একান্ত আলাপচারিতায় চঞ্চল
ছোট থেকেই আমি নচিকেতার ভক্ত
প্রকাশিত : ১৮:৫৬, ২৯ অক্টোবর ২০১৭
‘মনপুরা’, ‘মনের মানুষ’, ‘আয়না বাজি’র মতো দর্শকনন্দিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। শুধু চলচ্চিত্রে নয়, নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ের মনিকোটায় পোক্ত আসন গেড়ে আছেন। তিনি অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।
পর্দায় চঞ্চল যতোটা জনপ্রিয়, মঞ্চেও তিনি সমান জনপ্রিয়। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় নৈপূণ্য দিয়ে বাংলা নাটকে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছেন এ অভিনেতা। গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনধারা, বাস্তবতাগুলো হাস্যরসের মাধ্যমে তুলে ধরে নাটককে দেশ ও দেশের গণ্ডির বাইরে নিয়ে গেছেন।
বর্তমানে খণ্ড ও ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে ব্যস্ত সময় পার করছেন জনপ্রিয় এই তারকা। সম্প্রতি মঞ্চনাটকে অভিনয়ের জন্য কানাডার টরোন্টোতে গিয়েছিলেন চঞ্চল। সেখানে একই মঞ্চে নাটকের পাশাপাশি গানও গেয়েছেন তিনি। সেই মঞ্চে গান গেয়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী নচিকেতাও। প্রবাসীদের সেই মিলনমেলায় নচিকেতার সঙ্গে চঞ্চল চৌধুরীর আড্ডা নিয়ে কথা হয় একুশের সকালের আলাপচারিতায়। চঞ্চলের সেইসব কথাগুলো দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন- সোহাগ আশরাফ
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী পাবনার মানুষ। জেলার সুজানগর উপজেলার নজিরগঞ্জ ইউনিয়নের কামারহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো, অভিনয়, গান, ছবি আঁকা এসব কিছুতেই সমান পারর্দশী তিনি। এছাড়া ছোট ও বড় পর্দার চঞ্চল থিয়েটার মঞ্চে দর্শকদের বরাবরই মাতিয়েছেন তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে। সম্প্রতি তিনি মঞ্চনাটকে অভিনয়ের জন্য কানাডায় গিয়েছিলেন। ১৪ ও ১৫ অক্টোবর কানাডার টরোন্টো’তে একটি মিউজিক্যাল শো’তে দু’টি ভিন্ন মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। টরোন্টোতে বসবাসরত প্রতিবন্ধী ও অসহায় নারীদের সহায়তার জন্য এই শো’র আয়োজন করা হয়। সফল প্রদর্শনী ও দর্শকদের ভালোবাসা নিয়ে তিনি ফিরেছেন ঢাকায়।
টরোন্টোর সেই সব অভিজ্ঞতা নিয়ে চঞ্চল বলেন, ওখানকার প্রবাসী বাঙালিদের আমন্ত্রণে আমরা গিয়েছিলাম। বাংলাদেশ থেকে গিয়েছি আমি আর শাহনাজ খুশী। আমরা বৃন্দাবন দাস রচিত ও নির্দেশিত দুটি অনু নাটক মঞ্চায়ন করেছি ১৪ এবং ১৫ অক্টোবর। অভিনেতা-অভিনেত্রী আমরা দুজনই। আমি গানও করেছিলাম। মূল আকর্ষণ ছিলো নচিকেতা। দুই বাংলাকে এক করে কলকাতা ও বাংলাদেশের বাঙালিরা এ আয়োজন করে।
নচিকেতার সঙ্গে একই মঞ্চে শো করার অভিজ্ঞতা নিয়ে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই নচিকেতার গানের ভক্ত। বিশেষ করে তাঁর ‘বৃদ্ধাশ্রম’ গানটির জন্য। অবসম্ভব ভালো লাগে তাঁর জীবনমুখী গান, গানের কথা, গানের শক্তি। নচিকেতা মানুষটাও অসাধারণ। একসঙ্গে আমরা পাঁচ দিন থাকলাম। একই হোটেলে ছিলাম। অনেক আড্ডা, অনেক মজা করেছি একসঙ্গে। আর গানের কথা যদি বলি, অসাধারণ গান করেন নচিকেতা।
আর আমাদের অভিনয় নিয়ে যদি বলি, দু’দিন আমরা পারফর্ম করেছি। নাটকের লেন্থ ছিল পঁচিশ মিনিট করে। উনি মঞ্চের প্রথম সারিতে বসে আমাদের নাটক দেখেছেন। এরপর আমার আয়নাবাজিও দেখেছেন ওখানে বসে। সবকিছু মিলিয়ে মনেই হয়নি যে এই মানুষটির সঙ্গে আগে কোনোদিন পরিচয় ছিলো না। সেও আমাদের নাটকের ভক্ত, আমাদের অভিনয়ের ভক্ত। এক কথায় অনেক আড্ডা দিয়েছি। আড্ডাগুলো ছিলো ওনার গানের আড্ডা। নতুন যে গানগুলো তিনি করেছেন বা সামনে আসবে এগুলো শোনিয়েছেন।
নচিকেতার পাশাপাশি টরোন্টোর ওই মঞ্চে চঞ্চলও গান গেয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার কথা নিয়ে তিনি বলেন, আমি তো আসলে গায়ক না। টুকটাক যেহেতু গান করি তাই মনপুরার একটা গান গেয়েছি। আমার একটা অ্যালবামে ছিলো ‘বকুল ফুল, বকুল ফুল’ এই গানটা করেছি। ভূপেন হাজারিকার দুটি গান গেয়েছি। দুদিন চারটা চারটা আটটা গান করেছি। সত্যি কথা বলতে, গান শুনেছি। নচিকেতার গান সামনা সামনি শুনেছি। আর একটা বড় প্রাপ্তি ছিলো এ আর রাহমানের কনর্সাট দেখেছি।
চঞ্চল চৌধুরী আরও বলেন, আমিতো দেশের বাইরে অনকেবার গিয়েছি, তবে টরোন্টোর এই টুরটা বাঙালি কমিউনিটি থেকে শুরু করে আমাদের যারা ভক্ত অনুরাগীরা রয়েছেন তাদের আন্তরিকতা, তাদের আতিথিয়তা এটা ভুলবার নয়।
এসএ/এআর