বশেমুরবিপ্রবিতে ১৫শ শিক্ষার্থীকে ‘ভোক্তা অধিকার’ প্রশিক্ষণ
প্রকাশিত : ২০:২৮, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ২০:১৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০
মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো প্রশিক্ষণমূলক অনুষ্ঠান ‘ভোক্তা অধিকার ও ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল-২০২০’।
শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের মুক্তমঞ্চে বর্ণাঢ্য এ ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়।
ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান ‘ই-ভ্যালি’র সহায়তায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস) ও এর যুব শাখা ‘কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ’ (সিওয়াইবি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান বাস্তবায়নে ছিল সিওয়াইবির বশেমুরবিপ্রবি শাখা। এতে ফুড পার্টনার হিসেবে ‘অলটাইম’ ও মিডিয়া পার্টনার ছিল দৈনিক বণিকবার্তা।
শাখা সিওয়াইবির সভাপতি ও অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক তারিক লিটুর সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো: শাহজাহান। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, সম্মানিত অতিথি হিসেবে শেয়ার এন্ড কেয়ার’র সিইও ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান চৌধুরী।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে সিসিএস এর নির্বাহী পরিচালক ও সিওয়াইবির কেন্দ্রীয় সভাপতি পলাশ মাহমুদ, সিওয়াইবির বশেমুরবিপ্রবি শাখার উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও মো. আবদুর রহমান, সিওয়াইবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সোহরাওয়ার্দী শুভ, যুগ্ম-সম্পাদক ইমরান শুভ্র, ডিএনসিআরপির গোপালগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক শামীম হাসান, মানিকগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল, রাজবাড়ী জেলার সহকারী পরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম, ফরিদপুর জেলার সহকারী পরিচালক মোঃ সোহেল শেখসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের ১ম পর্বে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন ন্যাশনাল ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম’র সভাপতি কে এম হাসান রিপন, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম এইচ এম মুবাশশির, বিডি জবস ডটকমের সিনিয়র ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী ফিরোজ, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি এর সিনিয়র ম্যানেজার (অপারেশন এন্ড আইআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন, আউটস্পোকেন’র প্রতিষ্ঠাতা আফজাল হোসাইন, ব্রাক ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা মেহেনাজ আক্তারসহ প্রমূখ।
প্রথম পর্বে ঢাকা থেকে আগত প্রশিক্ষকরা ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ এর ওপর বিস্তারিত ধারনা দেয়া, শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার বিষয়ে সিভি লিখন, ইংরেজি শিক্ষা, বিদেশে উচ্ছা শিক্ষা, চাকরির ও ভাইভার প্রস্তুতি এবং ই-কমার্সে ভোক্তার নিরাপত্তার কলাকৌশলসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: শাহজাহান বলেন, ‘খ্যাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে জনসচেতনা তৈরীতে সিওয়াইবির এই কাজকে আমি সাধুবাদ জানাই। আমাদের নতুন প্রজন্মকে সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ গড়ে দিতে নিজেদের সচেতন হবার বিকল্প নেই। আগামী দিনে শাখা সিওয়াইবির সার্বিক কর্মকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাশে থাকবে। আমি সিওয়াইবির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।’
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘ভোক্তা হিসেবে আমাদের সকল অধিকার বুঝে নিতে হবে। সমাজের সচেতন মানুষদের দলে যোগ দিতে হবে। নিজে ভাল মানুষ হতে হবে। নীতি-নৈতিকতা সম্মপন্ন বিবেকের অধিকারী হতে হবে সকলকে।’
পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘ক্যারিয়ার গঠনে শুধু চাকরি কেন্দ্রীক চিন্তা থেকে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে আসতে হবে। সৃজনশীল উদ্যোক্তা হতে হবে শিক্ষার্থীদের থেকে। নিজের অধিকার বাস্তবায়নে ও দেশে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে সকলকে একযোগে কাজ করতে আহ্বান করেন তিনি। একই সাথে গোপালগঞ্জ জেলাকে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত ও খ্যাদ্যে ভেজাল মুক্ত জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে বঙ্গবন্ধুর মত দ্বীপ্ত কণ্ঠে আওয়াজ তুলতে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বশেমুরবিপ্রবি ছাড়াও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিএল কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু কলেজ, হাজী লাল মিয়া সিটি কলেজ, বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজসহ প্রায় ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবি হিসেবে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর’ (বিএনসিসি) এর সুন্দরবন রেজিমেন্টের বশেমুরবিপ্রবির সদস্যরা, ক্যাম্পাসের রোভার স্কাউটের সদস্যরা, ফটোগ্রাফি সোসাইটি, ফিল্ম সোসাইটি, ভয়েস অব ৫৫ (অনলাইন রেডিও), প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিক সমিতি সার্বিক সহায়তা করে।
ফেস্টিভ্যাল শেষে অংশগ্রহণকারীদের ডিএনসিআরপি ও সিসিএসের পক্ষ থেকে যৌথ সনদ দেয়া হয়। এছাড়া সিওয়াইবির ২০ জন সক্রিয় সদস্য পান লিডারশিপ সনদ। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর ওপর অনুষ্ঠিত হয় কুইজ প্রতিযাগীতা। এতে তিনটি মোবাইল ফোনসহ মোট ১৮ জনকে পুরস্কার দেয়া হয়।
আরও পড়ুন