ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

তিন অনিয়মের দায় উপাচার্যের উপর চাপালেন কুবি ট্রেজারার

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:২০, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষকদের তোপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচিত তিন অনিয়মে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনকে দোষারোপ করলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: আসাদুজ্জামান। 

সম্প্রতি ‘সার্ভিস রুলস, একাডেমিক রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন’ (পরীক্ষা, ছুটি এবং আপগ্রেডেশন বিধি) শিরোনামে একটি প্রশিক্ষণের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি)। এতে রিসোর্স পারসন হিসেবে ছিলেন কোষাধ্যক্ষ। 

এসময় শিক্ষকগণ কোষাধ্যক্ষের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচিত বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষকদের প্রাপ্ত ভাতা থেকে কোন প্রকার নীতিমালা ছাড়াই ভাইস চ্যান্সেলরের নামে বৃত্তি প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থে গেস্ট হাউজ রাখা হলেও শিক্ষকদের বঞ্চনায় ডুবিয়ে সেটি উপাচার্যের দখলের কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-২০০৬ ও ইউজিসির আইন অমান্য করে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতিতে বৈষম্য সৃষ্টির পাশাপাশি সঠিক নিয়মে আপগ্রেডেশন না দেওয়াসহ গুরুতর বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিক্ষকরা। 

পরে এসব অনিয়মের দায় উপাচার্যের উপর চাপান কোষাধ্যক্ষ।

এবিষয়ে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা ট্রেজারারের কাছে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর পিএইচডি নথিভুক্তি, উপাচার্যের পছন্দের ব্যক্তিদের পদোন্নতি স্থায়ীকরণ এবং সকল শর্ত পূরণ হলেও ব্যক্তিগত আক্রোশে অন্য শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রদানে অযাচিত শর্তারোপের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি বিব্রতবোধ করেন। এসময় কোষাধ্যক্ষ বলেন, “এসব সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারি না। হায়ার অথরিটি আছে; বোর্ড আছে। উপাচার্য এ ব্যাপারে ভাল বলতে পারবেন।” 

এভাবে তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে উপাচার্যের উপর দায় চাপান। বস্তত এসব অনিয়মের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান জানান, ‘কোষাধ্যক্ষের কাছে জানতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিয়ম আছে কিন্তু এসব নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে কোন আইনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে? যোগ্যতা থাকার পরও কেন প্রমোশন আটকিয়ে দেওয়া হচ্ছে? এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ খরচে গেস্ট হাউজ রাখা হয়েছে, কিন্তু শিক্ষকদের বঞ্চনায় ডুবিয়ে উপাচার্য একাই সেটি কিভাবে দখল করতে পারেন? যে পদ্ধতিতে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে সেটার খাত নিয়েও কোষাধ্যক্ষকে প্রশ্ন করলে তিনি সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তিনি সম্পূর্ণ দায়ভার উপাচার্যকে চাপিয়ে দেন। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কি উপাচার্য একাই সকল দুর্নীতির মূল হোতা?’

এদিকে শিক্ষকদের তোপের মুখে উপাচার্যের উপর দায় চাপানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: আসাদুজ্জামান বলেন, ‘উপাচার্যের উপর দায় চাপানোর বিষয়টি সম্পূর্ণ অসত্য। শিক্ষক নিয়োগ এবং আপগ্রেডেশনের বিষয়টি হায়ার বোর্ডের বিষয়। সেখানে উপাচার্যসহ অন্যান্য বোর্ড মেম্বাররা সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে কাছের লোকদের সুযোগ দেয়া কিংবা দূরের লোকদের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি সম্পূর্ণ ওনাদের। আমি সেখানে ছিলামও না, কি হয়েছে জানিও না।’

তবে কোষাধ্যক্ষের দায় চাপানোর বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের দপ্তরে গেলে তিনি অন্যান্য সাক্ষাৎ প্রার্থীদের সাথে কথা বললেও প্রতিবেদককে ব্যস্ততা দেখিয়ে প্রায় দুই ঘন্টা বসিয়ে রাখেন। উপাচার্যের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোন সাড়া দেননি। মুঠোফোনে ক্ষুধেবার্তা পাঠালেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি