ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

লঘু পাপে গুরু দণ্ডের শিকার নদী

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ২১:০৯, ২৬ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২২:০৬, ২৬ নভেম্বর ২০১৯

ইলা জাহান নদী

ইলা জাহান নদী

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইলা জাহান নদী। সবকিছু বেশ ভালোই চলছিল। কিন্তু ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে তিন মাসের জন্য তার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টিকে কেউ কেউ বলছেন—‘লঘু পাপে গুরু দণ্ড’। নদীর দাবি, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এমনটা হয়েছে।  

ঘটনার সূত্রপাত- একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে। প্রযোজক সমিতির মিটিং চলাকালীন সময়ের একটি ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করেন নদী। যার ক্যাপশনে তিনি লেখেন- ‘অনেক প্যাঁচাল, সবাই বাচাল। তবুও আসা, ভালোবাসা!’

মূলত এই ক্যাপশনই কাল হলো প্রযোজক সমিতির এই সদস্যের জন্য। কেননা, ওই ক্যাপশনকে কেন্দ্র করেই তিন মাসের জন্য সমিতির সকল প্রকার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নোটিশ দেয়া হয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইলা জাহান নদীকে। 

এ বিষয়ে নদী জানান, ঘটনাটা খুব ছোট ছিল এবং আমি আসলেই কোনও নেগেটিভ সেন্স নিয়ে লিখি নাই। একটা পোস্টকে কেন্দ্র করে ঘটনাটা। তাও পোস্ট আমি যেদিন দিয়েছি, তারও ১০-১৫ দিনের মধ্যে আমাকে কেউ কিন্তু কিছুই বলেনি। এবং পোস্টের উপরে লেখা ছিলো- 'ফিলিং হোপফুল'- একদম শুরুতেই। 

তবে মিটিংয়ের ছবিতে এমন ক্যাপশন সমিতির সদস্যদের মানহানি করেছে এবং একইসঙ্গে সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে- উল্লেখ করে নদীকে অফিসিয়াল চিঠি পাঠানো হয়। একইসঙ্গে তাকে কারণ দর্শাতেও বলা হয়। 

যার প্রেক্ষিতে কিছুটা বিলম্বে সমিতি বরাবর কারণ দর্শীয়ে একটি চিঠি দেন নদী। কিন্তু সমিতি তার জবাবে সন্তুষ্ট না হওয়ায় গত ১০ নভেম্বর ২০১৯ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি-২০২০ -এই তিন মাসের জন্য নদীকে সমিতির সকল কার্যক্রম থেকে স্থগিত করে।

এ বিষয়ে নদী বলেন, আমি এটাকে প্রথমে ওয়ার্নিং লেটার ভেবেছিলাম। মনে করেছিলাম, সমিতি আমাকে ওয়ার্ন করেছে যে, আর এরকম করোনা। ওরা আমাকে আরেকটা নোটিশ দিয়েছে যাতে বলেছে, ওই ব্যাখ্যাতে আমরা সন্তুষ্ট না, আপনি আবার ব্যাখ্যা দেন। পরে ১৭ তারিখে আরেকটা নোটিশ আসলো, যেখানে আমাকে আগামী তিন মাস সবকিছু থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

তবে, যেহেতু ইলা জাহান নদী সমিতির নব-নির্বাচিত এই কমিটির একজন সদস্য, সে কারণে তিনি মনে করেন- সমিতির স্বার্থে এই শাস্তি মওকুফ করা উচিৎ। 

নদী বলেন, সমিতিকে আমি অবশ্যই মানি। তার থেকেও বড় কথা আমি প্রত্যেককেই আলাদা আলাদাভাবে পারসনালি মানি। সমিতি যে সিদ্ধান্ত নেবে নিশ্চিতভাবে সেটা মানাটাই তো উচিৎ। 

নদী আরও বলেন, আমি মনে করি, ২১ জনের সবাই মিলেই আসলে একটা পরিবার। তো আমার মনে হয়, এই জায়গাটাতে তারা আরেকবার বিবেচনা করবে। আমি এখনও আশা রাখি।

অন্যদিকে, সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু মনে করেন, নদী যদি তার ভুল স্বীকার করে, তবে খুব শীঘ্রই সমিতি এই আদেশ তুলে নিবে। 

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ভুল বুঝে যদি সে অনুতপ্ত হয় এবং সে যদি সবকিছু স্বীকার করে শাস্তি কমানোর আবেদন করে, তাহলে অবশ্যই সমিতি বিবেচনা করবে। খসরু আরও বলেন, আমরা তো চাই সে তার ভুলটা বুঝুক এবং রিয়েলাইজ করুক।  

এর আগে গত ২৭ জুলাই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতিতে খোরশেদ আলম খসরু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন। আর সাধারণ সম্পাদক হন শাসমুল আলম।

বিএফডিসির জহির রায়হান ভিআইপি প্রজেকশন হলে প্রথম ধাপে নির্বাচিত হন ১৯ জন প্রযোজক। এরপর তারা ভোট প্রদানের মাধ্যমে নতুন কমিটির বিভিন্ন পদের প্রার্থীদের নির্বাচন করেন।

খোরশেদ আলম খসরু ও শাসমুল আলম ছাড়াও সিনিয়র সহসভাপতি পদে কামাল মো. কিবরিয়া লিপু, সহ-সভাপতি পদে মো. শহীদুল আলম (সাচ্চু), সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদে মো. ইকবাল ও মো. আলিমুল্লাহ খোকন, কোষাধ্যক্ষ পদে মেহেদী হাসান সিদ্দিকী মনির, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক পদে মোর্শেদ খান হিমেল এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ইলা জাহান নদী জয়ী হয়েছিলেন। নতুন কমিটি আগামী ২০১৯-২১ সাল পর্যন্ত সমিতির নেতৃত্ব দেবে।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনকৃত এফবিসিসিআইর অঙ্গসংগঠন। মামলা ও নানা জটিলতার কারণে সাত বছর ধরে বন্ধ ছিল এই সমিতির নির্বাচন।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি