আমিরের ছবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ তসলিমা
প্রকাশিত : ১৩:১৭, ১৫ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ১৩:২০, ১৫ আগস্ট ২০২২
আমির খানের বহু প্রতীক্ষিত ও আলোচিত ছবি ‘লাল সিং চাড্ডা’ মুক্তি পেয়েছে শুক্রবার। ইতিমধ্যেই ছবি ঘিরে আলোচনায় মত্ত নানা মহল। কেউ এই ছবিকে মাস্টারপিস বলছেন, কেউ আবার ছবি দেখে তুলোধনা করছেন আমিরকে।
নেটিজেনদের একাংশ তো এই ছবিকে বয়কটের ডাকও দিয়েছেন। তবে ‘লাল সিং চাড্ডা’ দেখে আপ্লুত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। আমিরের এই ছবি এতটাই ভাল লেগেছে তাঁর, যে ফেসবুকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে লম্বা পোস্টও দিয়েছেন। তসলিমার কথায়, ‘লাল সিং চাড্ডা’ হলিউডের ফরেস্ট গাম্পের থেকেও ভাল!
তসলিমা তার এই পোস্টে লিখলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে ফরেস্ট গাম্প ছবিটা অনেকবার দেখা হয়েছে। ছবিটা ভালো লেগেছিল ফরেস্টের সরলতার জন্য। ফরেস্ট গাম্পের ভারতীয় অনুকরণ লাল সিং চাড্ডা দেখলাম। সত্যি বলতে, লাল সিং চাড্ডা ফরেস্ট গাম্পের চেয়ে আমার বেশি ভালো লেগেছে। কারণগুলোর মধ্যে আছে এক, লাল সিংয়ের সরলতা, দু্ই, সকল ধর্মের উর্ধে মানবতাকে তুলে ধরা, (তাছাড়া ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে বেশ সম্মান করা হয়েছে, লাল নিজে শিখ, কিন্তু তার একমাত্র বন্ধু হিন্দু, তার একমাত্র প্রেম খ্রিস্টান, যার জীবন তিনি বাঁচিয়েছিলেন সে মুসলিম।) তিন , ঐতিহাসিক যে ঘটনাগুলো দেখানো হয়েছে, সেগুলো এই উপমহেদেশেরই, সে কারণে রিলেট করতে পেরেছি বেশি।’
তসলিমা আরও লিখলেন, ‘যারা লাল সিং চাড্ডাকে বয়কট করছে, ‘তাদের জন্য দুঃখ হচ্ছে, ভালো একটি ছবি দেখার সুযোগকে নষ্ট করলো তারা। বয়কটের কারণে ছবিটি ব্যবসা সফল হয়নি। এতে কার লাভ হলো, লাভ কি আদৌ কারও হলো? কয়েক বছর আগে পদ্মাবতীর বিরুদ্ধেও করনি সেনারা উঠে পড়ে লেগেছিল। ছবিতে নাকি দেখানো হয়েছে আলাউদ্দিন খিলজির প্রেমে পড়েছে পদ্মাবতী। আমি ছবি দেখে তাজ্জব। মোটেও প্রেম নয়, বরং মুসলিম শাসক থেকে বাঁচার জন্য পদ্মাবতী এবং অন্যান্য রাজপুত মেয়ে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জাওহার বা স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেছে। এটিই তো চায় করনি সেনারা। ছবিটি দেখে করনি সেনারা পরে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছিল। দক্ষিণের ধুম ধাড়াক্কা সিনেমার জনপ্রিয়তার সামনে বলিউড আজকাল জবুথবু। এই সময় দল বেঁধে বলিউডের ছবিকে ফ্লপ করিয়ে যারা আনন্দ পাচ্ছে পাক, আমি একটি ভালো ছবি দেখে আনন্দ পেয়েছি। যত যাই বলি, আমাদের সবার আনন্দ এক রকম নয়। কেউ পাহাড়ে চড়ে আনন্দ পায়, কেউ ঘরে বসে থেকে আনন্দ পায়। কেউ জেগে থেকে আনন্দ পায়, কেউ আনন্দ পায় ঘুমিয়ে। কেউ কাউকে মেরে আনন্দ পায়, কেউ আবার কাউকে ভালোবেসে আনন্দ পায়।’
অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশের ‘সনাতন রক্ষক সেনা’ এই ছবিকে বয়কট করার ডাক দিয়েছে। এই গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কিছুতেই এই ছবি এদেশে দেখানো যাবে না। এই নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলেরও ডাক দিয়েছে এই গোষ্ঠী। ‘পিকে’ ছবির প্রসঙ্গ তুলে এই গোষ্ঠীর দাবি আমিরের ছবিতে দেবদেবীদের অসম্মানিত করা হয়। সেই কারণেই আমিরের সব ছবিকেই বয়কট করা উচিত। ‘লাল সিং চাড্ডা’ ছবির পরিচালক অদ্বৈত চন্দন বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে শামিল হয়েছে এই গোষ্ঠী।
এসি