জবির ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
প্রকাশিত : ০৮:৪০, ২০ অক্টোবর ২০১৯
রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ রোববার (২০ অক্টোবর)। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্ণাঢ্য উৎসবের আয়োজন করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০১৯ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন ভবনসমূহ আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। এদিন, সকাল ৯টা ১০মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হবে এবং ৯টা ১৫ মিনিটে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।
এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সুসজ্জিত শোভাযাত্রাটি উপাচার্য মহোদয়ের নেতৃত্বে শহীদ মিনার চত্বর হতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায় সাহেব বাজার মোড় ঘুরে, বাংলাবাজার ওভারব্রিজ পরিক্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় গেট দিয়ে প্রবেশ করে শেষ হবে। এ বছর ক্যাম্পাসের ৯টি জনপ্রিয় ব্যান্ডদল শিল্পীদের নিয়ে ঝমকালো কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে নাটকসহ আরও নানা কর্মসূচি ।
২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জাতীয় সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে শতবর্ষী জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করে সরকার। ২০০৯ সাল থেকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে ১৬০ বছরের পুরনো এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ১৮৫৮ সালে টাঙ্গাইলের বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী পুরান ঢাকায় একটি ব্রাক্ষ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ১৮৭২ সালে তার বাবার নামানুসারে এটির নাম ‘জগন্নাথ স্কুল’, ১৮৮৪ সালে ২য় শ্রেণির কলেজ, ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণির কলেজ ও ১৯৬৮ সালে সরকারি কলেজে পরিণত হয়।
সর্বশেষ ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর ৭ একর জায়গা নিয়ে জাতীয় সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫’ এর মাধ্যমে জগন্নাথ কলেজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা সংকুলান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা, নতুন একাডেমিক ভবন এবং গবেষণা কাজের সুবিধার্থে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় ২০০ একর জমিতে দুই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার।
বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদে ৩৬টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটে প্রায় ৬৫৭ জন শিক্ষক, ১৪ হাজার ২০৮ জন শিক্ষার্থী, ৬৬৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সাতটি শিক্ষাবর্ষে ২১৪ জন শিক্ষার্থী এমফিল ও ৮৭ জন পিএইচডি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বাংলাবাজারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রীহল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের’ নির্মাণ কাজ শেষের দিকে। ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তনে ১৮ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন।
প্রতিষ্ঠার এই ১৪ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্য ও সামনের দিকে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি পরিবর্তন করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান আহরণ এবং পাঠদান দুটি কাজই হয়ে থাকে। আমরা এটি করতে পেরেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন মেধাবীরা ভর্তি হচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও মেধাবী। শিক্ষকদের অনেকে বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন। ইউজিসি এবং সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষকরা বিভিন্ন গবেষণায় ব্যস্ত। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চারুকলা, সঙ্গীত, নাট্যকলার মতো বিভাগ চালুর মাধ্যমে সুকুমারবৃত্তির সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটেছে।
জবি উপাচার্য বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় সমস্যা ছিল একাডেমিক ও আবাসন সমস্যা। সরকার আমাদের কেরানীগঞ্জে ২০০ একর জমি দিয়েছে। এখানে মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ও আবাসনের ব্যবস্থা করা হলে এ বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হবে।
আরও পড়ুন