ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সুরসম্রাজ্ঞী লতার ৯২ বছরের পথচলা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৮:৩৪, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

 

এক জীবনে অসংখ্য জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়ে সুরসম্রাজ্ঞীর আসনে যার স্থান, তিনিই লতা মঙ্গেশকর। ভারতবর্ষ পেরিয়ে যার কণ্ঠের দ্যুতি ছড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী। কেমন ছিল, গানের জগতের উজ্জল এই নক্ষত্রের ৯২ বছরের পথচলা? 

১৯২৯ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর ভারতের ইন্দোরে এক সঙ্গীত পরিবারে জন্ম লতার। বাবা পণ্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকর একজন মারাঠি ও কোঙ্কিণী সঙ্গীতজ্ঞ এবং মঞ্চ অভিনেতা ছিলেন। আর মা শেবন্তী ছিলেন গুজরাতি। যিনি পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে সুধামতি নামেই পরিচিত ছিলেন।

পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে লতা ছিলেন সর্বজ্যেষ্ঠ। তার বাকি ভাইবোনেরা হলেন - আশা ভোঁসলে, ঊষা মঙ্গেশকর, মীনা মঙ্গেশকর ও হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর। প্রত্যেকেই ছিলেন সঙ্গীত জগতের বাসিন্দা। 
মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারান। তার আগে অবশ্য বাবার হাত ধরেই অভিনয় এবং গান শিখতে শুরু করেছিলেন।

শৈশবে কে এল সায়গল ছাড়া আর কিছু গাইবার অনুমতি ছিল না লতার। কারণ বাবা চাইতেন লতা শুধু ধ্রপদী গান নিয়েই থাকুক। 

জীবনে প্রথম রেডিও কেনার সামর্থ্য যখন হলো, তখন লতার বয়স আঠারো। কিন্তু রেডিওটা কেনার পর নব ঘুরাতেই প্রথম যে খবরটি তাকে শুনতে হয় তা হচ্ছে, কে. এল. সায়গল আর বেঁচে নেই। সঙ্গে সঙ্গেই রেডিওটা ফেরত দিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তবে গানের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়নি, বরং আরও আঁকড়ে ধরেছিলেন গানকেই।  

যদিও সঙ্গীত জগতের অবিসংবাদী সম্রাজ্ঞী হওয়ার আগে শিশু অভিনেতা হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। 

পরে ১৯৪২ সালে একটি মারাঠি ছবির সৌজন্যে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। এরপর মুম্বাই যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে প্রথম গান গেয়েছিলেন হিন্দি সিনেমাতে। ‘মজবুর’ সিনেমাতে। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। লতার সুরেলা কন্ঠের জাদুতে মাতোয়ারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম।

সাত দশকের দীর্ঘ কেরিয়ারে ত্রিশ হাজারের বেশি গান রেকর্ড করেছেন এই কোকিলকণ্ঠী। 

এছাড়া ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষাতে ও বিদেশি ভাষায় গান গাওয়ার একমাত্র রেকর্ডটিও তারই। 
১৯৭৪ সালে তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
১৯৮৯ সালে ভারত সরকার তাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করে। তার অবদানের জন্য ২০০১ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ভারতরত্নে ভূষিত করা হয়।  এম. এস. সুব্বুলক্ষ্মীর পর এই পদক পাওয়া তিনিই দ্বিতীয় সঙ্গীতশিল্পী।

এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা পদ্মবিভূষণ পেয়েছেন ১৯৯৯ সালে, তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণে  ভূষিত হয়েছেন ১৯৬৯ সালে। 

২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের অফিসার খেতাবে ভূষিত করে।
তিনি ৩টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৫টি বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, ৪টি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ২টি বিশেষ ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। 

এ ছাড়াও এনটিআর জাতীয় পুরস্কার, জি সিনে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার , এএনআর জাতীয় পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ৩টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ১৫টি বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার পেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। 

১৯৯৩ সালে ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার এবং ১৯৯৪ ও ২০০৪ সালে দুইবার ফিল্মফেয়ার বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। 

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি