‘দৃষ্টিহীন’ সিয়ামের ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ জয়
প্রকাশিত : ১৭:১২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
দৃষ্টিহীন রেদোয়ান হাবিব সিয়াম। স্বপ্ন ছিল তার অনেক বড়। তাই সব বাধাকে অতিক্রম করে ভর্তি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে গেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এসএসসি পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। দৃষ্টিহীন হওয়ায় তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রুপ দেওয়া যে কঠিন সেটি তিনি উপলব্ধি করেছেন গভীরভাবে। তবে প্রবল ইচ্ছা ও অফুরন্ত প্রাণশক্তি দিয়ে ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ জয় করেছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধীনে অনুষ্ঠিত ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৪১৫তম হয়েছেন।
বরিশালের এক অজোপাড়া গাঁয়ে তার জন্ম। বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নে তার বাড়ি। বাবা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস কৃষি গবেষণা অফিসে কর্মরত, মা রেহানা পারভীন গৃহিণী। জিপিএ-৫ নিয়ে কাশিপুর হাইস্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি এবং রহমতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন।
ঢাবির মেধা তালিকায় নাম থাকায় উচ্ছ্বসিত সিয়াম। স্বপ্ন পূরণের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে সিয়াম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। সেই হিসেবে স্বপ্ন দেখা। তবে আমার জন্য কাজটা অনেক কঠিন ছিল। কোন সাফল্য একজনের পক্ষে সম্ভব নয়। আব্বু-আম্মু, শিক্ষক ও বন্ধুদের সহযোগিতায় আমি সব প্রতিবন্ধকতা জয় করতে সক্ষম হয়েছি। প্রতিটি পদক্ষেপে সবাই পাশে ছিলেন। এজন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞতা।
কোন বিষয়ে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা, জানতে চাইলে কৃতী এই শিক্ষার্থী বলেন, আমার প্রথম পছন্দ লোক প্রশাসন তারপরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা ইতিহাস। এখনো বিষয় পছন্দ ফরম পূরণ করিনি।
ভবিষ্যতে কি হওয়ার স্বপ্ন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বড় হয়ে কি হবো এটার চেয়ে আদর্শ নাগরিক হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
সিয়ামের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, আমি সত্যিই গর্বিত একজন বাবা। এর চেয়ে ভালো মুহূর্ত আর হতে পারে না।
সিয়ামকে উৎসাহ দিয়েছেন শিক্ষক জোবায়ের আহমেদ। তিনি বলেন, আমি জানি সিয়াম অনেক ভালো করবে। চোখে দেখতে না পেলেও গভীর অন্তর্দৃষ্টি আর অফুরন্ত প্রাণশক্তি সিয়ামকে নিয়ে যাবে অনেক দূর। তার বেসিক ভালো হওয়ায় ক্লাসের প্রথম থেকে উৎসাহ দিয়েছি। ক্লাসে কোন প্রশ্ন করলে কেউ না পারলে সে পারতো।
এসি
আরও পড়ুন