জাবি প্রকল্পের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ফোনালাপ ফাঁস
প্রকাশিত : ২৩:১১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন মহাপরিকল্পনার নির্মাণ কাজের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্যসাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং জাবি ছাত্রলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের ফোনালাপকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, উপাচার্যকে জড়িয়ে রোববার বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে ফোনালাপ প্রচারিত-প্রকাশিত হয়েছে তা অসত্য এবং উদ্দেশ্যমূলক। উপাচার্যের সঙ্গে টাকা ভাগের কোনো আলাপ হয়নি। তিনি কাউকেই অর্থ প্রদান করেননি। গোলাম রাব্বানী উপাচার্যকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই ফোনালাপের গল্প তৈরি করেছেন। এ ধরনের পরিকল্পিত মিথ্যা গল্পের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে ফাঁসকৃত ফোনালাপে রাব্বানীর সাথে কথা বলা জাবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন কে কত টাকা পাবে তা উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম তার বাসভবনে বৈঠক করে ঠিক করে দিয়েছেন। আরেক নেতা সহসভাপতি নিয়ামুল হক তাজও একই দাবি করেছেন। তারা দু’জনেই দাবি করেন শাখা সভাপতি-সেক্রেটারির সাথে তারা নিজেরাও সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এবং টাকার ভাগও পেয়েছেন।
সাদ্দাম বলেন, পাল্টাপাল্টি অভিযোগের চেয়ে বরং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি চায় প্রশাসনের সাথে সে সময় যে (মুঠোফোনে) কনভার্সেশন হয়েছে সেটা বের করবে, আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব, সেটা বের হলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে দুর্নীতি ছিল নাকি ষড়যন্ত্র ছিল। ৯ তারিখের (আগস্ট) আগে পরে আমার এবং আমার বন্ধু তাজের সাথে ভিসির ছেলের সাথে ফোনের কনভার্সেশনটা বের করলে আর কোন প্রশ্ন বা কোন কিছু বলার অবকাশ থাকবেনা।
সাদ্দাম আরও বলেন, ভিসি ম্যাম ও তার পরিবারের সঙ্গে আমাদের আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনি আমাদেরকে এই আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন। আমরা তো কোন চাঁদাবাজি করিনি। বরং যখন শিডিউল ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠে আমি তাজ শামিম গিয়ে সকলকে শিডিউল কিনতে ও জমা দেয়ার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম।
নিয়ামুল হক তাজ বলেন, আমরা (তাজ-সাদ্দাম গ্রুপ) পেয়েছি ২৫ লাখ। সভাপতি কত পেয়েছে সেক্রেটারি কত পেয়েছে সেটা আমরা জানিনা। বেশিও পেতে পারে। আমাদেরকে বলা হয়েছে (৯ আগস্টের মিটিংয়ে) তোমরা ২৫ নিবা, ওর ৫০ (সভাপতি জুয়েল রানার), ও ২৫ (সেক্রেটারি চঞ্চল) নিবে।
তবে শাখা সভাপতি জুয়েল রানা ৯ আগস্টের মিটিংয়ের কথা স্বীকার করলেও সে মিটিংয়ে টাকা বণ্টন বা টাকা পাওয়ার বিষয়টি শুরু থেকে অস্বীকার করে যাচ্ছেন। এটি একটি মিথ্যা গল্প বলে দাবি তার।
এদিকে গোলাম রাব্বানীর সাথে শাখা ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসাইনের ফোনালাপ ফাঁসের পর ক্যাম্পাসে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। নতুন করে অস্বস্তিতে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের দাবির ব্যাপারে আরও অনড় অবস্থানে যাবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আগামী বুধবার অভিযোগের তদন্তের দাবি বিষয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে প্রশাসনের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
আরকে/
আরও পড়ুন