‘রঞ্জিৎ মল্লিকের মেয়ে হওয়ায় স্ট্রাগল করতে হয়নি’
প্রকাশিত : ১৮:০৪, ৩১ মার্চ ২০১৮
টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক। সম্প্রতি যীশু সেনগুপ্তর সঙ্গে জুটি হয়ে অভিনয় করেছেন ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’ সিনেমায়। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন মৈনাক ভৌমিক। টালিউডের প্রসিদ্ধ এ পরিচালক রবীন্দ্রনাথের ‘ঘরে বাইরে’ দর্শনকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে ‘ঘরে এন্ড বাইরে’ সিনেমার মধ্যে দিয়ে। শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে সেই সিনেমা।
নতুন এই সিনেমা নিয়ে গণমাধম্যে অভিনেত্রী এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। যেখানে উঠে এসেছে সিনেমার বেশ কিছু অজানা কথা। সাক্ষাৎকারটি একুশে টেলিভিশন অনলাইনের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো :
প্রশ্ন : মৈনাকের সিনেমাতে তো এই প্রথম কাজ?
কোয়েল মল্লিক : হ্যাঁ। আসলে এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার পর, এখন মনে হয় নিজের পছন্দে কাজ করি। একটু বেছে বেছে।
প্রশ্ন : আপনি সিনেমা বাছতে পারেন, চরিত্র পছন্দ না হলে না বলতে পারেন। কারণ, আপনি রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে কোয়েল মল্লিক, আবার নিসপাল সিংহ রানের স্ত্রী।
কোয়েল মল্লিক : দেখুন, সিনেমা করব বলে অভিনয় করতে আসিনি। হয়ে গেছে। সময় করিয়ে নিয়েছে। আর হ্যাঁ, আজ আমার এটা বলতে কোনও দ্বিধা নেই যে রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে বলে আমায় কোনও স্ট্রাগল করতে হয়নি। এমনকী, আমায় কোনও দিন স্ক্রিন টেস্ট অবধি দিতে হয়নি। আর রানে তো অসম্ভব সাপোর্টিভ।
প্রশ্ন : রানেকে বাংলা খাবার খাওয়াতে শেখালেন, না কি আপনি পঞ্জাবি খানার ভক্ত হয়ে গেলেন?
কোয়েল মল্লিক : (প্রচন্ড হেসে) জানেন, রানেকে আমি ইলিশ মাছ খাওয়াতে শিখিয়েছি।
প্রশ্ন : আর আপনি রানের থেকে প্রোডাকশন শিখছেন না?
কোয়েল মল্লিক : ওটা রপ্ত করতে সময় লাগবে।
প্রশ্ন : মানে, কোয়েল মল্লিক পরিচালনায় আসছেন না!
কোয়েল মল্লিক : এখনই না। আরও সময় লাগবে।
প্রশ্ন : কিন্তু এখন তো শোনা যায় আপনি সুরিন্দর প্রোডাকশনে চিত্রনাট্য, চরিত্র নিয়ে মতামত দেন। নতুন চিত্রনাট্য খোঁজেন।
কোয়েল মল্লিক : আসলে ইন্ডাস্ট্রিতে এত দিন থাকা, এত কাজ করার পর নিজস্ব বোধ তৈরি হবেই। তবে ক্যামেরার পেছনে এখনই না।
প্রশ্ন : এই সিনেমার ট্রেলর দেখে মনে হচ্ছে আপনি আজকের চারপাশে দেখা কোনও এক মেয়ে। কোয়েল মল্লিক : মনে হচ্ছে, নাহ্? থ্যাঙ্ক ইউ! এটাই চেয়েছিলাম আমি আর মৈনাক। এমন এক মেয়ে যে কিন্তু বেশ ডাকাবুকো, ঝগড়ুটে আবার অন্য দিকে বেশ আবেগপ্রবণ।
প্রশ্ন : ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’ নাকি প্রেমের গল্প নয়?
কোয়েল মল্লিক : নাহ্, আসলে শুধু প্রেমের গল্প বলে এই সিনেমাটাকে ছেড়ে দিলে হবে না। আমাদের সকলের জীবনেই ছোটবেলার বন্ধুতা একটা বিশেষ জায়গা নিয়ে থাকে। এই সিনেমাতে এমন দু’জন মানুষ আছে যারা ছোটবেলার ঝড়-বৃষ্টি, চাঁদ-সূর্যের দিন-রাত দেখেছে। ফুল ঝরতে, ফল ফলার গন্ধ শেয়ার করেছে। মনের কথা বলেছে অকপটে। কে কী ভাববে, কখনও ভাবেনি। অথচ, এই মানুষ দুটো এত কাছাকাছি থেকেও নিজেদের ভালোবাসার কথা জানতে পারেনি। এই নিয়ে গল্প বলা। গল্প চলা।
প্রশ্ন : এত রকম ভাবে তো ইন্ডাস্ট্রিতে গল্প বলা হচ্ছে। তবুও হাতে গোনা বাংলা সিনেমা বাজারে সফল। একজন অভিনেত্রী হিসেবে কী মনে হয়?
কোয়েল মল্লিক : আসলে ভালো সিনেমা, খারাপ সিনেমা— এ ভাবে বিচার করা যায় না। এ রকমও তো হয়েছে, সিনেমাটা দেখে মনে হল খুব ভালো। অথচ চলল না! আসলে এত বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে থেকে মনে হয় সব সিনেমার একটা নিজের ভাগ্য আছে। সিনেমাও যেন নিজের ভাগ্য নিয়েই আসে। হিসেব কষে, গল্প লিখে সিনেমা হিট করানো যায় না।
প্রশ্ন : এ তো দর্শনের কথা হল!
কোয়েল মল্লিক : নাহ্, এটা বাস্তব! তবে এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রয়োজন আরও মৌলিক গল্পের। সাহিত্য এই ইন্ডাস্ট্রির নিঃসন্দেহে একটা বড় সম্পদ। তবে বাস্তবের গল্প, যা দেখে দর্শকের মনে হবে এটা আমারই তো কথা বা এ রকম একটা চরিত্রকে তো আমি আমার জীবনে দেখেছি, তাতেই কিন্তু অনেকটা কাজ হয়ে যায়।
সূত্র : আনন্দবাজার
এসএ/ এআর