অমর একুশে বইমেলার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে
প্রকাশিত : ২০:০৫, ২৯ জানুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ২০:০৮, ২৯ জানুয়ারি ২০২০
আর মাত্র চারদিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব ‘অমর একুশে বইমেলা’। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে পুরোদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী’ নির্ধারণ করা হয়েছে।
মেলায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্নভাবে তার জীবন ও কর্মের প্রদর্শনী করা হবে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কারণে এবারের মেলা ১ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে।
এবারের মেলা আরও বিস্তৃত পরিসরে আয়োজন করা হচ্ছে। সাড়ে আট লাখ বর্গফুট জায়গা নিয়ে এবারের বই মেলা। মেলার অবকাঠামো এবং সাজ-সজ্জা পুরোটাই 'বঙ্গবন্ধুময়'। শিকড়,সংগ্রাম,মুক্তি এবং অর্জন এই চারভাগে সাজবে এবারের মেলা।
উল্লেখ্য, বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির আত্মত্যাগের স্মরণে প্রতিবছর মাসব্যাপী এই বইমেলার আয়োজন করা হয়।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। সে সময় পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ কয়েকজন সাহসী শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার প্রথম দিন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারও বিতরণ করা হবে।
বাংলা একাডেমি চত্বর এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার বর্ধিত অংশে স্টল প্রস্তুত ও অবকাঠামো নির্মাণে শ্রমিকদের ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
যে সকল প্রকাশনা সংস্থাগুলো বরাদ্দ পেয়েছে তারা ইতোমধ্যে স্টল নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। অন্যদিকে, রাজধানীর বাংলা বাজার এবং পল্টন এলাকার ছাপাখানায় এখন নতুন বই মুদ্রণ ও বাঁধাইয়ের শেষ মুহূর্তের কাজের ব্যস্ততা দেখা গেছে।
বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বলেন, মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমরা যথেষ্ট প্রস্তুত রয়েছি।’
‘মেলার সকল আনুষ্ঠানিকতা আমরা সফলভাবে শেষ করেছি। এবার আগে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যাতে প্রকাশকরা তাদের স্টলগুলো সঠিকভাবে সময়মত নির্মাণ করতে পারে। স্টলের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য মেলার স্থানও বাড়ানো হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
জালাল বলেন, এবারের মেলা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য উৎসর্গ করা হবে এবং মেলায় তার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্নভাবে তার জীবন ও কর্মের প্রদর্শনী করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এবার ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বেড়েছে। মোট ৫৫৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।ইউনিট হবে ৯০০টি।প্যাভিলিয়ন থাকবে ৩৪টি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় কবি শঙ্খ ঘোষ এবং মিশরীয় লেখক ও কবি মহসিন আল আরিশি সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলা শুরু হয়েছিল, তবে বাংলা একাডেমি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবছর বইমেলার আয়োজন করার জন্য ১৯৭৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরে এটি নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থ মেলা’ এবং ১৯৮৪ সালে সাড়ম্বরে বর্তমানের অমর একুশে গ্রন্থমেলার সূচনা হয়।
রবি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বইমেলা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
কেআই/আরকে
আরও পড়ুন