ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৬ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বান্ধবী উত্যক্তে জাবির দুই হলে সংঘর্ষ, আহত ২০

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৬:০৬, ১৫ জুলাই ২০২৩ | আপডেট: ১০:২৯, ১৬ জুলাই ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

বান্ধবীকে উত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই হলের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (১৪ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে দুই হলের মধ্যবর্তী রবীন্দ্র চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী ইট-পাটকেল ছুড়াছুঁড়ি হয়।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের রবি, শাফায়াত, নিরব এবং রফিক-জব্বার হলের সাকিব, ইশতিয়াক, নিশাত, জাহিদ। এছাড়া বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

এদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা গুরুতর  বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে জানা গেছে।

জানা যায়, গত ১২ জুলাই রাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থী ও ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মহি উদ্দিন মিরাজ তার বান্ধবীকে নিয়ে নতুন কলা ভবনের নিচের ভেন্ডিং মেশিন থেকে পানীয় (জুস) ক্রয় করতে যান। এ সময় রফিক-জব্বার হলের শিক্ষার্থী ও প্রথম বর্ষের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র রাফিসহ তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন মিরাজের বান্ধবীকে উত্যক্ত করেন। 

পরে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাফিকে রবীন্দ্র চত্বরে পেয়ে মিরাজ ও তার বন্ধুরা জেরা করেন। এসময় রাফির সাথে থাকা তার হলের বন্ধুরা তাকে বাঁচাতে পাল্টা তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার জেরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ঘন্টাব্যাপী ইট-পাটকেল ছুড়াছুঁড়ি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় রফিক-জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা উচ্চ শব্দের তিনটি পটকা ফোটায়। এক পর্যায়ে ভোর সাড়ে চারটার দিকে উভয় হলের শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যায়। 

সংঘর্ষ চলাকালীন উভয় হলের শিক্ষার্থীদেরকে লোহার পাইপ, ক্রিকেটের স্ট্যাম্প ও ব্যাট নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া করতে দেখা যায়। এছাড়া অনেক শিক্ষার্থীকে হেলমেট পরিহিত অবস্থায় পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। তবে অন্ধকার ও স্ট্রিট ল্যাম্পগুলো বন্ধ থাকায় তাদের কারো পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। 

সংঘর্ষ শেষে দুই হলের প্রবেশ পথগুলোতে স্ট্যাম্প, ব্যাট ও লোহার পাইপ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এ ঘটনায় ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা আবু জাফর মো. সালেহ। তিনি বলেন, কয়েক দফায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে মেডিকেলে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর।  কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শনিবার (১৫ জুলাই) ভোরে উভয় হলের দায়িত্বরত শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা শাখার কয়েকজন সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তাদের কথা শুনেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। অন্য জায়গার ঘটনা হলে টেনে আনায় এত বড় ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনার নিন্দা জানাই। যারা ছাত্রসুলভ আচরণ করছে না তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিচার হওয়া উচিত।’

এ বিষয়ে উপস্থিত সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক মো. রনি হোসাইন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। প্রাথমিকভাবে একটা প্রতিবেদন জমা দেব। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং প্রাথমিক প্রতিবেদনের সাপেক্ষে ডিসিপ্লিনারি বোর্ড থেকে অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি