ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

জাবি উপচার্যের পদত্যাগ দাবি আ.লীগপন্থী শিক্ষকদের

জাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ২২:৪২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা থেকে দুই কোটি টাকা ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করার অভিযোগ তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’।

রোববার দুপুর ১টায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুরাদ চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সুদিপ্ত দে’র সঞ্চালনায় সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, উপাচার্য কোন তদন্তের দিকে না গিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। তিনি একবার বললেন শোভন-রাব্বানী ৪-৬% চাঁদা দাবি করেছেন। আবার সাংবাদিকওে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, তাদের সাথে টাকার বিষয়ে কোন কথাই হয়নি। তার এরকম মিথ্যাচার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুন্ন করছে। 

এসময় বক্তারা আরও বলেন, ছাত্রলীগ আপনার কাছে টাকা চেয়েছে এই খবর কেন এত দিন প্রকাশ করেন নাই? আমরা যখন আমাদের ন্যায্য দাবির জন্য আন্দোলন করি, তখন আপনি আমাদের নামে মামলা করেন। আপনাকে বহিরাগত কেউ টাকার জন্য চাপ দিলো তবু আপনি থানায় কোন অভিযোগ করেননি। এতে বুঝা যায়, আপনি নিজেও একজন দুর্নীতিবাজ। তাই আমরা এই দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

প্রসঙ্গত, উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে টাকা দেয়ার অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে আগামী বুধবার পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই এর আগে আন্দোলনকারীদের কোন কর্মসূচি পালনের কথা না থাকলেও, ‘উপাচার্য উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ থেকে শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছেন’ শোভন-রাব্বানীর এমন বক্তব্যের পরে উপাচার্য পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এ বক্তব্যকে মিথ্য বলে দাবি করায় গতকাল ফের মাঠে নামে আন্দোলনকারীরা।

এদিকে ছাত্রলীগের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসালমের অর্থ কেলেঙ্কারি ঘটনায় উপাচার্যকে ‘অর্থলোলুপ’ আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’।

এক বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, উপাচার্য ও তার পরিবারের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে ‘অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে’র টাকা ভাগাভাগির সংবাদ এখন সারা দেশের সবচেয়ে আলোচিত সংবাদ। উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা লুটপাটের ঘটনায় দেশের প্রথম নারী উপাচার্যের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অনেকের মনে কিঞ্চিৎ সংশয় থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে সদ্য বিদায়ী ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ‘খোলা চিঠি’ নিশ্চিত বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। এ অবস্থায় দুর্নীতিগ্রস্ত এই উপাচার্যের আর স্বপদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই।

তারা আরও বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনের যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয়েছে। উপাচার্য ও তার পরিবারের দুর্নীতির নানা খবর কারোরই অজানা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অসম্মান করা, হেয় করে রুচিবহির্ভূত ও কা-জ্ঞানহীন মন্তব্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডিস ক্লাবের সভানেত্রী হিসেবে উপাচার্যের স্বামীর দায়িত্ব পালন, লেডিস ক্লাবের অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজে নীতি ভঙ্গ করে অর্থ লুটপাট ইত্যাদি সংবাদ জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের খোলা চিঠি উপাচার্যেও মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে যা জানতে পেরেছি তাতে প্রমাণিত হয় অধ্যাপক ফারজানা দুর্নীতির সাথে জড়িত।

এদিকে, উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে দাবি করা হয় উপাচার্য ‘অর্থলোলুপ’ নন বরং তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

আরকে/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি