এবার নুসরাতের পাশে তসলিমা নাসরিন
প্রকাশিত : ১০:৩৮, ১৫ জুন ২০২১
বেশ কিছু দিন ধরেই নুসরাত কাণ্ডে উত্তপ্ত টালিউড। যে উত্তাপে পুড়ছে সেখানকার শোবিজ অঙ্গন। নিজের ভালোবাসার মানুষ, যার সঙ্গে রাজকীয় বিয়ে সেরে সংসার পেতে ছিলেন অভিনেত্রী, সেই প্রাণের স্বামীকে রেখে অন্যের সঙ্গে মেলামেশা এবং হঠাৎ করেই সন্তানের মা হওয়ার খবর শোবিজ অঙ্গনকে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। এ নিয়ে নুসরাত ভক্তরাও বিরক্ত। অভিনেত্রীর এমন কাণ্ড মেনেনিতে পারছেন না কেউই। বেশিভাগ মানুষই অভিযোগের তীর তুলেছেন নুসরাতের দিকে। তবে এবার তার পাশে দাঁড়ালেন দুই বাংলার বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
বহুগামিতার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষকে সমাজ আলাদা দৃষ্টিতে দেখে বলে মনে করেন তসলিমা। এ নিয়ে শুধু নারীকে কাঠগড়ায় কেন তোলা হচ্ছে? পুরুষকে কেন প্রশ্রয় দিচ্ছে সমাজ? এমন সব প্রশ্ন তুলে- উত্তম কুমার, সমরেশ বসু ও রবিশঙ্করের কথা সামনে আনলেন লেখিকা।
ফেসবুকে এ নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘কোনও পুরুষ বহুগামী, এমন খবর শুনলে ছিঃ ছিঃ রব শোনা যায় না তো!’
তিনি লিখেছেন, ‘শিল্প সাহিত্য নাটক সিনেমার জগতে যে পুরুষ বহুগামী নয়, এমন কয়েকজনের নাম বলো। অথবা যে কজন বহুগামী, তাদেরই নাম বলো। কী বলতে চাইছো? বলতে চাইছি, যে পুরুষেরা বহুগামী, তাদের বিরুদ্ধে তুমি কি সরব? নিশ্চয়ই। তুমি তো উত্তম কুমার বলতে অজ্ঞান। উনি তো গৌরী দেবী এবং সুপ্রিয়া দেবী - দুজনের সঙ্গে থাকতেন। একসময় গৌরী দেবীকে ছেড়ে সুপ্রিয়া দেবীকে বিয়ে না করেই স্বামী স্ত্রীর মতোই থাকা শুরু করলেন। তুমি তো উত্তম কুমারকে গালি দাও না। তুমি তো সমরেশ বসুরও নিন্দে করো না, উনি তো দু’বোনকে বিয়ে করেছিলেন। প্রখ্যাত বহুগামী রবিশংকরকে নিয়েও তো কিছু বলো না! একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে নিয়ে থেকেছেন, একে তো বহুগামিতা বলে না। তাহলে যে মেয়েটির নিন্দে করছো, সেও তো একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে নিয়ে থেকেছে। যা করেছে প্রকাশ্যে, লুকিয়ে নয়, কাউকে ঠকিয়ে নয়। তাহলে তার নিন্দে করছো কেন।’
শুধু মেয়েদের বেলায় কেন নৈতিকতা দেখা হয়? সেই প্রশ্ন তুলে তসলিমা লিখেছেন, ‘সমরেশ বসু বা উত্তর কুমার বা রবিশংকর অনেক বড়, এত বড়’র সঙ্গে কোথাকার কে, তার তুলনা চলে না। বড় হলে বুঝি অনৈতিক কাজ করা যায়? আর কোথাকার কে’দের জন্যই নীতি? নাকি শুধু মেয়েদের বেলায় নীতির প্রশ্ন ওঠে? বাজে কথা হচ্ছে। আমি নারী -পুরুষকে আলাদা করে দেখি না। তাহলে শুধু মেয়েদের পতিতালয় কেন, পুরুষদের পতিতলয় কেন নেই- এই প্রশ্ন কোনওদিন করেছো? বাই দ্যা ওয়ে, পতিতালয়কে যে আইনত বৈধ করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে কিছু বলো না কেন?’
নারীর ইচ্ছা থাকলেও বহুগামী হওয়া যাবে না। কেন? তসলিমার কথায়, ‘নারীর হরমোন যতই টগবগ করুক, তাদের একগামী হতেই হবে। বেচারা পুরুষ! পুরুষের বহুগামিতাকে জাস্টিফাই করার জন্য ধর্ম থেকে শুরু করে হরমোনের আশ্রয় পর্যন্ত নিতে হচ্ছে!’
এসএ/