ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

‘দেব বলেছিল, নাও ইউ হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইওরসেল্ফ’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫৬, ১০ এপ্রিল ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

দেবের সঙ্গে ‘কবীর’ তার তৃতীয় ছবি। তিনি অর্থাৎ অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। ছবি মুক্তি পাবে আগামী ১৩ এপ্রিল। তার আগে দেবের অফিসে আড্ডা সেশনে রুক্মিণীর হাতে চায়ের কাপ। রেকর্ডার অন হলো। তার মাঝেই দরজা খুলে ঢুকলেন দেব। মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতেই কান রাখলেন সাক্ষাত্কারে। আনন্দবাজারে সাক্ষাৎকার দেন তা তুলে ধরা হলো-

ইয়াসমিন হয়ে ওঠার পর আমি বুঝলাম লিটরেলি চ্যালেঞ্জ কাকে বলে! আসলে ইয়াসমিন লেস দ্যান অর্ডিনারি। সাধারণের থেকেও সাধারণ একটা মেয়ে। আর আমি বিশ্বাস করি ক্যারেক্টারের মতো দেখতে লাগলে ৫০ পার্সেন্ট কাজ হয়ে যায়। যখন স্ক্রিপ্ট শুনি, তখনই সোজা হয়ে বসেছিলাম। এটাই একটা গুড থ্রিলারের গুণ। আর অনিকেতদার সঙ্গে যখন দেখা হলো তখন বলল,ককপিটে খুব ভালো কাজ করেছ। কিন্তু ওই গ্ল্যামারাস অবতারটা ভুলে যাও।

• কোনও রেফারেন্স ছিল?
এটাই তো মেন পয়েন্ট। কোনও রেফারেন্স ছিল না আমার। আগের দুটো ছবিতে (চ্যাম্প, ককপিট) তাও সাধারণ কাউকে দেখে একটু একটু পিক আপ করতে পারতাম। কিন্তু এটাতে নো রেফারেন্স। কারণ ‘কবীর’ সত্যি ঘটনার ওপর বেস করে তৈরি। সাবজেক্টটা এতটাই কনফিডেনশিয়াল যে একটা ভিডিও ক্লিপ ছাড়া একটা ছবিও ছিল না যে হাউ দিস পার্সন লুকস লাইক। ফলে আমাকেই একটা ক্যারেক্টার তৈরি করতে হয়েছিল যে এভাবে তাকায়, এ ভাবে হাঁটে— আর চোখ থেকে হ্যাপিনেসটা সরিয়ে ফেলতে হয়েছিল। এটা অনিকেতদা বলেছিলেন।

• ওয়ার্কশপ করেছিলেন তো?
প্রচুর। স্ক্রিপ্টে এই ক্যারেক্টারটা যা যা করছে তা কেন করছে সেটা বুঝতেই ওয়ার্কশপে এক মাস সময় লেগেছিল। পেজ ওয়ান থেকে পেজ ফিফটি সিক্স পুরোটা মুখস্থ করতে হয়েছিল। ওটা সত্যি দরকার ছিল।

• শুটিংয়ে তো অ্যাক্সিডেন্টও হয়েছিল আপনার?
হুম। শুটিং করতে গিয়ে গর্তে পরে গিয়েছিলাম। পায়ে লেগেছিল। পরে ট্রেনে যখন শুট করেছি তখন পা ৭০ শতাংশ ঠিক হয়ে গিয়েছিল।

• ট্রেনে শুটিং তো বেশ কঠিন ছিল?
৭০ শতাংশ শুট করেছি তিন দিনে ট্রেনের মধ্যে। খুব কঠিন ছিল। ফিজিক্যালি অ্যান্ড মেন্টালি। প্রথমে তো ট্রেন লেট হয়ে যায়। তার পর খাবার, জল যেখান থেকে উঠবে সেই টাইমিংটা মিস না হয়ে যায় সেটার টেনশন ছিল। অ্যাক্সিডেন্টের কথা বলছিলেন না, তখন তো পা কিছুটা ঠিক হয়েছে। ২০ ঘণ্টা টানা শুটে পা ফুলতে শুরু করে। মনিটরে যখন ধরা পড়ে আমার হেয়ার স্টাইলিস্ট বলে, আরে থামাও থামাও। কাজের মধ্যে ছিলাম। ফলে ব্যাথা হচ্ছে, সেটাও রিয়ালাইজ করিনি।
• তার পর?
আমি দেখলাম এখন কিছু করার নেই, কাঁদতেও পারব না। ফলে ফিজিক্যাল জিনিসের বিরুদ্ধে আমরা লড়েছি। মেন্টালি যদি একটুও ভুল হত, কোরিওগ্রাফিতে যদি ভুল হত, কাজটা হত না। আমাদের মুভমেন্টগুলো খুব ক্যালকুলেটিভ ছিল। চাইলেও অ্যাজ অ্যান আর্টিস্ট বেশি কিছু করতে পারব না। বডি মুভমেন্ট খুব ফিক্সড রাখতে হয়েছিল। কারণ পুরোটাই মুখে ফোকাস।

• এক্সপ্রেশন খুব ইম্পর্ট্যান্ট ছিল তা হলে?
ইয়েস, শুধু মুখটা। আর বসে থেকে। কোনও প্রপ নেই। দাঁড়াতেও পারছি না। কখনও মাথা কেটে যাবে, কখনও পিছনের লোক দেখা যাবে। অনেক সমস্যা। আর ওই এক্সপ্রেশনেই আসল অভিনেতা বেরিয়ে আসে। অনিকেতদা সেটাই চেয়েছিলেন। এতটাই ক্যালকুলেটেড রিস্ক নিয়েছে ‘কবীর’। আমি তো বলি, কবীর আর্মি।

• দেবের সঙ্গে তিনটে ছবি হলো। দেবকে কতটা বদলাতে দেখলেন?
অ্যাজ অ্যান অ্যাক্টর ওকে নিয়ে আমার কমেন্ট করাটা ইটস টু আর্লি। ওর থেকে আমিও অনেক কিছু শিখেছি। তবে এই ছবিতে দেবের এ রকম শেডস আগে কেউ দেখেনি। অ্যাজ আ প্রোডিউসার প্রতি দিন হি রিইনভেন্ট হিমসেল্ফ।

• আর বন্ধু দেব?
বন্ধুরা বদলায় না। ওটা যখন বদলে যাবে তখন দেব আর বন্ধু থাকবে না।
• ‘কবীর’-এ দেব কতটা টিপস দিয়েছিলেন?
দেখুন, ‘চ্যাম্প’ ও হাতে ধরিয়ে কাজ করিয়েছে। এমনও হয়েছে, ক্যামেরার উল্টো দিক থেকে ও অ্যাক্টিং করত, আর ক্যামেরার সামনে আমি। কিন্তু ‘ককপিট’ থেকে একদম ছেড়ে দিয়েছে আমাকে। আমাকে বলেছে, এ বার তুমি করো তোমার মতো করে। তুমি পারবে। ও একটা খুব মজার কথা বলেছিল। ফার্স্ট সিনেমায় ইউ হ্যাভ টু জাস্টিফাই মি। নাও ইউ হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইওরসেল্ফ।

• দায়িত্ব বেড়ে গেল বলুন?
‘চ্যাম্প’-এ দেব আমাকে যে কাস্ট করে ভুল করেনি সেটা প্রমাণ করার দায়িত্ব ছিল। ‘ককপিট’-এ ম্যাগনাম ওপাস ডিরেক্টর কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় যখন নিজে এসে বলেন, আই ওয়ান্ট রুক্মিণী মৈত্র। দেব তখন বলেছিল, ওর জায়গায় অন্য কেউ নয় কেন? ফলে কমলেশ্বরদার মুখ রাখার দরকার ছিল। আর ‘কবীর’-এ যখন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের মতো মানুষ এসে বলেন, আমি‘চ্যাম্প’, ‘ককপিট’ দেখেছি। আমি বলছি এই মেয়েটাই পারবে, সেটা হিউজ রেসপন্সিবিলিটি। নিজেকে যত না জাস্টিফাই করতে চাইছি, তার থেকেও বেশি ওরা যে ফেথ আর ট্রাস্ট রাখছে আমার ওপর সেটাকে জাস্টিফাই করতে চাইছি।

• নেক্সট হোয়াট?
নেক্টস ভেকেশন। হা হা...। আই ওয়ান্ট টু গো টু আইসল্যান্ড।
• সিরিয়াসলি?
সত্যিই একটা ছুটি চাই।

• আর সিনেমা? দেবের পরের দুটো ছবিতে তো আপনি নেই।
এই প্রশ্নটা লোকে আমায় এতো জিজ্ঞেস করে যে, দেবের ছবি মানেই তুমি। এ বার পর পর দুটো ছবিতে আমি নেই দেখে হয়তো তারা খুশি হবে।
• আপনার পরের ছবি তা হলে কবে?
স্ক্রিপ্ট শুনছি এখন। আসলে এমন কিছুর জন্য ওয়েট করছি যেটা অডিয়েন্স হিসেবে আমি দেখতে চাইব। তাতে যদি বছরে ১০টা ছবি না হয় কোনও অসুবিধে নেই। ১০ বছরে যদি একটা মনে রাখার মতো ছবি হয় সেটাতেই আমি খুশি।

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি