ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

পিতা-পুত্রের অমলিন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৫৩, ৫ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৩:৫৩, ৫ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

১০২ নটআউট’। বলিউডের নতুন সিনেমা। আলোচিত এই সিনেমাটি সেন্স অফ হিউমার এবং স্মার্টনেসের মিশেল দিয়ে নির্মিত। একদিকে সারল্য অন্যদিকে জটিলতম যুগের চাহিদা সব মিলে অন্যরকম নির্মাণ ‘১০২ নটআউট’। পরিচালক উমেশ শুক্ল পিতা-পুত্রের এমন আখ্যান কতটা মায়ায় বাধলেন, সিনেমাটি না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।

সিনেমাটি মূলত ১০২ বছরের বাবা এবং তাঁর ৭৫ বছর বয়সী ছেলের গল্প। সিনেমার শুরুতে ১০২ বছরের বাবাকে (অমিতাভ বাচ্চন) জীবন নিয়ে মেতে থাকতে দেখা যায়। অথচ, ৭৫ বছরের ছেলে (ঋষি কাপূর) ঠিক তাঁর বিপরীত। তিনি চান আরও দায়িত্ববান হতে। কারণ, সত্যিই তাঁর বয়স হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এদিকে, এই বুড়োমি কিছুতে মেনে নেন না ১০২ বছরের বাবা। আরও কিছু বছর দিব্য বাঁচতে চান তিনি। বাড়িতে যৌবনের ফুরফুরে আমেজ বজায় রেখে। তাই, মতান্তর হওয়ায় ছেলেকে বৃদ্ধাশ্রমে চলে যেতে বলেন। তাতে আরও জটিলতা বাড়ে। ছেলে কিছুতে যাবেন না তাঁর বাড়ি ছেড়ে। বাধ্য হয়ে বুড়ো হয়ে যাওয়া ছেলেকে জীবনের পথে ফেরাতে উঠে-পড়ে লাগেন শরীরে ১০২, কিন্তু মনে ২৬-এর বাবা। ছেলেকে নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিয়ে যান তিনি। সিনেমার এই অংশটা ভারি মজার। কখনও প্রেমপত্র লেখা তো কখনও মুম্বাই ঘুরতে বেরনো। ক্রমশ জীবনের প্রতি টান ফিরে পান ছেলে। নিজের ছেলেবেলা মনে পড়ে। মনে পড়ে জীবনের সারল্য। বাবা হেসে ওঠেন, বলেন- যত দিন বাঁচো, একদিনও না মরে বাঁচো।

কিন্তু বিরতির পর থেকে এ সিনেমা অন্য মোড় নেয়। জানা যায়, মনমরা হয়ে থাকা ৭৫ বছরের ছেলের বিষণ্ণতার কারণ, তাঁর বিদেশবাসী পুত্র। আমেরিকায় সেই পুত্রকে সেটল করার ব্যাপারে সব উজাড় করে দিয়েছেন ঋষি কপূর। কিন্তু নিজেরটা গুছিয়ে নিয়ে বাবার আর খোঁজ রাখেনি সেই প্রবাসী। হঠাৎ সে চিঠি লিখে জানায়, বাবার কথা মনে পড়ায় সে ফিরছে। ৭৫ বছরের বাবার চোখে জল আসে এই খবরে। কিন্তু ১০২ বছরের বাবা বাধা হয়ে দাঁড়ান। বারবার মনে করিয়ে দেন, কীভাবে তাঁকে একা ফেলে চলে গিয়েছিল প্রবাসী পুত্র এবং আজ কেবল সম্পত্তির টানে কেমন ফিরে আসছে।

সিনেমার শেষে ছেলেকে বাড়ি লিখে দেবে কি না বা প্রতিবাদ জানাবেন বাবা, তা দর্শকের জন্য সাসপেন্স থাক। কতটা মায়া নিয়ে পিতা-পুত্র দৃশ্য আঁকলেন পরিচালক। আর তা সম্পাদনা করলেন বোধাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। একটুকু বাড়িয়ে বলছি না, কিছু কিছু দৃশ্যে ‘গল্প হলেও সত্যি’ পিতা-পুত্রকে মনে পড়ছিল। চারপাশে যখন পান থেকে চুন খসলে সম্পর্ক ভাঙার জন্য সভ্য-আধুনিকেরা উঠে পড়ে লাগছে, তখন এ সিনেমা আরও একবার মনে করিয়ে দেয় মানুষের মূল্যবোধের কথা। মনে করিয়ে দেয় সম্পর্কের কথা। অতীতকে নিয়েই ভবিষ্যতের দিকে চলতে হয়।

সূত্র : আনন্দবাজার

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি