জবি বাঁধনের কমিটি নিয়ে ফের বিতর্ক
প্রকাশিত : ১৮:২৯, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাঁধন ইউনিটের ২০১৯-২০ কমিটির বিরুদ্ধে ফের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বাঁধন কর্মীদের পক্ষ থেকে সাবেক সভাপতি বাঁধন জবি ইউনিটের প্রধান শিক্ষক উপদেষ্টা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। বাঁধন জবি ইউনিটের সাবেক সভাপতি নিয়াজ শরীফ টুটুল বাঁধন কর্মীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ প্রদান করেন।
উক্ত অভিযোগে তিনি জানান, কার্যকারী কমিটি ২০২০ গঠনে ছাত্র উপদেষ্টারা তাদের ক্ষমতা বলে গঠনতন্ত্রের নিয়ম না মেনে নিজেদের ইচ্ছামত কমিটি গঠন করে। গঠনতন্ত্রের চতুর্থ অনুচ্ছেদের ২২ ধারায় উল্লেখ আছে যে, নতুন কমিটি গঠনে কার্যকারী পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জোনাল প্রতিনিধিসহ কার্যকারী পরিষদের সভায় মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে ইউনিট উপদেষ্টা পরিষদ হতে তাদের সম্মতির সাপেক্ষে চারজনকে নিয়ে মোট ৭ জন সদস্য বিশিষ্ট সাবজেক্ট কমিটি গঠন করতে হবে। সাবজেক্ট কমিটি নতুন ইউনিট কার্যকারী পরিষদ গঠন করে কার্যকারী পরিষদের সভায় প্রকাশ করবেন। কিন্তু কমিটি গঠনের সভায় ছাত্র উপদেষ্টা ৪ জন উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও ছাত্র উপদেষ্টা ছিলো ৪জনের বেশী। নতুন কমিটি সাধারণ সম্পাদক তাসনিম জান্নাতির সাথে ছাত্র উপদেষ্টা মীর মাহফুজুর রহমান এবং কোষাধ্যক্ষ জান্নাতুল ফেরদৌসি তমার সাথে ছাত্র উপদেষ্টা মো. আমিনুর রহমানের ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। এই দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা সাবজেক্ট কমিটিতে না থাকলেও তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কর্মীদের পদে নিয়ে আসেন। এজন্য সস্ক্রিয় কর্মীরা পদ থেকে বঞ্ছিত হয়। এছাড়াও নতুন কমিটির বর্তমান কমিটির মাসিক সভায় পাশের নিয়ম থাকলেও ছাত্র উপদেষ্টারা তা করতে দেননি। এমন অনিয়ম না করে গঠনতন্ত্রের নিয়ম মেনে কমিটি করার অনুরোধ করি কিন্তু তারা তা আমলে না নিয়ে আমাদের নামে নানা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের হেনেস্থা করছে তারা।
তিনি আরও জানান, বাঁধন জবি ইউনিট ২০০৬ সাল থেকে সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর হলেও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। কিছু ছাত্র উপদেষ্টাদের ব্যক্তিস্বার্থ অর্জনের জন্য নানা অনিয়ম করায় আমরা প্রতিনিয়ত সক্রিয় কর্মী এবং নিয়মিত ডোনার হারাচ্ছি। ২০২০ কার্যকরি পরিষদ গঠনে অনিয়মের জন্য এখন ব্লাড গ্রুপিং এবং অফিস খোলার জন্য সক্রিয় কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে অফিস বন্ধ থাকে প্রায় সময়ই এবং ব্লাড গ্রুপিংয়েও হচ্ছে ভুল। ছাত্রউপদেষ্টাদের এমন কাজ দূর করতে পারলে বাঁধন, জবি ইউনিট অনেক এগিয়ে যাবে।
বর্তমান জোনাল প্রতিনিধি আবদুল আওয়াল টিটু বলেন, আমি কমিটি ঘোষনার আগেই শিক্ষক উপদেষ্টা বরাবর অনিয়মের লিখিত অভিযোগ দেই এবং অফিসেও ২০১৯ কমিটির মিটিং এ নতুন কমিটি পাশের প্রশ্ন তুলি। কিন্তু তারা আমার কথা আমলে না নিয়ে কমিটি ঘোষণা করেন। আমার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তখনই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করলে আজকে বাঁধন, জবি ইউনিট এবং জবি ইউনিটের কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্থ হতো না। কর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ সৃস্টি হতো না। বর্তমানে বাঁধন জবি ইউনিটের অচল অবস্থা সৃস্টি হতো না। আমি ছাত্র উপদেষ্টাদেরও সবার সাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের অনুরোধ করলে, তারা তা করতে রাজি হননি।
বাঁধন, জবি ইউনিটের একাধিক কর্মী অভিযোগ করে জানান যে, বাঁধনের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেও মূল্যায়ন পাইনা আমরা। যার একমাত্র কারণ হচ্ছে ব্যক্তিগত সম্পর্ক। ছাত্র উপদেষ্টা আকতার হোসেন এবং সাবজেক্ট কমিটির সদস্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল নাসির এর সহয়তায় সাবজেক্ট কমিটির বাহিরের দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কিছু মানুষকে পদ দিয়েছে। যা বাঁধনের মত একটি সামাজিক সংগঠনের জন্য লজ্জাজনক বিষয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাঁধন সেন্ট্রাল ইউনিট এর সধারণ সম্পাদক জোনাহিদ চকদার বলেন, বাঁধন জবি ইউনিটের কার্যনিবাহী পরিষদ কমিটি-২০২০ এর বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। কারণ বাঁধন একটি সামাজিক সংগঠন এখানে এগুলা হয় না। কিছুদিন আগেই আমরা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছি এবং এই বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। তিনি আরো জানান যে, আমরা ইতিমধ্যে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কিছুদিনের মধ্যেই তারা তাদের রিপোর্ট জমা দিবেন। আমরা উক্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে উক্ত অভিযোগের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
কেআই/আরকে
আরও পড়ুন