বড় পর্দায় নিয়মিত হতে চান হিমি
প্রকাশিত : ১৬:২৪, ১০ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ১৯:৫৩, ১০ অক্টোবর ২০১৭
সময়টা ভালোই যাচ্ছে হিমির। অভিনয়ে ব্যস্ততা বাড়ছে। ফ্যানদের সংখ্যাও বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত মডেল তারকা ও অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। সদ্য অনুষ্ঠিত ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া হিমি কথা বলেছেন একুশে টেলিভিশনের সঙ্গে। তাকে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন- সোহাগ আশরাফ।
২০১৪ সালে একটি রিয়েলিটি শোতে চ্যাম্পিয়ন খেতাব অর্জন করেছিলেন হিমি। এরপর ছোটপর্দায় অভিনয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। সেই পথ দিনে দিনে আরও মজবুত হচ্ছে এই তারকার। সবার মত হিমিও মনে মনে স্বপ্ন দেখেছিলেন বড় পর্দায় কাজ করার। মনের ইচ্ছে পুরণও হয়েছে তার। তাও আবার যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রে। রেশমী মিত্রের নির্দেশনায় ‘হঠাৎ দেখা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এতে হিমি মানসী চরিত্রে অভিনয় করেন। দুই বাংলায় একযোগে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে হিমি নজর কাড়েন সব দর্শক ও ভক্তদের।
অবশ্য হিমি ছোটপর্দায় নিয়মিত অভিনয় করেন। সেভাবেই দর্শক তাকে বেশি চিনতো। কিন্তু বড় পর্দায় তার আবির্ভাবে দর্শক ভিন্ন হিমিকে দেখতে পায়। এখন নতুন করে যোগ হয়েছে সদ্য অনুষ্ঠিত ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা। যদিও প্রতিযোগিতাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে হিমি এখন এটিকে পজেটিভ ভাবেই নিচ্ছেন।
একুশে টেলিভিশনকে হিমি বলেন, আমি হয়তো মুকুটটি পাইনি কিন্তু অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। অনেকের দোয়া পেয়েছি। এই ভালোবাসা ও দোয়া নিয়ে এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনেক ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। নাটক হচ্ছে। আমি প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগেই অভিনয়ে ছিলাম। সেই জায়গা থেকে আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। মানুষ এখন আমার কাছে আরও অনেক বেশি কিছু আসা করে। সেই জায়গা থেকে সামনে আরও ভালো কাজ করার ইচ্ছে আছে।
অবশ্যই হিমির এই ভাবনা তার ক্যারিয়ারে আরও সুন্দর পথের দিকে নিয়ে যাবে। এজন্য সে দর্শক ও কাছের মানুষদের সাধুবাদও পাচ্ছেন।
হিমি যেহেতু একজন প্রতিষ্ঠিত তারকা তাই তাকে যে পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না, তা তার কাজেই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তাইতো সব কিছু সামলে নিয়ে আবারও কাজের প্রতি মনযোগ দিয়েছেন। বেশ কিছু ভিন্ন ধরণের কাজ নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হচ্ছেন হিমি।
এ বিষয়ে হিমি বলেন, নতুন কিছু ভিন্ন আঙ্গিকের কাজ করছি। এর আগে আমি কখনও মিউজিক ভিডিও করিনি। সামনে আমার একটি ভালো মিউজিক ভিডিও আসছে। কিছুদিনের মধ্যেই দর্শক তা জানতে পারবে। এছাড়া বেশ কিছু ভালো কাজ আসছে। বড় কিছু প্রজেক্টের কথা চলছে। সবকিছু এখন বলতে পারছি না। তবে দর্শকরা এবার নতুন হিমিকে দেখতে পাবে। যা দর্শকদের জন্য সিক্রেট হিসেবে রাখছি।
হিমির ‘হঠাৎ দেখা’ চলচ্চিত্রটি চলতি বছরই দু’দেশে মুক্তি পায়। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয় ‘হঠাৎ দেখা’ চলচ্চিত্রটি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হঠাৎ দেখা’কবিতার নির্যাস থেকে নির্মাণ করা হয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘হঠাৎ দেখা’। যৌথভাবে ছবিটি পরিচালনা করেছেন রেশমী মিত্র (ভারত) এবং সাহাদাত হোসেন (বাংলাদেশ)।
সিনেমাটি নিয়ে একুশে টেলিভিশনকে হিমি বলেন, আমার যেমন রবীন্দ্রনাথের একটি চরিত্রের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে, তেমনি অন্যদেরও একটা এক্সপেক্টেশন থাকে। এই দিক থেকে একটা ভালো ফিডব্যাক পেয়েছি।
নতুন সিনেমায় কাজ করা প্রসঙ্গে হিমি বলেন, কিছু নতুন সিনেমা নিয়ে কথা হচ্ছে। সব কিছু চূড়ান্ত হলে ইনশাআল্লাহ অন্য রকম চরিত্রে দর্শক আমাকে দেখতে পাবে।
বিভিন্ন অঙ্গনে হিমির বিচরণ থাকলেও টেলিভিশনের পর্দায় বেশি পরিচিত। কিন্তু বড় পর্দায় নিয়মিত কাজ করার ইচ্ছে তো সবার থাকেই। সেই দিক থেকে হিমিও নিয়মিত হওয়ার কথা জানালেন।
একুশে টিভিকে হিমি বলেন, চলচ্চিত্রে নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে অবশ্যই আছে। কারণ চলচ্চিত্র অভিনয়ের সবচেয়ে বড় মাধ্যম। কিন্তু কেনো যেনো আমি ছোট পর্দাও ছাড়তে পারি না। কেনো যেনো খুব ভালোলাগে। কারণ খুব কম সময়ে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র ছোট পর্দায় করা যায়। আমি মনে করি একজন অভিনেত্রী হিসেবে সব ধরণের চরিত্রে অভিজ্ঞতা থাকা ভালো। যেটা আমি এখন করার চেষ্টা করছি। সামনে আমার কিছু টিভিসিও আসছে। একটি হেয়ার অয়েলের টিভিসি। যা দেখে দর্শকের ভালো লাগবে।
হিমি ছোটবেলা থেকেই গান, নাচ, আবৃত্তি নিয়ে নিজেকে তৈরি করেছেন। কচিকাঁচা, ছায়ানটসহ অনেকের কাছেই তালিম নিয়েছেন। পরিবারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছিলো বলেই সম্ভব হয়েছে। এক কথায় সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের মধ্যেই তার বেড়ে ওঠা। নাচের ক্ষেত্রের মোটামুটি দক্ষ হিমি। ক্লাসিক্যাল নৃত্য রপ্ত করেছেন। মোট কথা নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছেন অল্প অল্প করে। বর্তমানে পড়ালেখা ও মিডিয়ার কাজ দুটিই সামলাতে হচ্ছে হিমিকে। ইউনির্ভাসিটিতে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তবে পরিবারের সাপোর্ট আছে বলেই কোন সমস্যা হচ্ছে না।
এর আগে গান, নাচ নিয়ে থাকলেও হিমির শুরুটা একটি রিয়েলিটি শোর মধ্যদিয়ে। তবে বর্তমানে একটি বড় প্লাটফর্ম অর্থাৎ মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশে অংশ নিয়ে আরও বেশি আলোচনায় এসেছেন।
এ বিষয়ে হিমি বলেন, এই প্লাটফর্মগুলো একজন শিল্পীর জন্য অনেক বড় অবদান রাখে। আমি কোথাও গেলে যদি বলি যে আমি এই প্লটফর্ম থেকে এসেছি তখন তারা ধরেই নেয় যে ভালো কিছু করা সম্ভব। কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। মিস ওয়ার্ল্ড আমাকে আরও বেশ কিছু দর্শক দিয়েছে। যদিও শেষের দিকে কিছুটা বিব্রত হয়েছি তবে অনেক কিছু শিখেছি। অনেক গুনি মানুষ আমাদের ক্লাস নিয়েছেন। সবকিছু মিলে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় একটা ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে।
হিমি ইতিমধ্যে বেশকিছু নাটক, টেলিফিল্মে কাজ করে প্রশংসা পেয়েছেন। তবে তৃপ্তির জায়গা এখনও পূর্ণ হয়নি। ভালোকিছুর অপেক্ষায় আছেন। দর্শকও তেমনটি চায়। দেখা যাক দর্শকদের সেই জায়গাটা কিভাবে সে পূরণ করতে সক্ষম হয়।
//এআর