ফের উত্তাল ঢাবি: পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ
প্রকাশিত : ১৪:৩৩, ৯ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৫৫, ৯ এপ্রিল ২০১৮
কোটা সংস্কার, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচার ও আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের সামনে ফের অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইনশৃংখলা বাহিনীর ফের সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ এসময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে টিয়ার শেল ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে পুলিশ লাঠিচার্য করে। পরে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাজু ভাস্কর্য থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগানে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হতে থাকে। এর আগে মিছিলটি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, কার্জন হলসহ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিলে দুপুর ২ টার দিকে পুলিশ টিয়ার সেল ছোড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের লাঠিচার্জে কয়েকজন আহত হন।
এসময় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ‘শাহবাগে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ছাত্রলীগের হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই,’ ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মেনে নাও,’ ‘কোটা দিয়ে কামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই,’ ‘১০% এর বেশি কোটা নয়’ এসব স্লোগান দিচ্ছেন।
এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান বলেন, দুপুর ১২ টার মধ্যে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি না দিলে এবং হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচার না করলে দাবানল জ্বলবে। বিকাল থেকে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়অরি দেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) বলতে চাই, যারা আন্দোলন করছেন, তারা আপনারই ভাই বা সন্তানের মতো। তারা কারও বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন না। তারা অধিকারের প্রশ্নে আন্দোলন করছেন। তাই আজ (সোমবার) দুপুরের মধ্যেই আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দেন। তা না হলে আন্দোলনে দাবানল সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।’
প্রসঙ্গত, রোববার (৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নেয় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। প্রায় ৪ ঘণ্টার শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা । রাত ৮টার দিকে আন্দোলনকারীদের হামলা চালায় পুলিশ। পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের কারণে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ থেকে সরে এসে চারুকলা অনুষদের সামনে অবস্থান নেয়। পরে তারা আন্দোলনকারীরা টিএসসির সামনে অবস্থান নেয়। দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ছাত্রলীগ। টিএসসি এলাকা পর্যন্ত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় পুলিশের টিয়ারশেল, কাদানে গ্যাস, জলকামান নিক্ষেপে আহত হন কমপক্ষে ২১৭জন।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে শত শত শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শাহবাগ ঘুরে ক্যাম্পাসে আসেন।
/ এআর /
আরও পড়ুন