ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৬ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

তীব্র গরমে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভরসা লাইব্রেরি-টিএসসি

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৫:২০, ৬ জুন ২০২৩ | আপডেট: ১৫:৫৩, ৬ জুন ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের কয়েকটি জেলার উপর দিয়ে। তন্মধ্যে দিনাজপুর একটি। গত কয়েকদিন ধরে এ জেলাটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ে চলেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার নাভিশ্বাস উঠেছে। এমন হাঁসফাঁস অবস্থায় বাড়তি ভোগান্তি হিসেবে যুক্ত হয়েছে তীব্র লোডশেডিং। এই ভোগান্তিতে পড়েছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা। 

তাদের অভিযোগ, পড়তে বসলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। রাতে ঠিকমতো ঘুমটাও হচ্ছেনা। ফলে মাথাব্যথা, অনিদ্রার মতো দুর্গতি সঙ্গী হচ্ছে তাদের।

দিনাজপুর শহরের গণেশতলা এলাকায় গত রোববার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে ৮ বার। কন্ট্রোল রুমের রেজিস্টার দেখে নেসকো ২ -এর সুইচ বোর্ড অ্যাটেনডেন্ট ফারুক আহমেদ জানান, রোববার বেলা ১টা থেকে ২টা ৩০ মিনিট, বিকেল ৫টা ৩৫ থেকে সন্ধ্যা ৭টা ৫, রাত ৯টা ৫ থেকে ১০টা ১০, ১২টা ৩০ থেকে ১টা ৩০, ভোর ৪টা ১৫ থেকে ৫টা ১৫, ৬টা ২৫ থেকে ৬টা ৫৫, সকাল ৮টা ৩০ থেকে ১০টা ৫৫ এবং সর্বশেষ বেলা ১টা ১০ থেকে ২টা ১০ মিনিট—এই সময়গুলোতে লোডশেডিং ছিল। 

হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে ১০ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। 

নেসকো-১’র নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুর রহমান জানান, ডিভিশন-১ এ বিদ্যুতের চাহিদা ১৯ মেগাওয়াট। গত ২৪ ঘণ্টায় সরবরাহ পেয়েছেন ১২ মেগাওয়াট। লোডশেডিং দিতে হয়েছে ৭ ঘণ্টা। অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জানায়, ৭৯টি ফিডারে তাদের বিদ্যুতের চাহিদা ১১০ মেগাওয়াট। সেখানে দিনে সরবরাহ পেয়েছে ৬০-৬৫ মেগাওয়াট এবং রাতে ৭০-৭৫ মেগাওয়াট। 

এমন বাস্তবতায় ক্যাম্পাস সংলগ্ন মেসগুলো ধুকছে চরম বিদ্যুৎ বিভ্রাটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী সুমন বলেন, ‘মেসে বিদ্যুৎ খুব অল্প সময় থাকে। পড়াশোনা করতে খুব অসুবিধা হয়। তাই দিনে লাইব্রেরিতে এবং রাতে লাইব্রেরি বন্ধ হলে টিএসসিতে যাই। এখন টিএসসিতেও আর আগের মত যায়গা পাওয়া যায় না। চেয়ার ফাঁকা থাকেনা।’

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী ফাঁকা চেয়ার খুঁজছেন। এসি ও নন-এসিতে গেট খোলার ৫-৭ মিনিটের মধ্যে সব চেয়ার ভরে যায়।

এদিকে, গত রাত সাড়ে এগারোটায় টিএসসিতে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা বই নিয়ে টেবিলে বসে আছেন। কেউ প্র‍্যাক্টিকাল খাতা সারছে কেউ ল্যাপটপে এসাইনমেন্ট করছে। কথা হয় এমন ক'জন শিক্ষার্থীদের সাথে। তারা বলেন, 'মেসে বিদ্যুৎ থাকেনা বললেই চলে। পড়তে বসলেই চলে যায় বিদ্যুৎ। তাই যতটুকু পারছি আমরা এখানেই বন্ধুরা মিলে পড়াশোনা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য লাইব্রেরি আর টিএসসির সিটসংখ্যা অপ্রতুল।’

শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি ও টিএসসির দুটি তলায় ক্লাস ও ব্যাংক হওয়ায় স্থান সংকুলান হয়না শিক্ষার্থীদের। তাই অনেকে দাঁড়িয়ে থেকে যায়গা না পেয়ে চলে যান বলে জানান তারা।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা শিক্ষার্থীরা এই সমস্যার বাহিরে থাকছে বলে জানান তারা। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ থাকছে  বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি আবাসিক হলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ বলেন, “দশতলা ভবন উদ্বোধন হলে সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্টুডেন্ট গেদারিং পয়েন্ট’ থাকছে। এতে অতিরিক্ত চাপ কমে আসবে। আর টিএসসিতে পরবর্তীতে অ্যাসেসমেন্ট করে আসবাবপত্র সংযোজন করা হবে। তখন আর সমস্যা হবেনা।”

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি