সময় হয়েছে রুখে দাঁড়ানোর : পপি
প্রকাশিত : ১০:০৭, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। ঢাকাই চলচ্চিত্রের দাপুটে অভিনেত্রী। অনেক হিট-সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়ে দর্শকদের কাছে আলাদা একটি জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী। পর্দায় বিভিন্ন রূপে দর্শকদের সামনে হাজিরও হয়েছেন তিনি। গত ১০ সেপ্টেম্বর ছিল তার জন্মদিন। তবে ঘটা করে এটি উদযাপন না করলেও ভক্তদের শুভেচ্ছায় ভেসেছেন সারাদিন।
এদিকে বয়সের কোঠা লম্বা হলেও বিয়ের কোন নাম নিচ্ছেন না অভিনেত্রী। তবে বেশ কয়েকবার তাকে জড়িয়ে চিত্রনায়ক শাকিল খান ও জায়েদ খানের নাম উঠে আসলেও পরিনতি দেখা যায়নি কারও সঙ্গে। তবে সবশেষ জায়েদ খানের সঙ্গে সম্পর্কের রঙ মাখলেও তা এখন আকাশ পাতাল দূরত্ব। বর্তমানে এ চিত্রনায়কের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন পপি।
বর্তমানের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ তারকা। তিনি বলেন, শিল্পীরা একটি বিষয়ই চায়। সেটা হলো সম্মান। কিন্তু সমিতির সাধারণ সম্পাদকের (জায়েদ খান) মাধ্যমে তাদেরকে হয়রানি, অপমান করা হচ্ছে। অনেক সিনিয়র শিল্পীর সদস্যপদ কেড়ে নেয়া হয়েছে। শিল্পীর কাছ থেকে যদি তার পরিচয় কেড়ে নেয়া হয় তার আর কি থাকে? শিল্পীরাই তাকে সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছে, আর তিনি শিল্পীদেরকেই দিনের পর দিন অপমান করে যাচ্ছেন।
পপি বলেন, ‘লক্ষ্য করলে দেখবেন, একজন মানুষের বিপক্ষে এতগুলো মানুষের অবস্থান চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বিরল। এরকম আমাদের ফিল্মে কখনও ঘটেনি। মানুষ তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে রাজপথে নেমেছে, আন্দোলন করেছে। ১৮টি সংগঠন তাকে বয়কট করেছে। মানুষ এতদিন আত্মসম্মানের ভয়ে চুপ ছিলো। আমি দীর্ঘ সময় চলচ্চিত্রে অতিবাহিত করেছি। সব সময় চলচ্চিত্রে সবার সঙ্গে একটা পারিবারিক সম্পর্ক ছিলো। শিল্পীদের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব আগে কখনও দেখিনি। এখন সবাই ঐক্যবদ্ধ। চলচ্চিত্রের শিল্পীরা কাজ চায়, ত্রাণ নয়। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কোনো কাজ করা হচ্ছে না। বরং যারা তাকে ভোট দিয়ে সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছেন, তাদেরকে অপমান করা হচ্ছে দিনের পর দিন।
অভিনেত্রী বলেন, ‘শিল্পীরা কখনও দুস্থ হতে পারে না। তাদের দুস্থ বলার অধিকার দেয়া হয়নি কাউকে। সুতরাং যারা শিল্পীদের খাদ্য কিংবা অন্য কিছু দিয়ে সাহায্য করে সেলফি তুলছেন এবং সেটা ফেসবুকে প্রকাশ করছেন তার মাধ্যমে শিল্পীদের অপমান করা হচ্ছে। আমাদের অনেক সিনিয়র ও সমসাময়িক শিল্পীরাও মানুষকে সহযোগীতা করেন। কিন্তু সেটা দেখানোর জন্য প্রচারণা করেন না। তাছাড়া এফডিসিতে শিল্পীদের বার বার অপমান করা হচ্ছে। সিনিয়র অনেক শিল্পীর সদস্যপদ কেড়ে নেয়া হয়েছে। এখন সময় হয়েছে এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর।’
১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ ছায়াছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু এ নায়িকা। ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ তার প্রথম চলচ্চিত্র হলেও মুক্তি পাওয়া প্রথম চলচ্চিত্র হল, ‘কুলি’।
এরপর একে একে ১৯৯৮ সালে রিয়াজের বিপরীতে ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ১৯৯৯ সালে মান্নার বিপরীতে ‘কে আমার বাবা’ ও ‘লাল বাদশা’, ২০০২ সালে কমল সরকার পরিচালিত ‘ক্ষ্যাপা বাসু’ চলচ্চিত্রসমূহের মাধ্যমে দর্শক মনে জায়গা করে নেন তিনি। এ পর্যন্ত তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন পপি।
এ পর্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক চলচ্চিত্র অভিনয় করেছেন পপি। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে, ‘উজ্জ্বল কারাগার’, ‘রানি কুঠির বাকি ইতিহাস’, ‘বিদ্রোহী পদ্মা’, ‘কী জাদু করিলা’, ‘বস্তির রানি সুরাইয়া’, ‘দরিয়া পাড়ের দৌলতি’, ‘মেঘের কোলে রোদ’ চলচ্চিত্র উল্লেখযোগ্য।
এসএ/