ঢাকা, রবিবার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

তারকালাপে এলিনা শাম্মী

সিনেমার মধ্যে আরও একটি সিনেমা ‘গন্তব্য’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪৩, ৫ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ২২:০৫, ৫ মার্চ ২০১৮

এলিনা শাম্মী। অর্থনীতির ছাত্রী। কিন্তু নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ভিন্ন পেশায়। তিনি একজন জনপ্রিয় উপস্থাপিকা অভিনেত্রী। আইনজীবী বাবা গৃহিনী মায়ের সন্তান এলিনা শাম্মী দুই ভাই বোনের মাঝে ছোট। এলিনা উপস্থাপনা, অভিনয়, নাটক আর গল্প লেখায় শুধু নয়; নিজেকে নিয়ে যেতে চান অনন্য উচ্চতায়। কি করছেন তা বড় নয়, টিকে থাকতে চান কাজের মাধ্যমে। এটাই তার চ্যালেঞ্জ।

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে এলিনা বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলে উপস্থাপনা দিয়েই শুরু করেন। তবে এরপর নাটক, বিজ্ঞাপন ও সিনেমায় নিজেকে তুলে ধরেছেন নিজের অদম্য আগ্রহ ও অধ্যাবসায় দিয়ে। তাই তো পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। দেশের প্রায় সবকটি চ্যানেলে উপস্থাপনা করে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি।

এলিনার অভিনীত নাটকের মধ্যে রয়েছে- রাজিব রহমানের চন্দনা নাটকে চন্দনা চরিত্রে, জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের সড়ক দূর্ঘটনার উপর নির্মিত নাটকের মূল চরিত্রে, ইমদাদুল হক মিলনের গল্প ও চন্দন চৌধুরীর রচনায় এসো, মেঘসহ অনেক টেলিছবিতে। এছাড়া তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন শাহ আলম কিরন ও আনিসুল হকের গল্পে বিরাঙ্গনা সিনেমার বিরাঙ্গনার ভূমিকায়। অভিনয় করেছেন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘একাত্তরের মা জননী’, ড. অরুপ রতনের ‘স্বর্গ থেকে নরক’ সিনেমাতে। সম্প্রতি অভিনয় করেছেন অরন্য পলাশের পরিচালনায় ‘গন্তব্য’ শিরোনামের একটি সিনেমায়। এতে শাম্মী ছাড়াও অভিনয় করছেন ফেরদৌস, আইরিন, আমান সহ আরও অনেকে।

একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) অনলাইনের তারকালাপে নতুন এই সিনেমা ‘গন্তব্য’ নিয়ে কথা বলেছেন এলিনা শাম্মী। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ


ইটিভি অনলাইন : কেমন আছেন?

এলিনা শাম্মী : অনেক ভালো।

ইটিভি অনলাইন : আপনার অভিনিত নতুন সিনেমার টিজার প্রকাশ পেয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

এলিনা শাম্মী : অনেক সাড়া পাচ্ছি। আমি এর আগেও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছি তবে এ কাজটিতে নিজেকে প্রকাশের সুযোগ পেয়েছি। আমরা পুরো টিম অনেক বেশি যত্ন নিয়ে কাজটি করেছি। তবে টিজারে দর্শক যা দেখছে তা দিয়ে সিনেমা সম্পর্কে কিছুই বোঝা যাবে না।

ইটিভি অনলাইন : তাহলে সিনেমাটি সম্পর্কে একটু বলুন?

এলিনা শাম্মী : নতুন এই সিনেমাটির নাম ‘গন্তব্য’। এটি পরিচালনা করেছেন অরন্য পলাশ। এখানে ফেরদৌস, আইরিন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, আমান রেজা, মাসুম আজিজ, আফফান মিতুলসহ আরও অনেকে অভিনয় করেছেন। ‘গন্তব্য’ সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে সুইট চিলি ফিল্মস।

মূলত ছয় বন্ধু মিলে একটি সিনেমা নির্মান এবং সেই সিনেমাটি সারাদেশে প্রদর্শন করানোর ঘটনা নিয়ে গড়ে উঠেছে এ সিনেমার কাহিনী। গল্পে আছে দুটি ভাগ, একটি শহরের, অন্যটি গ্রামের।

এখানে ছয় বন্ধু একটি থিয়েটারে কাজ করে। যাদের মধ্যে আমিও আছি। পুরো গল্পটা এখনই বলতে চাইছি না। এটা দর্শক হলে গিয়ে দেখে বুঝবে। তবে এটা বলতে পারি যে- ‘গন্তব্য’ হচ্ছে সিনেমার মধ্যে আরও একটি সিনেমা।

আরও একটা বিষয় বলি- গল্পটি হচ্ছে দেশ ভিত্তিক। কিন্তু অন্যরকম এক নান্দনিকতার মধ্য দিয়ে নির্মাতা এটি নির্মান করেছেন।

ইটিভি অনলাইন : আপনার চরিত্রটি সম্পর্কে যদি একটু বলতেন?

এলিনা শাম্মী : ‘গন্তব্য’ সিনেমায় পুষ্প নামের চরিত্রে আমাকে দেখা যাবে। এটা আমার একটা স্বপ্নের চরিত্র। পরিচালক অরণ্য পলাশ আমাকে একেবারেই ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন। শক্তিমান অভিনেতা জয়ন্ত চট্টপাধ্যায় আমার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আর সিনেমায় আমার জুটি হিসেবে কাজ করেছেন আমান। সে ডিরেক্টরের ভূমিকায় কাজ করেছে।

গল্পের মধ্যে আমানের একটি স্বপ্ন রয়েছে। সে একটি সিনেমা নির্মাণ করতে চায়। আমরা ছয়জনই তার স্বপ্নটাকে লালন করি। চলচ্চিত্রে আমান একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। ওর ইচ্ছে আছে কিন্তু সমর্থ নেই। সেই স্বপ্নটাকে পূরণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন ফেরদৌস ভাই।

মজার বিষয় হচ্ছে- আমাদের যার যার যে নাম চলচ্চিত্রে সেই নামই ব্যবহার করা হয়েছে। আরও একটা মজার বিষয় হচ্ছে, গল্পের মধ্যে আমরা যারা একটি সিনেমা নির্মাণের চিন্তা করেছি তারাই আবার সেই সিনেমায় অভিনয় করেছি। কারণ আমরা ওখানে থিয়েটার কর্মী হিসেবে কাজ করি। মোটকথা একটা গল্পের মধ্যে আরও একটা গল্প।

 

ইটিভি অনলাইন : ‘গন্তব্য’র এমন একটি মাজার কথা বলেন যেটি শুনলে সিনেমাটির উপর দর্শকদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে?

এলিনা শাম্মী : মজার কথা যদি বলি তাহলে বলতে হয়- শহরের কিছু তরুণ ছেলে-মেয়ে যারা স্বপ্ন দেখে সিনেমার মাধ্যমে সমাজকে কিছু একটা দেওয়ার। সেই কাজটি করতে গিয়ে তারা যখন গ্রামে চলে আসে তখন গ্রামের জেলে পাড়ার যে পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয় সেটাই অনেক ইন্টারেস্টিং। পুরো চলচ্চিত্রে দুটি ভাগ। এক পাশে আমাদের চেহারা এক রকম দেখা যাবে, অন্যপাশে পুরোই অন্যরকম দেখা যাবে।

আর একটা কথা হচ্ছে- এখানে জয়ন্ত দা, মাসুম আজিজ, কাজী রাজু তারাও কাজ করেছেন। কিন্তু তারা জেলে পাড়ার ওই অংশে কাজ করেছেন। শক্তিশালী অভিনেতা, অভিনেত্রীদের সমাগম ঘটেছে সিনেমাটিতে।

ইটিভি অনলাইন : অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্নটা মাথায় কীভাবে এলো?

এলিনা শাম্মী : অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন অবচেতন মনে ছিল। হয়তো শৈশব থেকেই। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতাম। উপস্থাপনা দিয়ে যখন ক্যারিয়ার শুরু করি; তখন অভিনয়ের অফার আসে। সেই থেকেই অভিনয় শুরু।

ইটিভি অনলাইন : আপনিতো মিডিয়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন। কোন স্থানটিতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?

এলিনা শাম্মী : উপস্থাপনা, নাটক-সিনেমায় অভিনয়, বিজ্ঞাপনে কাজ করছি। আসলে উপস্থাপনাটাও একটা অভিনয়। সবক্ষেত্রে কাজ করতেই ভালো লাগে। তবে অভিনয় করতে গিয়ে অন্যরকম আনন্দ পাই। নিজেকে চেনা যায়, নিজেকে ভাঙা যায়।

ইটিভি অনলাইন : বর্তমানে মিডিয়ায় কাজ করা একজন নারীর জন্য চ্যালেঞ্জের। ভবিষতে আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

এলিনা শাম্মী : বর্তমানে মেয়েদের মিডিয়ায় কাজ করার একদিকে যেমন বহুমুখী সুযোগ রয়েছে; তেমনি রয়েছে প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতা। যোগ্যদেরও তথাকথিত যোগ্যতার অভাবে পিছিয়ে পড়তে হয় অনেক সময়ে। বঞ্চিত হতে হয় কাজের সুযোগ থেকে। তবে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলবো, যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই তার মূল্যায়ন হবে সঠিক নিয়মেই। প্রতিভা কোন দিন কেউ চাপা দিতে পারে না। এরজন্য শুধুই দরকার আন্তরিকতা, ধৈর্য, সাধনা এবং সততা।

আর নিজের ভবিষৎ এর কথা যদি বলেন- তবে বলবো আমি টিকে থাকতে চাই। এ ক্ষেত্রে একটা কথা না বললেই নয়, আমি যখন প্রথম মিডিয়াতে কাজ করার জন্য আসি তখন কেউ কেউ বলেছিল যে আমাকে দিয়ে হবে না। আমার জন্য মিডিয়া না। কিন্তু আমি সেদিকে কান দেইনি। আমি আমার ইচ্ছা শক্তি দিয়ে আজ এই অবস্থানে এসেছি। আমি দেশের প্রায় সবগুলো টিভি চ্যানেলে উপস্থাপনা করেছি। উপস্থাপনা করতে এসে অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। কাজের সুযোগ এসেছে। কাজ করছি। যারা আমাকে ওই সময় এসব কথা বলেছিল তারাই হারিয়ে গেছে। আমি এখনও টিকে আছি। তাই আবারও বলছি- কি করলাম তা বিষয় না, টিকে থাকাটাই বড় বিষয়।

ইটিভি অনলাইন : অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

এলিনা শাম্মী : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

গন্তব্য সিনেমার টিজার দেখুন :

এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি