যাপার।”

লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, “কর্তৃপক্ষ তুচ্ছ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে এভাবে পরীক্ষা বন্ধের নির্দেশ দিচ্ছে। আইন প্রয়োগ ও শাস্তি কার্যকর করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর জন্য আমাদের শিক্ষাজীবন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী অধ্যাপক বলেন, “৪ মাসে সেমিস্টার হওয়াতে শিক্ষার্থীদের এমনিতেই পড়াশোনার চাপে থাকতে হয়। সেখানে আবার তারা রাজনীতিও করছে, মারামারি করে পড়ালেখার পরিবেশ নষ্ট করছে। তাদের জন্য শত শত শিক্ষার্থী পিছিয়ে যাচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় এমনটা হচ্ছে।”

উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, “এসব প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে উপাচার্য মহোদয় ভাল বলতে পারবেন। আমি কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়।”

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনেরর দপ্তরে গেলে তিনি প্রতিবেদকের সাথে কথা বলবেন না জানান। পরর্বতীতে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি প্রতিবেদকের কল রিসিভ করেননি।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি