ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আলোর স্বল্পতায় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ববি শিক্ষার্থীরা

ওবায়দুর রহমান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত : ১১:১৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

সন্ধ্যার পর পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক, প্রবেশের রাস্তা, মুক্ত মঞ্চ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ক্যাফেটেরিয়া ভবন, লাইব্রেরি ভবন এবং তিন আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। এতে রাতে চলাচলে নিরাপত্তার ঝুঁকিসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ও আশপাশের এলাকার শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে ঝোপঝাড়, পোকামাকড়, আঁকাবাঁকা রাস্তা এবং উঁচুনিচু গর্তের কারণে প্রতিনিয়ত ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। ক্যাম্পাসে পোকামাকড় ও সাপের উপদ্রব দেখা দেওয়ায় আরও বেশি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে ক্যাম্পাস থেকে একাধিকবার লাইট চুরি হওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের প্রবেশপথ থেকে মুক্ত মঞ্চ, মুক্ত মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, শেখ হাসিনা হল থেকে শেরে এ বাংলা হলের রাস্তা এবং লাইব্রেরি ভবন পর্যন্ত যাতায়াতের পথে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। এতে বিশেষ করে ক্যাম্পাসে যাতায়াতে মেয়ে শিক্ষার্থীরা অধিক নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী যাদবময় ঘোষ বলেন, ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় আমরা ভয়ে ভয়ে হাটি। পোকামাকড়, সাপের উপদ্রব দেখা দিচ্ছে, এতে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। প্রশাসনের উচিৎ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে শাম্মী বলেন, ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে ঝোপঝাড় আছে। মোবাইলের টর্চ জালিয়ে চলতে হয়, এতে খুব অসুবিধা হয়।

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা যারা টিউশনি করাই, রাতে হলে ফিরতে আমাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। একজন মেয়ে হিসেবে আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তিনি আরও বলেন, মুক্ত মঞ্চের লাইট সময় মতো অন করা হয় না। অনেক সময় ফোনে চার্জ থাকে না। একটা মেয়ে যে ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে আসবে সেই অপশনটাও থাকে না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মুরশিদ আবেদিন বলেন, আমারতো কিছু করার নেই। লাইট দুইবার চুরি হলো, সিসি ক্যামেরায় দেখা গেল কিন্তু আমাদের প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। এখন প্রশাসন থেকে উদ্যোগ না নিলে কিছুই করার নেই। তিনি আরও বলেন, ওখানে প্রায় ৪০ টার মত সোলার লাইট ছিল। সবগুলোরই ব্যাটারি চুরি হয়ে গেছে। থানায় এজাহারও দেওয়া হয়েছে কিন্তু প্রশাসন থেকে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদক্ষেপ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান  বলেন, আমরাতো অনেকগুলো লাইট লাগিয়েছি যা এখনও আছে। লাইটের বিষয়টা প্রজেক্টের আন্ডারে। ওদেরকে আমরা অনেকবার বলেছি, চিঠি দিয়েছি। ইইডি (এডুকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট) কাজটা দেখাশোনা করে, যার ফলে এখানে আমাদের কোনও কন্ট্রোল নেই, আমাদের পক্ষ থেকে যেটুকু করার সেটা আমরা করেছি।

প্রকল্পের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হস্তক্ষেপ বা প্রেশারাইজ করতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হস্তক্ষেপ না, অনুরোধ করতে পারে এবং আমরা সেটা বারবার করেছি।

মেয়ে শিক্ষার্থীরা বেশি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে আছে, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিকল্প ব্যবস্থা নিতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা হলের ছাত্রীদের সঙ্গে কয়েকবার মিটিং করেছি, সমস্যার কথা শুনেছি। আমাদের যতটুকু করার আমরা করেছি। এখন ইইডি প্রজেক্টের আন্ডারের কাজে আমরা সেভাবে কর্তৃত্ব পাচ্ছি না।

লাইটের ব্যাটারি চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যা, একবার চুরি হওয়ার পর আমরা বসিয়েছি, এরপর আবারও চুরি হয়েছে।

বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, এখানে কি পর্যাপ্ত সিকিউরিটির ব্যবস্থা নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিকিউরিটি আছে, তারপরও ঘটনা ঘটেছে সেজন্য আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, সেই কমিটি কাজ করছে।


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি