উত্তাল বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা অনিশ্চিত!
প্রকাশিত : ০৯:১৫, ১১ অক্টোবর ২০১৯
আবরার হত্যাকাণ্ডে উত্তাল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ১০ দফা দাবিতে আজও মাঠে নামার কথা রয়েছে শিক্ষার্থীদের। এতে আবরার হত্যার চারদিনে স্থবির পড়েছে বুয়েটের সকল কার্যক্রম।
আর এতে করেই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে। পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আগামী ১৪ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু চলমান আন্দোলনের ফলে তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে গত ৫ অক্টোবর পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলেও, পূজার কারণে তা পেছানো হয়েছে।
তবে সে জট খুলতে পারে আজকের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্যের বৈঠকের পর। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রথমে টালবাহনা করলেও, ভর্তি পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে আলোচনায় বসতে রাজি হন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
বুয়েট প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি পরীক্ষা ১৪ অক্টোবর হওয়ায় ইতিমধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ৭ অক্টোর (সোমবার) ভারত বিরোধী একটি স্ট্যাটাসকে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ।
এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরদিন থেকেই টানা আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। চারদিন থেকে আন্দোলন করে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান তারা।
এদিকে, আন্দোলন প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হলেও, সময় গড়িয়ে তা এখন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আন্দোলনে রুপ নিয়েছে। আবরার হত্যার বিচারসহ উপাচার্যের স্বেচ্ছারিতাসহ নানান অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষরা আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে। এতে তীব্র হয়ে ওঠে আন্দোলন। ফলে, স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে বুয়েট ক্যাম্পাস।
দাবি আদায়ে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে করে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। এ কারণেই আন্দোলনে বসতে সম্মত হয়েছেন ভিসি।
বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে জানান, পূর্ব নির্ধারিত সময়ে ভর্তি পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা এখন নির্ভর করছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্যের বৈঠকের উপর।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নিয়েছেন। এ বৈঠকের মধ্যে আশাকরি সকল সংকট নিরসন হবে। সঠিক সময়ে ভর্তি পরীক্ষা না হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিপাকে পড়তে হবে বলেও জানান মাসুদ।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জের ধরে আবরার ফাহাদকে রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরদিন সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন।
এর মধ্যে অন্যতম হোতা অমিত সাহা ও আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমানকে গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
আই/
আরও পড়ুন