ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

আবরার হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

ববি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ২২:২৬, ৭ অক্টোবর ২০১৯

ফেসবুকে ভারত বিরোধী স্ট্যাটাস দেয়া বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন ও মিছিলে নেতৃত্ব দানকারী মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান তমাল বলেন, বিচার বর্হিভূত হত‍্যাকাণ্ডের কোন বিচার না হওয়ায় এই হত্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবরারের মতো আর কত মেধাবীকে আমরা হারাব। আমরা যদি এর প্রতিবাদ না করি তাহলে তার মত আমরাও একদিন হারিয়ে যাব। আমরা আর কোন মায়ের বুক খালি হতে দিতে চাই না।

জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির কো-অর্ডিনেটর হাফিজুর রহমান বলেন , আবরারকে হত্যা করা মানে বাক স্বাধীনতা হত্যা করা, এটা মানবাধিকার বহির্ভূত কাজ। 

জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক খাজা আহম্মেদ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্ত কথা বলার জন্য তাকে হত্যা করা হবে সেটা মেনে নিতে পারি না। আমরা ক্যাম্পাস থেকে কি পেলাম? আমরা পেলাম একজন দেশপ্রেমিকের লাশ! আমরা পেলাম একজন দেশপ্রেমিকের মা-বাবা, পাড়া প্রতিবেশীর বুকফাটা আর্তনাদের শব্দ! আমরা পেলাম একটি পরাধীন সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের ফ্লেভার! আমরা পেলাম আবরার তথা একটি জাতির স্বপ্ন ভঙ্গের নির্মম বাস্তবতা! আমরা পেলাম আবরার পরিবারের আকাশ-মাটি এক করা চিৎকারের শব্দে আকাশ ঘন হয়ে আসার নিষ্ঠুর রূপ!  

তিনি আরও বলেন, আবরার হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার যদি আমরা আদায় করতে না পারি তবে আবরারের আত্মা, আবরারের বাবা-মায়ের অভিশাপ আমাদের কোনওদিন ক্ষমা করবে না।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভোলার রাস্তার মোড় প্রদক্ষিণ করে আবার প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। 

উল্লেখ্য, সোমবার ভোররাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শের-ই-বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদ নামে এক ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বুয়েটের ওই শিক্ষার্থী ভারতকে গ্যাস ও পানি দেওয়ার বিরোধিতা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার আট ঘন্টার মাথায় নিজ হলে নিহত হন।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের ৯ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এরা সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে আছেন। সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি দেখে শনাক্ত হওয়া ৯ জনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছি। সেটা পর্যালোচনা করছি।’

আটককৃতরা হলো- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদ, সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, উপদফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, উপসমাজ কল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপআইন সম্পাদক অমিত সাহা, ক্রীড়া সম্পাদক সেফায়েতুল ইসলাম জিওন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, গ্রন্থ ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্সি।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি