ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

সংগ্রামী নারী ‘রেহানা মরিয়ম নূর’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২০, ৭ জুলাই ২০২১

বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আসর কান উৎসব। এবার এই উৎসবের দিকে নজর বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের। কারণ উৎসবের অফিশিয়াল সিলেকশনে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা। ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে অফিশিয়াল সিলেকশনের আঁ সাতা রিগা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ সাদের সিনেমা ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।

আজ ৭ জুলাই কানের পালে দো ফেস্টিভাল ভবনের সাল দুবুসি প্রেক্ষাগৃহে বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ১৫ মিনিট) প্রথম প্রদর্শন হবে এ সিনেমা। এতে অংশ নেবেন বাংলাদেশি তারকা আজমেরী হক বাঁধন।

শুরুর দিকে সবাই শুনে আসছিলেন যে, মরিয়ম নামের এক মেডিকেল কলেজ শিক্ষকের একার সংগ্রাম নিয়ে সিনেমার কাহিনী! সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে সিনেমাটির ট্রেলার। যার মাধ্যমে এই সংগ্রামী নারীকে দেখতে পারছেন সবাই।

ট্রেলারের প্রায় পুরোটা জুড়েই মরিয়ম নামের সেই প্রতিবাদী নারীর অবয়ব। কলেজে একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হওয়ার পর পাল্টে যেতে থাকে শিক্ষক মরিয়মের মনোজগৎ। এরপর থেকে হেনস্তার শিকার সেই ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন এবং ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। ক্রমশ একরোখা হয়ে ওঠতে দেখা যায় মরিয়মকে।

অনড় মরিয়ম তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রীকে ন্যায় বিচার এনে দিতে পারবেন তো? সে প্রশ্নের উত্তর দিবে পুরো সিনেমা। মাত্র দেড় মিনিটের ট্রেলারে সেই সংগ্রামী নারীর ভূমিকায় দেখা গেছে বাঁধনকে। এই বাঁধনকে এরআগে এভাবে কেউ আবিষ্কার করেনি। মাত্র দেড় মিনিটের ট্রেলারেই বাঁধন বুঝিয়ে দিয়েছেন, সিনেমা অঙ্গনে তিনি কেমন প্রস্তুতি নিয়ে পা রেখেছেন।

মর্যাদাপূর্ণ কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৪তম আসরের পর্দা উঠছে মঙ্গলবার (৬ জুলাই)। আর উৎসব শুরুর পর দিনই দেখা যাবে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার কানের অফিশিয়াল সিলেকশন পাওয়া চলচ্চিত্র ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।

‘রেহানা মরিয়ম নূর’ স্থান করে নেয়ায় কান উৎসবের ‘আনসার্টেন রিগার্ড’ [ভিন্ন দৃষ্টিকোণ] বিভাগ নিয়ে এবার বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের আছে বাড়তি কৌতূহল। এই সিনেমা সহ এ বছর এই বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে মোট ১৫ দেশের ১৮টি সিনেমা।

এ বিভাগে বিচারকদের সভাপতি হিসেবে এবার থাকছেন ব্রিটিশ নির্মাতা অ্যান্দ্রেয়া আর্নল্ড। বিচারক দলে আরও থাকছেন মার্কিন নির্মাতা মাইকেল কোভিনো, ফরাসী অভিনেতা এলসা জিলবারস্টেইন। আর্জেন্টিনার নির্মাতা ড্যানিয়েল বারম্যান এবং আলজেরিয়ান নির্মাতা মউনিয়া মেডৌর।

এ নিয়ে নির্মাতা সাদ বলেন, ‘আমি মধ্যবিত্ত পরিবারে অনেক ভাই-বোনদের মধ্যে বড় হয়েছি। আমার চিন্তাভাবনায় তাদের সবার অনেক ইনফ্লুয়েন্স। বিশেষ করে আমার বড় তিন আপুর।’

তিনি বলেন, ‘রেহানাকে নিয়ে লিখতে শুরু করি সম্ভবত ওই রকম একটা জায়গা থেকেই। একটু একটু করে রেহানাকে নিয়ে প্রশ্ন করতে শুরু করি। ওর ভেতরের ক্ষোভ আর অবিশ্বাস নিয়ে ভাবি। ওর ভেতরের কমপ্লেক্সিটি এবং কনট্রাডিকটরি আচরণ বোঝার চেষ্টা করি। রেহানা কী চায় এবং কেন চায় এটা নিয়ে লিখতে লিখতে ক্রমশ আরও প্রশ্ন বের হয়ে আসতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ওই প্রশ্নগুলোই আমাকে ইন্সপায়ার করে ছবিটা করতে।’

প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করেই এই সিনেমার গল্প। সেখানে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক হিসেবে জটিল জীবনযাপন করেন। এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় রেহানা একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হন। এরপর থেকে তিনি এক ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। রেহানা ক্রমেই একরোখা হয়ে ওঠেন।

কিন্তু একই সময়ে তার ৬ বছর বয়সী মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ করা হয়। এমন অবস্থায় অনড় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যায়বিচারের খোঁজ করতে থাকেন।

কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশের প্রথম ছবি হিসেবে রেহানা মরিয়ম নূর আমন্ত্রিত হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে সাদ বলেন, ‘আমি খুশি এবং সম্মানিত। এই অ্যাচিভমেন্ট পুরোপুরি আমার টিমের। সবাই মিলে অমানুষিক কষ্ট করেছে আর বেস্ট এফোর্টটা দিয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ এই ব্রিলিয়ান্ট টিমটা এবং আমার খুবই সেনসিটিভ অ্যাক্টরদের কাছে। ওরা ছাড়া আমি কখনোই এতটুকু আসতে পারতাম না।’
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি