৩৭০ ধারা বাতিলের পর কী বলছে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি?
প্রকাশিত : ১৩:৩২, ৬ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ১৩:৩৪, ৬ আগস্ট ২০১৯
বিষয়বস্তু হিসেবে বহুবার ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরের শরণাপন্ন হয়েছে বলিউড। ‘কাশ্মীর কী কলি’র মতো নরমসরম ছবি বাদ দিলে প্রায় সব ছবিতেই কাশ্মীরের সন্ত্রাস, সেনাবাহিনীর ভূমিকা, স্থানীয় মানুষের জীবন, ক্রাইসিস ফুটে উঠেছে। কেউ সেখানকার সন্ত্রাসকে তুলে ধরেছেন, কেউ আবার মানুষের অসহায়তাকে।
সোমবার ৩৭০ ধারা তুলে দিল ভারতের পার্লামেন্ট। ফলে বিশেষ মর্যাদা’র আওতায় আর রইল না জম্মু-কাশ্মীর। আলাদা হয়ে যাচ্ছে লাদাখও। জম্মু-কাশ্মীরও এখন এক সংবিধান, এক পতাকার আওতায়।
ভারত সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গে নানা মতামত উঠে আসতে থাকে। বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা অনুপম খের টুইট করেন, ‘কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হয়ে গেল।’ কঙ্গনা রানাউত বলছেন, ‘সন্ত্রাসবাদহীন রাষ্ট্রের সূচনা হল।’ জাইরা ওয়াসিম লিখেছেন, ‘দিস টু শ্যাল পাস!’ গওহর খান, ওনিরের মতো ব্যক্তিত্ব অবশ্য এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্ষেপ করেছেন।
বহু ছবিতেই কাশ্মীরে উগ্রপন্থীদের নাশকতার ঘটনা দেখানো হয়েছে। মণিরত্নমের ‘রোজা’য় অরবিন্দ স্বামীর চরিত্রটি উগ্রপন্থীদের হাতে বন্দি হয়। ‘মিশন কাশ্মীর’ দেখিয়েছিল কীভাবে নতুন প্রজন্মকে নিজের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদীরা।
আসলে কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদে বলিউড যতটা ফোকাস করেছে, সেখানকার মানুষের আক্ষেপ, তাদের অসহায়তা ততটা ফুটে ওঠেনি। বিশাল ভরদ্বাজের ‘হায়দর’ বা অশ্বিন কুমারের ‘নো ফাদার্স ইন কাশ্মীর’ খানিকটা হলেও তা ভরাট করেছিল। এজাজ খানের ‘হামিদ’-এ একটি ছোট্ট বাচ্চা তার বাবাকে খুঁজে বেড়ায়। তবে পরিস্থিতির বিচারে এই ধরনের ছবির সংখ্যা বড়ই কম।
‘আই অ্যাম’- এ ওনির কাশ্মীরের প্রেক্ষাপটে দুই বন্ধুর গল্প বলেছিলেন। পরিচালকের কাছে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি আনন্দ প্লাসকে বলেন, ‘কী বলব বলুন তো! আমিও এক রাষ্ট্র, এক নিয়মে বিশ্বাসী। কিন্তু যেভাবে ঘটনাটা হল, তাতে আপত্তি রয়েছে। ওখানকার মানুষ কী চান, সেটা জানতে চাওয়া হল না। কাশ্মীরের নেতাদের হাউস অ্যারেস্ট করা হল। এগুলো কী? গত কয়েক বছরে কাশ্মীরে শুধু আর্মি দেখেছি...’ ওনির কাশ্মীরকে প্রেক্ষাপট করেই তার পরবর্তী ছবির পরিকল্পনা করছিলেন। ‘এই পরিস্থিতিতে সেটা কতটা সম্ভব হবে, সন্দেহ আছে,’ পরিচালকের গলায় হতাশা।
‘উমরাও জান’-এর পরিচালক মুজফ্ফর আলি তার ছবি ‘জ়ুনি’ শেষ করতে পারেননি। কারণ ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, কাশ্মীরে মিলিটারি কার্যকলাপের কারণেই ছবিটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। কাশ্মীরি বয়নশিল্পীদের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মুজফ্ফর।
একইভাবে ওখানকার শিল্পীদের পাশে রয়েছেন রিতু কুমারের ছেলে পরিচালক অশ্বিন কুমার। তবে এ দিনের সরকারি রায় নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
৩৭০ ধারা উঠিয়ে দেওয়ার ফলে জম্মু-কাশ্মীরে কাঙ্ক্ষিত শান্তি নেমে আসবে আশা করছেন অনেকে। হয়তো আগামী দিনে কাশ্মীরের শান্তি-উন্নতির ছবি বলিউডও দেখাবে। বিশেষত, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বলিউডের ঘনিষ্ঠতা যে পর্যায়ে গিয়েছে! কিন্তু আসল পরিস্থিতির ছবি কি উঠে আসবে?
(আনন্দবাজার অবলম্বনে)