বাকৃবির আবাসিক হলে বাড়ছে মাদকের আসর
প্রকাশিত : ১৪:৫৬, ২৫ জানুয়ারি ২০২০
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সম্প্রতি মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। ছাত্রদের আবাসিক ৯টি হলে প্রতিরাতেই বসছে মাদকের আসর। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে বহিরাগত এজেন্টরা। দাম কম ও সহজলভ্য হওয়ায় হাতের নাগালেই মিলছে গাঁজা, মদ আর ইয়াবা। মাদক হাতে পেয়ে নেশায় মেতে থাকছেন মাদকসেবী শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সম্প্রীতি মাদকের সাথে সম্পৃক্ততার কারণে বেশ কিছু শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও বহিরাগত এজেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। তবে অভিযাগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রকাশ্যে মাদকের আসর বসলেও কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না হল প্রশাসন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্যাম্পাসের পাশের বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া করে তৎপরতা চালাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এসব জায়গায় মাদক সেবন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে শেষ মোড়, ফসিলের মোড়, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের পিছনে, বিএফআরআই এলাকা, পাগলা বাজার, ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়, কেওয়াটখালী ও ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক প্রবেশ করে।
এভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নয়টি হলে ঢুকছে মাদকদ্রব্য। হলের ছাদ, নির্দিষ্ট কক্ষ, ক্যাম্পাসের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়, কর্মচারীদের ব্যাচেলর কোয়ার্টার ও খামারসহ বিভিন্ন স্থানে বসে এ আসর।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলের ৩০৮ নম্বর কক্ষে প্রায়ই মাদকের আসর বসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডেপুটি ট্রেজারার (বাজেট) প্রায়ই মাদক সেবন করতে ওই কক্ষে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয়ে প্রতিনিয়তই জুয়া ও মাদকের আসর বসে। এছাড়াও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শহীদ জামাল হোসেন, ফজলুল হক, শহীদ নাজমুল আহসান, শহীদ শামসুল হক, আশরাফুল হক, ঈশা খাঁ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলে প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন কক্ষে গাঁজা ও ইয়াবার আসর বসে।
তবে সপ্তাহের ছুটির দিনে এটি আরও জমে ওঠে। অনেক সময় বহিরাগতদের নিয়েও বসে মাদকের আসর। বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানা গেছে।
মাদকাসক্ত এসব শিক্ষার্থী রাতভর নেশা করার কারণে ঠিকভাবে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না। ফলে একই লেভেলে বারবার থাকতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জুয়া ও মাদকের আসর দিনদিন প্রকট হচ্ছে। মাদকের বিষয়টি আসলে সবারই জানা। তবুও প্রশাসনের কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ নেই।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল হক বলেন, ‘মাদকের বিষয়ে এক বিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক ঠেকাতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। মাদক নির্মূল করতে সকলের সহযোগিতা দরকার।’
এআই/
আরও পড়ুন