বাকৃবিতে ছাত্রলীগের মারধর, বিচার হয়নি একটিরও
প্রকাশিত : ১৯:১২, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯
বাকৃবি ছাত্রলীগ নেতারা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। এসব ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতি প্রশাসনের এমন সদয় মনোভাবে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গত আগস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জামাল হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতিকে সালাম না দেয়ায় গভীর রাত পর্যন্ত হলের কক্ষে আটকে রেখে মাকসুদুল হক ইমু নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়।
হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ্ হিশ শাফি, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শাওন এবং পাঠাগার সম্পাদক মো. রাহাত হোসেন রাত ১টার দিকে ওই শিক্ষার্থীকে হলের পূর্ব ব্লকের ৫ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। পরে সালাম না দেয়ার অভিযোগ এনে স্টাম্প দিয়ে পেটান তাকে। এই ঘটনায় পরের দিন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়াও ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় গত ২১ অক্টোবরে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কাছে একটি রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তবে এখনও পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে।
এছাড়াও গত বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের গেস্টরুমে ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও মারামারির সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবুল বাশার মিরাজকে মারধর করে হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা।
ওই ঘটনায় হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শংকর কুমার দাশ হাউজ টিউটরদের সমন্বয়ে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
গত মাসেই মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মো. আনসার আলী নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মো শাহ আলম।
এছাড়াও গত ২৭ ডিসেম্বর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সায়েম নামের এক ফার্মেসি কর্মচারীকে মারধর করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বললেও কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পায়। প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উপাচার্যের সম্মতির অপেক্ষায় আছে। দোষীদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এনএস/
আরও পড়ুন