এবার অশ্লীলতায় অভিযুক্ত পরীমনি! আইনি নোটিস
প্রকাশিত : ১৯:২৬, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
পরীমনি
বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছেনা কিছুতেই। মাদককাণ্ডে জেল খাটার পর বের হয়েও জন্ম দেন নানা বিতর্কের। এবার অশ্লীলতার অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন পরীমনি। তার জেরেই সোমবার ফের আইনি নোটিস পেলেন বিতর্কিত এই নায়িকা।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ফেসবুকে তাঁর পোস্ট করা একাধিক ছবি ও ভিডিওকে অশ্লীল আখ্যা দিয়ে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে নায়িকাকে। নোটিসটি পাঠিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার এবং ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী ইসমাতুল্লাহ লাকী তালুকদার। যাতে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ফেসবুক থেকে ওই ধরনের ছবি ও ভিডিও সরাতে পরীমনিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কিন্তু অভিনেত্রীর কোন ছবি বা ভিডিও ‘অশ্লীলতা’র তকমা পেল? গত ১ সেপ্টেম্বর মাদক মামলায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান পরীমনি। সেই সময়ে তাঁর হাতের তালুতে মেহেন্দির রঙে লেখা ছিল ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফের তিনি মামলার শুনানির জন্য আদালতে উপস্থিত হন। সে দিনও তাঁর হাতের তালুতে লেখা ছিল অশ্লীল বার্তা। পরীমনিকে পাঠানো নোটিস অনুযায়ী, এ সবই কুরুচিকর।
ছাড় পায়নি নায়িকার জন্মদিনের উদযাপনও। গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার পাঁচতারা হোটেলে ৩০তম জন্মদিনের আয়োজন করেছিলেন পরীমনি। সেখানে তাঁর পোশাক, নাচ, অঙ্গভঙ্গি নিয়েও উঠেছে অশ্লীলতার প্রশ্ন। নোটিসে এই ধরনের নির্দেশ পাঠানোর কারণও সবিস্তারে ব্যখ্যা করা হয়েছে।
আইনজীবীদ্বয়ের দাবি, পরীমনি একজন তারকা। বহু মানুষের অনুসরণযোগ্য। বিশেষত, শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা অনেক সময় না বুঝেই তাঁকে অনুকরণ বা অনুসরণ করেন। অপরিণতমনস্কতার কারণে ভাল-মন্দ বিচার না করেই যা দেখে, তাতেই প্রভাবিত হয় কমবয়সিরা। ফলে, আগামী দিনে ফেসবুকে কোনও কিছু পোস্ট করার আগে পরীমনিকে দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে- বলেই জানান হয়েছে নোটিসে।
তিনি এত দিন যা যা পোস্ট করেছেন, তার একটিও শিক্ষামূলক বা রুচিসম্মত নয়- এ বিষয়টিও আগামী দিনে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে নায়িকাকে।
নোটিসে আরও বলা হয়েছে, ২০১২ সালের পর্নগ্রাফি আইনের ২নং ধারার ‘গ’ উপধারা অনুযায়ী- যৌন উত্তেজক কোনও অশ্লীল সংলাপ, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নাচ বা সিনেমা, ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজ্যুয়াল চিত্র, স্থিরচিত্র, গ্রাফিক্স পর্নগ্রাফির নামান্তর। কারণ, এতে যৌন উত্তেজনার রসদ থাকে। শিক্ষা বা শিল্প থাকে না।
এই অপরাধের শাস্তি কী?
একই আইনের ৮নং ধারার ৪ উপধারা অনুযায়ী, অভিযুক্ত অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন। আদালতে তাঁর শাস্তি সর্বোচ্চ দু’বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা। একইসঙ্গে পর্নগ্রাফি সংশ্লিষ্ট অপরাধ জামিনযোগ্য নয়।
এই দুই আইনজীবীর দাবি, পরীমনি পর্নগ্রাফি আইনে গ্রাফিক্স এবং অন্য উপায়ে ফেসবুকের মাধ্যমে সমাজে এই ধরনের অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিয়েছেন। যার কোনও শিল্পগত বা শিক্ষাগত মূল্য নেই।
আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার ও ইসমাতুল্লাহ লাকীর যুক্তি, বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি অত্যন্ত রুচিশীল, সুন্দর এবং ঐতিহ্যপূর্ণ। অভিনেত্রীর কাছ থেকে তাঁর দেশ সে রকম সংস্কৃতিই আশা করে।
নোটিসে তাঁদের সাবধানবাণী, আগামী এক মাসের মধ্যে পরীমনিকে উল্লেখিত নির্দিষ্ট ছবি ও ভিডিও ফেসবুক থেকে সরিয়ে নিতে হবে। সেইসঙ্গে আজীবন দূরে থাকতে হবে যাবতীয় অশ্লীলতা থেকে। নইলে আইনি পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবেন তাঁরা।
এনএস//