ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৬ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

তুচ্ছ ঘটনায় হাবিপ্রবির পাঁচ শিক্ষক লাঞ্ছিত, বরখাস্ত ১

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:২১, ১৭ নভেম্বর ২০২২

আটক অভিযুক্ত তাজুল ইসলাম

আটক অভিযুক্ত তাজুল ইসলাম

Ekushey Television Ltd.

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক কর্মচারীর আক্রমণে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন একই বিভাগের পাঁচ শিক্ষক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তাজুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলা দায়ের করে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মামুনুর রশীদ থানায় মামলা করেন। এর আগে বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে একাডেমিক ভবন-২ এর তৃতীয় তলায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

আহত শিক্ষকরা হলেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক রোকনুজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক বেলাল হোসেন, প্রভাষক হারুন অর রশিদ ও নির্মল চন্দ্র রায়। এছাড়া প্রভাষক পদে সদ্য নিয়োগ পেয়ে বুধবার যোগ দিতে আসা মাহাবুব হোসেনও মারধরের শিকার হয়েছেন। 

তাঁরা সবাই দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮তম ব্যাচের কান্ট্রি ট্যুরে যাওয়ার কথা ছিল। তাই আগের দিনই বিভাগের কর্মচারী মো. তাজুল ইসলামকে সকাল ৮টার মধ্যে অফিসে আসতে বলা হয়। শিক্ষকরা অফিসে এসে দেখেন তাজুল ডিপার্টমেন্টে আসেননি। বিভাগের চেয়ারম্যান ফোন দিলেও কথা না বলে বারবার কেটে দেন। 

সকাল ৯টার পরে তাজুল ডিপার্টমেন্টে আসলে দেরি করার কারণ জানতে চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে পরে। একারণে বিভাগের চেয়ারম্যানসহ অন্য শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগপত্র লিখতে বসেন। এতেই সে ক্ষিপ্ত হয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতের কাছে থাকা কাঁচের মগ দিয়ে শিক্ষকদের এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন।  

এর আগেও সে ছোটখাটো বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করতেন। 

ফ্যাকাল্টির অন্য শিক্ষকরা বলেন, তাজুলের আক্রমণে আহত শিক্ষকরা প্রাণভয়ে ফ্যাকাল্টি ভবনের বাহিরে বের হয়ে আসলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে আমরা বের হয়ে আসি। শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাই।

ঘটনার পর অভিযুক্ত তাজুলকে আটক করে প্রক্টরের গাড়িতে উপাচার্য ভবনের সামনে বসিয়ে রাখা হয়। এসময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা গাড়ি ঘিরে রেখে বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখা যায়, আহত শিক্ষকদের মাথায়, বুকে, পিঠে জখমের চিহ্ন রয়েছে। একজনের ঠোঁটে সেলাই পরেছে ও দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যেকের হাতে স্যালাইন টানানো আছে।

ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মত আমরাও অত্যন্ত মর্মাহত। প্রশাসনের আশ্বাসে ৩ দিন দেখবো। এর মাঝে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে আমরা কর্মবিরতিসহ অন্য কর্মসূচিতে যাবো। তবে শিক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য একাডেমিক কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মামুনুর রশীদ বলেন, ঘটনার পরপরই তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দুপুর দেড়টার দিকে তাজুলকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মামুনুর রশীদ থানায় মামলা করেন।

দিনাজপুর সদর থানার ওসি মো: ইফতেখার হোসেন বলেন, অভিযুক্ত তাজুলকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৩২৩, ৩২৪, ৩২৬ ও ৩০৩ ধারায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ঘটনায় কৃষি প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দীন সরকারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ৭ দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কান্ট্রি ট্যুরের যাত্রা বাতিল হওয়ায় তাদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন প্রক্টর।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি