আবারো রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে কমলিকা চক্রবর্তী
প্রকাশিত : ২০:০০, ৯ আগস্ট ২০২০
পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে সংগীতচর্চা করে সুনাম কুড়িয়েছেন কমলিকা চক্রবর্তী। এরই মধ্যে দর্শক ও শ্রোতাদের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় সংগীত উপহার দিয়েছেন এ শিল্পী। রোববার তার গাওয়া রবীন্দ্র সংগীত ‘জীবন আমার চলছে যেমন’ প্রকাশ করেছে একুশে টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল ‘ইটিভি মিউজিক’।
এছাড়াও করোনা মহামারীতে তিনি নিজেকে নিয়ে বসে না থেকে কলকাতা ও বাংলাদেশের শিল্পীদের মেলবন্ধনে কাজ করে চলছেন। একুশে টেলিভিশনে সঙ্গে আলাপে এ কথা জানান তিনি।
কমলিকা জানান, একুশে টেলিভিশনে ‘জীবন আমার চলছে যেমন’ বাদে রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে তার আরও দুইটি অ্যালবাম রয়েছে। ‘রবি কথা’ ও ‘পথ চাওয়াতে আনন্দ’র মধ্যে ‘রবি কথা’ অ্যালবামটিতে রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে আধুনিক বাংলা কবিতার মিশেল রয়েছে।
বাংলাদেশে করোনার প্রাদূর্ভাব শুরু হওয়ার পর গেল মে মাসের শেষ থেকে কমলিকা চক্রবর্তী একুশে টেলিভিশনের ফেইসবুক পাতায় দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে লাইফ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে আসছেন। অবরুদ্ধ সময়ে (লকডাউন) এ অনুষ্ঠান দুই বাংলা শিল্পীদের মেলবন্ধনের কাজ করছে বলে জানান কমলিকা।
তিনি বলেন, ‘এ সময়টা বেশ কঠিন। আমরা কঠিন সময় পার করছি। সকলের মতো শিল্পীরাও ঘরবন্দি রয়েছেন। আমরা মানুষকে এ সময়ে ভালো গান উপহার দিতে চেয়েছি। আমরা চাই এই সময়ে কেউ যেন ভেঙ্গে না পড়েন।’
করোনার কারণে স্থগিত আছে একুশে টেলিভিশনে প্রতিদিন সকালের বিশেষ অনুষ্ঠান (গানের অনুষ্ঠান) ‘চায়ের সকাল’। এ অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করতেন জনপ্রিয় এ শিল্পী।
অনুষ্ঠান সম্পর্কে কমলিকা বলেন, ‘এ অনুষ্ঠানটা আমার বেশ ভালোবাসার একটি অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানে প্রতিদিন নতুন নতুন শিল্পী অতিথি হিসেবে আসতেন। আমার মনে হয় এ অনুষ্ঠানের জন্যই দর্শক শ্রোতারা ভালোভাবে দিন শুরু করতে পারতেন।’ কোনো টেলিভিশনে গানের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ‘চায়ের সকাল’ তার প্রথম বলে জানান কমলিকা।
অবরুদ্ধ এ সময়ে গান চর্চায় সময় ব্যয় করছেন এ গুণী শিল্পী। কমলিকা বলেন, ‘এখন তো মঞ্চ নেই। অনেকার্থে শ্যুটিংও নেই। বাড়িতেই আছি। রেওয়াজ করছি। গানকে আরও সময় দিচ্ছি। ভালো গান উপহার দেওয়ার জন্য কাজ করছি। আরও ভালো গান উপহার দিতে চাই।’
মহামারীর এ সময় অনেক শিল্পী সংকটে আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন আর আগের মতো অনেক কিছুই হয় না। অনুষ্ঠান নেই, মঞ্চ নেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফেইসবুক লাইফ অনুষ্ঠান হয়। এক্ষেত্রে এসব অনুষ্ঠানে যদি বড় বড় প্রতিষ্ঠান স্পন্সর (পৃষ্ঠপোষক) হত তাহলে ভালো হতো।’ এ সংকটে সকলকে এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন এ শিল্পী।
উল্লেখ্য, কলকাতাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন চ্যানেলে নিয়মিত গান করেন কমলিকা চক্রবর্তী। ছোটবেলা থেকেই বাংলাদেশে এসে এই দেশের মানুষকে গান শোনানোর ইচ্ছা ছিল তার। ঢাকায় তার প্রথম আগমন ঘটে ২০১৭ সালে। বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকার শাহবাগ, টিএসসিসহ ঘুরেছেন বিভিন্ন জায়গায়। বাংলাদেশ ও ভারতে স্টেজ শো করে দর্শকদের মাঝে আলাদা পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
সংগীতে হাতেখড়ি তার মায়ের কাছে। পরবর্তীতে তালিম নিয়েছেন পণ্ডিত দিননাথ মিশ্র, হৈমন্তী শুকলা, পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী, কল্যাণ সেন বরাদ প্রমুখ প্রখ্যাত সংগীতশিল্পীদের কাছে। নজরুল ক্ল্যাসিকাল সংগীতের ওপর ৬ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেছেন চন্ডীগড় কলাকেন্দ্র থেকে। তিনি রবীন্দ্র সংগীত ছাড়াও নজরুল, আধুনিক ও লোক সংগীত পরিবেশনে পারদর্শী।
এমএস/