সালমান খানের বেলায় ভিন্ন বিচার?
প্রকাশিত : ২৩:৫৪, ৭ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৪:২৯, ৮ এপ্রিল ২০১৮
কারাদণ্ড দেওয়ার একদিন পরই বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের জামিনে মুক্তির শুনানি শুরু হয় জেলা দায়রা জজের এজলাসে। জামিনে মুক্তিও পান তিনি। তাই এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সুপারস্টার, ভি আই পি বলেই কি সালমান খান এত তাড়াতাড়ি জামিনে মুক্তির পেলেন?
এ নিয়ে ভারতের সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি আলোক কুমার বলেন, "এটা ঠিকই যে সারা দেশের সব আদালতেই বহু মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে। জামিনের আবেদনও অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকে। এই দীর্ঘসূত্রিতার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।"
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, "যদি উকিল বুদ্ধিমান হন, তাহলে মূল মামলার আদেশ বেরনোর আগেই জামিনের আবেদন তৈরী করে ফেলেন। সাজা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জামিনের আবেদন জানিয়ে দিতে পারেন তিনি। কিন্তু বেশীরভাগ উকিলই সেটা করেন না।”
তিনি বলেন, “বিচারক কবে জামিনের আবেদন শুনবেন, সেটা ঠিক করার অধিকার তার রয়েছে। সেই অধিকার কখনও ব্যবহার করা হয়, কখনও করা হয় না।”
আলোক কুমার বলেন , "শুধু নিম্ন আদালতে নয়, সুপ্রীম কোর্টেও জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানিতে অসামঞ্জস্য দেখা যায়। কোনও মামলায় হয়তো চার বছরেও জামিন পাওয়া যায় না, আবার একই ধরণের অন্য একটি মামলায় দেখা গেছে চার মাসেই জামিন পাওয়া গেছে।"
এ ব্যাপারে আরেক সিনিয়র আইনজীবি সঞ্জয় হেগড়ে বলেন, "সালমান খানের জামিন মামলার যে দ্রুত শুনানি হয়েছে, এটা তো স্বাভাবিক। এটা আদালতের বিশেষ অধিকারের মধ্যেই পড়ে। তবে এমন মামলাগুলির ক্ষেত্রে অনেক সময়েই বিচারকরা চাপে পড়ে যান। বিশেষত যদি সংবাদমাধ্যম বা সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো মামলা নিয়ে খুব বেশী উৎসাহ থাকে, সেই সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে দিতে চান তারা।"
ভারতীয় ফৌজদারী কার্যবিধি বা ক্রিমিন্যাল প্রসিডিওর কোডের ৪৩৭ আর ৪৩৯ ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটদের এই অধিকার দেওয়া হয়েছে যে তিনি জামিন আবেদন পেশ হওয়ার দিনেই আদেশ দিয়ে দিতে পারেন। তবে সেই দিন যদি জামিনের আবেদনের ওপরে কোনো নির্দেশ তিনি না দেন, তাহলে তার কারণ লিখিতভাবে রেকর্ড করে রাখতে হবে ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে।
সুপ্রীম কোর্টেরই সিনিয়র আইনজীবি প্রশান্ত ভূষণ বলেন, সালমান খানের মামলায় নিয়মের বিশেষ ব্যতিক্রম হয় নি। জামিন মামলার দ্রুত শুনানি হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
তিনি আরোও বলেন, "যে কোনও জামিনের আবেদন দ্রুত শুনানি হওয়া উচিত। কিন্তু সাধারণভাবে দেখা যায় যে গরীব মানুষের ভাগ্যে এরকমটা হয় না। ব্যবস্থাটাই এরকম হয়ে গেছে। ভি আই পিদের হাতে বড় বড় উকিল থাকে, তাদের হাতে অর্থ থাকে, প্রভাব থাকে। তাদের জন্য ন্যায়বিচার পাওয়াটা সুবিধাজনক।"
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এমএইচ/এসি