সালমানের তদন্ত প্রতিবেদন কাল: প্রতীক্ষায় মা
প্রকাশিত : ১৭:০২, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুনঃতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আগামীকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি। এই প্রতিবেদনের দিকে তাকিয়ে আছেন সন্তান হারানোর শোকে কাতর সালমানের মা নীলা চৌধুরী ও তার স্ত্রী সামিরা এবং ভক্তরা।
অমর নায়ক সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী আশা করছেন, আগামীকালের প্রতিবেদনে সালমানের মৃত্যুটি পরিকল্পিত হত্যা বলেই প্রমাণিত হবে। বিচার হবে ২১ বছর ধরে চলমান আলোচিত এ মৃত্যু রহস্যের সঙ্গে জড়িতদের।
এদিকে সালমান শাহর প্রাক্তন স্ত্রী সামিরা আশা করছেন আগের প্রতিবেদনগুলোর মতোই পিবিআইয়ের রিপোর্টেও সালমানের মৃত্যু আত্মহত্যা বলেই প্রমাণ হবে। স্বামী খুনের মিথ্যে অভিযোগ থেকে রেহাই পাবেন তিনি ও তার পরিবার।
চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুনঃতদন্তের প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আগামীকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি। এই এ দিকে সালমান শাহের প্রাক্তন স্ত্রী সামিরা আশা করছেন আগের প্রতিবেদনগুলোর মতোই পিবিআইয়ের রিপোর্টেও সালমানের মৃত্যু আত্মহত্যা বলেই প্রমাণ হবে। স্বামী খুনের মিথ্যে অভিযোগ থেকে রেহাই পাবেন তিনি ও তার পরিবার।
বাংলা চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী আশা করে বলেছেন, আগামীকালের প্রতিবেদনে সালমানের মৃত্যুটি পরিকল্পিত হত্যা বলেই প্রমাণিত হবে। ২১ বছর ধরে চলমান আলোচিত এ মৃত্যু রহস্যের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হবে ।
আগামীকালের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় নীলা চৌধুরী বলেন, ‘আগামীকাল মামলাটির প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। আমরা সেই প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি। প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য আমি ও সালমানের ছোট ভাই শাহরান কাল আদালতে হাজির থাকবো। সালমান শাহ’র ভক্তরাও আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আশা করছি কালকের প্রতিবেদন আমাদের পক্ষে আসবে।’
নীলা চৌধুরীর আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমরা আগামীকাল প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। আশা করছি ২১ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটবে সালমানের পরিবারের।
এ দিকে সালমান শাহের প্রাক্তন স্ত্রী সামিরা আশা করছেন আগের প্রতিবেদনগুলোর মতোই পিবিআইয়ের রিপোর্টেও সালমানের মৃত্যু আত্মহত্যা বলেই প্রমাণ হবে। স্বামী খুনের মিথ্যে অভিযোগ থেকে রেহাই পাবেন তিনি ও তার পরিবার।
তিনি আরও বলেন, ‘সালমান ছিল আমার প্রেমিক, স্বামী। তার মৃত্যুর পর সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণার মুখে পড়েছিলাম আমি। পরিবারের অমতে আমি সালমানকে বিয়ে করেছিলাম। সুখীও হয়েছিলাম। স্বামী খুন করার মতো কোনো কারণ ছিল না।তবুও আমাকে নিয়ে নানা সময়ে মুখরোচক গল্প ছড়ানো হয়েছে। মানুষকে উস্কে দেওয়া হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। এখনো সালমানের মা ও তার ভাই মিথ্যাচার দিয়ে সালমান ভক্তদের উস্কানি দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবেদন আসার আগেই তারা আমাকে খুনি বানিয়ে আমার ফাঁসি দিয়ে দিচ্ছেন। আশা করছি আগামীকাল তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশের পর এসব কিছু থেমে যাবে। আমি বরাবরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমিও এ রহস্যের শেষ চাই।’
অপরদিকে সালমান অপমৃত্যু মামলার পুনঃতদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর সিরাজুল ইসলাম জানালেন আগামীকাল প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন,‘আগামীকাল রোববার, ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও এদিন প্রতিদবেদন দাখিল করা হবে না। মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই তদন্ত করতে সময় লাগছে। আমাদের আরও সময়ের প্রয়োজন। আশা করছি আদালত আমাদের আরও সময় দেবেন।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। ওই সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা করেন। ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। এরপর প্রায় ১২ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।
২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
মামলাটিতে র্যাবকে তদন্ত দেয়ার আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন।
২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র্যাব মামলাটি আর তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন। এরপর সালমানের মায়ের পুনরায় আবেদনের প্রেক্ষিতে চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলা পুনঃতদন্ত করতে ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন আদালত।
কেআই/ এআর